নিজস্ব সংবাদদাতা, ঢাকা;  ধনী তোষণের নীতিতে প্রনীত প্রস্তাবিত বাজেট প্রত্যাখান করে, সংসদে পাশের পূর্বে, করোনা দূর্যোগ থেকে দেশের  অর্থনীতির চালিকা শক্তি শ্রমজীবী মানুষদের রক্ষায়, তাদের খাদ্য, আবাসন, চিকিৎসা, কর্মসংস্থান ও শ্রমজীবী বীমা নিশ্চিত করতে বাজেটে বিশেষ বরাদ্দ রাখার দাবিতে বগুড়ায় মানববন্ধন করেছে  সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট

আজ সোমবার (১৫ জুন ২০২০)  দুপুরে শহরেরসাতমাথায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে শারীরীক দুরত্ব বজায় রেখে প্রতিকী অবস্থান ও মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।

কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট বগুড়া জেলা সভাপতি শ্রমিক নেতা কমরেড সাইফুজ্জামান টুটুল, মানববন্ধন চলাকালে  সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাসদ বগুড়া জেলা আহ্বায়ক এ্যাড. সাইফুল ইসলাম পল্টু, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট বগুড়া জেলা সহ-সভাপতি শ্রমিক নেতা শিব সংকর শিবু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সুরেশ চন্দ্র দাস মনো, সাংগঠনিক সম্পাদক  আবু রায়হান, প্রচার সম্পাদক সানোয়ার বাবু প্রমূখ নেতৃবৃন্দ।

সমাবেশে এ্যাড. সাইফুল ইসলাম পল্টু বলেন, করোনা ভাইরাস কভিড ১৯ এর সংক্রমণ এবং মৃত্যু সারা বিশ্বকে আতংকিত করে তুলেছে। করোনা সংক্রমণ গোটা বিশ্বের অর্থনীতিকেই বিপর্যস্ত করে ফেলেছে। বাংলাদেশ এর বাইরে নয়। করোনা সংক্রমণ অর্থনীতি ও সমাজের সকল ক্ষেত্রকে আক্রান্ত করলেও শ্রমজীবী মানুষের উপর এর প্রভাব সবচেয়ে বেশি। শ্রমিকরা কাজ না করলে উৎপাদন হবে না আবার উৎপাদন অব্যাহত রাখতে গেলে সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে যা গোটা সমাজকেই বিপদাপন্ন করে তুলতে পারে। সেই বিবেচনায় একান্ত জরুরী বিষয় ছাড়া উৎপাদন এবং বিপণন এর বিভিন্ন খাতগুলো বন্ধ রাখা প্রয়োজন।  আবার এই বন্ধ রাখার ফলে সবচেয়ে বিপদে পড়েছে রিকশা-ভ্যান-ঠেলাগাড়ি চালক, নির্মাণ, পরিবহন শ্রমিক, দোকান-কর্মচারী, তাঁত, চাতাল, বিড়ি, জরি, পাদুকা শ্রমিক, কুলি, দিনমজুর, ঠিকা শ্রমিক  প্রভৃতি অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিকেরা। একদিকে জীবিকার প্রয়োজন, অন্যদিকে করোনা সংক্রমনে আক্রান্ত হলে চিকিৎসার বিপুল খরচ এই দুই সংকটে শ্রমিকরা দিশেহারা। ফলে জীবিকার প্রয়োজনে স্বাস্থ্য ঝুঁকি উপেক্ষা করেও তাঁরা কাজ করতে বাধ্য হচ্ছে। তাই চলতি অর্থবছরের বাজেটে এই শ্রমজীবীদের জন্য বিশেষ বরাদ্দ রাখার আহ্বান  জানান।

সমাপনী বক্তব্যে সাইফুজ্জামান টুটুল বলেন, করোনা পরিস্থিতি বাংলাদেশের ৬ কোটি ৩৫ লাখ শ্রমিকের জীবনের সমস্যাগুলোকে প্রকট করে তুলেছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য বিশেষ করে খাদ্য, ওষুধ এর মূল্যবৃদ্ধি, বাসা ভাড়া, গাড়ি ভাড়া, সন্তানের শিক্ষার খরচ বৃদ্ধি, শ্রমজীবীদের জীবনে বাড়তি বোঝা বয়ে এনেছে। শ্রমজীবী মানুষের ক্রয় ক্ষমতা কমে গেলে তা অর্থনীতিতেও বিরুপ প্রভাব সৃষ্টি করবে। তাই শ্রমজীবী মানুষ এবং বাংলাদেশের অর্থনৈতিক বিকাশের স্বার্থে আমরা মনে করি শ্রমজীবী মানুষের খাদ্য নিরাপত্তার জন্য ন্যায্য মুল্যের খাদ্য কার্ড এবং রেশন ব্যবস্থা চালু, করোনা সংক্রমণের প্রেক্ষিতে কর্মহীন হয়ে বিপর্যস্থ শ্রমিক পরিবার প্রতি মাসে কমপক্ষে ৮ হাজার টাকা হারে নগদ সহায়তা প্রদান, হেলথ কার্ড ও বীমা চালু করে শ্রমজীবীদের বিনামূল্যে চিকিৎসা ও স্বাস্থ্য বীমার ব্যবস্থা, প্রবাস ফেরত শ্রমিকদের পুনর্বাসনের জন্য বাজেটে বিশেষ বরাদ্দ করা প্রয়োজন, যা দেশের অর্থনীতিকেই গতিশীল রাখবে। তাই প্রস্তাবিত বাজেট প্রত্যাখান করে অর্থনীতির চালিকা শক্তি শ্রমজীবী মানুষের জন্য ২০২০- ২১ অর্থবছরের বাজেটে বিশেষ বরাদ্দ করার আহ্বান  জানান।

সমাবেশে অন্যন্য নেতৃবৃন্দ বলেন, বাংলাদেশের শ্রমজীবী মানুষের সমস্যাগুলোকে  গুরুত্ব দিয়ে ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রস্তাবিত ধনী তোষণের নীতিতে প্রনীত বাজেট প্রত্যখান করে, সংসদে পাশের পূর্বে করোনা দূর্যোগ থেকে দেশের  অর্থনীতি, কৃষি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা রক্ষায়, অপচয়, দূর্নীতি বন্ধ করে শ্রমজীবীদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা ও শ্রমিক ছাঁটাই, লে-অফ বন্ধ করতে শ্রমজীবী মানুষদের জন্য বাজেটে বিশেষ বরাদ্দ করার আহ্বান   জানান।

আমাদের বাণী ডট কম/১৫ জুন ২০২০/পিপিএম 

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।