কলাপাড়ার নির্মানাধীন পায়রা ১৩২০ মেগাওয়াট তাপ বিদ্যুত কেন্দ্রের অভ্যন্তরে বয়লার থেকে পড়ে এক বাঙালী শ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনায় বাঙালী শ্রমিক ও চায়নিজ শ্রমিকদের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার দুপুরে বাঙালী শ্রমিক সাবিন্দ্র দাসের (৩২) মৃত্যুকে কেন্দ্র করে লাশ গুমের চেষ্টার গুজবের খবর ছড়িয়ে পড়লে ক্ষুব্ধ শ্রমিকরা হামলার ঘটনা ঘটায়। বিকেল তিনটা থেকে অন্তত ছয় হাজার বাঙালী শ্রমিক ও তিন শতাধিক চায়নিজ শ্রমিকরা দফায় দফায় সংঘর্ষে জড়িয়ে পরে।

এঘটনায় ২ চায়না শ্রমিক চাংচংটিং(২৩) ও লিংসুয়ে(৫০) এবং ২ বাঙালী শ্রমিক আলকাছ(৪৪) ও মোস্তাফিজুর রহমান(৪৮) আহত হয়েছে বলে বিসিপিসিএল কর্মকর্তারা জানালেও আহতের সংখ্যা অর্ধশতাধিক বলে জানিয়েছে শ্রমিক ও প্রত্যক্ষদর্শীরা। এঘটনায় বিসিপিসিএলএর দুই কর্মকর্তা জার্জিস তালুকদার ও শাহমিন জিকো জড়িত থাকার অভিযোগ করেছেন বাঙালী শ্রমিকরা। তাপ বিদ্যুত কেন্দ্রের নিয়োজিত পুলিশ, কলাপাড়া থানার পুলিশসহ অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। এ সংঘর্ষের ছবি তুলতে গিয়ে প্রতিদিনের সংবাদ, দৈনিক বরিশাল সময়ের কলাপাড়া প্রতিনিধি ফরাজী মো. ইমরানের মটোরসাইকেল ও মাইটিভির কলাপাড়া-কুয়াকাটা প্রতিনিধি সাইফুল ইসলাম রয়েলের ক্যামেরা ভাংচুর চালায় চায়না শ্রমিকরা। এসময় চায়না শ্রমিকের ধাওয়া খেয়ে আরও দুই সাংবাদিক মিজানুর রহমান বুলেট ও মিলন সরকার ঘনটাস্থল ত্যাগ করে পুলিশের আশ্রয় নেন।

সাংবাদিক মিজানুর রহমান বুলেট জানান, কোন কিছু বুঝে ওঠার আগেই চায়না শ্রমিকরা উত্তেজিত হয়ে আমাদের উপর ধাওয়া করে। জীবন বাচনোর তাদিগে দৌড়ে পুলিশের আশ্রয় নেই। এসময় চায়না শ্রমিকরা সাংবাদিক ইমরানের মোটরসাইকেল ভাংচুর ও রয়েলের ক্যামেরা ভাংচুর করে। চায়নারা না বোঝে ভাষা না বোঝে কথা।
মঙ্গলবার দিনব্যাপী বাঙালী শ্রমিক ও চায়না শ্রমিকরা দফায় দয়ায় মুখোমুখি সংঘর্ষ হলে রাত ১১টার দিকে পটুয়াখালী থেকে অতিরিক্ত পুলিশ, বিজিবি ও র‌্যাব সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। এঘটনায় বুধবার সকাল থেকে নির্মানাধীন বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সব ধরনের কাজ বন্ধ রয়েছে। ঘটনার রাতেই অনেক বাঙালী শ্রমিক হামলার আশংকায় কর্মস্থল ছেড়ে পালিয়েছে বলে বিভিন্ন ম্যানপাওয়ারের প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন।

বিসিপিসিএল এর প্রশাসনিক কর্মকর্তা শাহমনি জিকো জানান, ক্ষুব্ধ শ্রমিকরা গুজবের কারণে উত্তেজিত হয়ে ক্যান্টিনে, অফিসে, প্রশিক্ষন কেন্দ্রে ও ওয়েল্ডারে হামলা-ভাংচুর চালায়। বর্তমানে বিজিবি, পুলিশ ও র‌্যাব মোতায়েন করা হয়েছে। এখনও হামলার শঙ্কায় রয়েছেন এ কর্মকর্তা।

কলাপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম জানান, বর্তমানে পরিস্থিতি তাদের নিয়ন্ত্রনে রয়েছে।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।