পর্নোগ্রাফিতে আসক্তি থেকেই ১২ কোমলমতি ছাত্রীকে ধর্ষণ করেছে বলে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে নারায়ণগঞ্জের সেই মাদ্রাসা শিক্ষক।
বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) বিকেলে নারায়ণগঞ্জের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তার জবানবন্দি গ্রহণ করা হয়। পাঁচ দিনের রিমান্ড শেষে বৃহস্পতিবার তাকে আদালতে হাজির করা হয়।
এর আগে গত ৪ জুলাই ফতুল্লার মাহমুদনগর এলাকার বাইতুল হুদা ক্যাডেট মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা ও অধ্যক্ষ আল আমিনকে এক শিক্ষার্থীর মায়ের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গ্রেফতার করে র্যাব। তাকে গ্রেফতারের পর বেরিয়ে আসে ধর্ষণের ভয়ঙ্কর তথ্য।
আল আমিনকে গ্রেফতারের পর র্যাবের পক্ষ থেকে ফতুল্লা মডেল থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি এবং ঘটনার শিকার শিশুদের পরিবারের পক্ষ থেকে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে আরেকটি মামলা দায়ের করা হয়।
র্যাবের মামলায় তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৫ দিনের রিমান্ডে নিয়েছিল পুলিশ। রিমান্ডের শেষ দিনে মোহাম্মদ কাউসার আলমের আদালতে সে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয় বলে জানান ফতুল্লা মডেল থানার ওসি আসলাম হোসেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, আল আমিন জবানবন্দিতে বলেছে, গত এক বছর যাবত সে মোবাইল ফোনে পর্নো ভিডিও দেখা শুরু করে। এরপর থেকেই তার মনে কুচিন্তার উদ্রেক হয়। পরে সে তার কক্ষে পছন্দের ছাত্রীদের বিভিন্ন অজুহাতে ডেকে নিত। এরপর রুমে নিয়ে তাদের কাউকে ধর্ষণ করত, আবার কারও স্পর্শকাতর স্থানে হাত দিত। এ
ভাবে সে মাদ্রাসার দ্বিতীয় থেকে পঞ্চম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত এসব ছাত্রীকে ধর্ষণ করে। এ ছাড়া মাদ্রাসার অনেক ছাত্রীর ছবির সঙ্গে পর্নো ভিডিও জুড়ে দিয়ে তা প্রকাশের ভয় দেখিয়ে তার সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনে বাধ্য করত।
গত ২৭ জুন সিদ্ধিরগঞ্জে অক্সফোর্ড হাই স্কুলের শিক্ষক আরিফুল ইসলামকে ওই স্কুলের ২০ ছাত্রীর সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের অভিযোগে গ্রেফতার করে র্যাব। বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচারিত ও প্রকাশিত সেই সংবাদ র্যাব-১১ এর এক কর্মকর্তা তার নিজের ফেসবুক আইডিতে আপলোড করেন।
সেই ভিডিও নিজের মোবাইল ফোনে দেখছিলেন আল আমিনের মাদ্রাসার তৃতীয় শ্রেণির এক ছাত্রীর মা। ওই সময় পাশে থাকা ছাত্রী তার মাকে উদ্দেশ করে বলে, স্কুলের ওই স্যারকে র্যাব ধরলে আমাদের হুজুরকে কেন ধরে না? এরপর ওই ছাত্রীর মা ঘটনার বিশদ জেনে তা র্যাব-১১-কে অবহিত করেন। র্যাব তদন্ত শেষে গত ৪ জুলাই সকালে মাদ্রাসা থেকে আল আমিনকে আটক করে।