সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা দীর্ঘদিন ধরেই বিদ্যমান গ্রেড পরিবর্তনের দাবি নিয়ে আন্দোলন করছেন। প্রধানশিক্ষকরা দশম গ্রেড এবং সহকারী শিক্ষকরা ১১তম গ্রেডে বেতন দাবি করছেন। কিন্তু সরকার বিভিন্ন সময় শুধু আশ্বাসই দিয়েছেন। শেষ পর্যন্ত দাবি আর আদায় হয়নি।

সর্বশেষ গত বুধবার শিক্ষকরা কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে সমাবেশ করতে চাইলে পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এ সময় পুলিশের লাঠিচার্জে প্রায় ৩০ জন শিক্ষক আহত হয়েছেন বলে দাবি করেন শিক্ষক নেতারা। এ অবস্থায় আগামী ১৭ নভেম্বর অনুষ্ঠিত সমাপনী পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন তারা। তাই শিক্ষকরা এ পরীক্ষা নেবেন কিনা তা নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছেন শিক্ষা সংশ্লিষ্টরা।

প্রধান শিক্ষকদের ১০তম ও সহকারী শিক্ষকদের ১১তম গ্রেড বাস্তবায়ন না করা হলে তারা এ পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন। শুধু তাই নয়, সমাপনী পরীক্ষার পর ক্লাস বর্জন করে ক্লাসরুমে তালা লাগিয়ে লাগাতার আন্দোলনে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আন্দোলনকারী শিক্ষকরা। তাদের এমন অবস্থানে অনিশ্চিত যথাসময়ে সমাপনী পরীক্ষা আয়োজন।

আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়া সংগঠন বাংলাদেশ প্রাথমিক বিদ্যালয় ঐক্য পরিষদের সদস্যসচিব মোহাম্মদ শামছুদ্দীন মাসুদ গণমাধ্যমে বলেন, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্যে বৈষম্য দূরীকরণে সরকারের পক্ষ থেকে বারবার আশ্বাস দেয়া হলেও তা আজও বাস্তবায়ন না হওয়ায় তারা বাধ্য হয়ে আন্দোলনে মেনেছেন। কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও ডিএমপিতে লিখিতভাবে অনুমোদন চাওয়া হলেও পুলিশ তাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে বাধা দেয়।

তিনি বলেন, প্রধান শিক্ষকদের ১০তম গ্রেড ও সহকারী শিক্ষকদের ১১তম গ্রেড দিতে আমরা দীর্ঘদিন থেকে দাবি করে আসছি। এ দাবিতে আমরা আসন্ন সমাপনী পরীক্ষা বর্জন করার ঘোষণা দিয়েছি। এ পরীক্ষা বর্জন করে আমরা শিক্ষার্থীদের ক্লাস করাবো না।

এদিকে যেকোনো মূল্যে নির্ধারিত সময়ে সমাপনী পরীক্ষা আয়োজনের সকল চেষ্টা করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব বদরুল হাসান বাদল। তিনি গণমাধ্যমে বলেন, শিক্ষকদের আন্দোলন নিয়ে নতুন একটি সংকট তৈরি হয়েছে। সামনে সমাপনী পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে এ আন্দোলন গড়ে উঠেছে। এতে করে নির্ধারিত সময়ে পরীক্ষা আয়োজন করাটা অনিশ্চয়তার দিকে যাবে। তাদের গ্রেড পরিবর্তন ও বেতন বৃদ্ধির বিষয়টি নিয়ে আমরা কাজ করছি। এটি শিক্ষকদের বুঝতে হবে।

তিনি বলেন, শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনা করে তাদের আন্দোলন থেকে ফিরিয়ে আনা হবে। তাদের সঙ্গে বৈঠক করতে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সম্মতি জানিয়েছেন। আগামী দু-তিন দিনের মধ্যে আন্দোলনকারী শিক্ষক প্রতিনিধিদের সঙ্গে সভা হতে পারে। প্রয়োজন হলে বিষয়টি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করে এ বিষয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। তবে তার আগে শিক্ষকদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনায় বসাটা জরুরি বলে তিনি মনে করেন।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।