আন্দোলনরত প্রাথমিক শিক্ষকরা পরীক্ষা বর্জন করলে বিকল্প হিসেবে হাইস্কুল ও মাদরাসা শিক্ষকদের দ্বারা পরীক্ষা পরিচালনা করা হবে। প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা গ্রহণে এমনই বিকল্প প্রস্তুতি নিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।

মঙ্গলবার বিষয়টি জানিয়ে অধিদপ্তর থেকে সব জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে চিঠি পাঠানো হয়েছে।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর সূত্র জানায়, শিক্ষকদের সমাপনী পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণাতেই বিকল্প ব্যবস্থায় পরীক্ষা নেয়ার চিন্তা করছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। বিকল্প হিসেবে হাইস্কুল ও মাদরাসা শিক্ষকদের দ্বারা পরীক্ষা পরিচালনা করা হবে। এ বিষয়ে প্রস্তুতি নিতে জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাদের বলা হয়েছে। মঙ্গলবার অধিদপ্তর থেকে কর্মকর্তাদের এ সংক্রান্ত চিঠি পাঠানো হয়।

অধিদপ্তর থেকে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়, শিক্ষকদের বিভিন্ন দাবির প্রেক্ষিতে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা গ্রহণে সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। তাই যেসব কেন্দ্রে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা কেন্দ্রসচিব বা পরিদর্শকের দায়িত্ব পেয়েছেন সেসব কেন্দ্রে হাইস্কুল বা মাদরাসার প্রধান শিক্ষক, সুপার বা সহকারী শিক্ষকদের দ্বারা পরীক্ষা পরিচালনার প্রস্তুতি গ্রহণ করতে বিশেষভাবে অনুরোধ করা হল। জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাদের এ নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

বেতন বৈষম্য নিরসনে তথা প্রধান শিক্ষকদের ১০ম ও সহকারী শিক্ষকদের ১১তম গ্রেডে বেতনের দাবিতে আন্দোলন করছেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। আগামী ১৭ নভেম্বর থেকে অনুষ্ঠিতব্য প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন তারা।

দাবি আদায়ে গত ২৩ অক্টোবর ঢাকায় কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে মহাসমাবেশের চেষ্টা চালালেও পুলিশি বাধায় তা পণ্ড হয়ে যায়। শিক্ষকরা আসন্ন সমাপনী পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণাও দিয়েছেন। আগামী ১৭ নভেম্বর থেকে প্রাথমিক ও ইবতেদায়ী সমাপনী পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এই পরীক্ষায় প্রায় ৩০ লাখের মতো শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে।

এদিকে আগামী ১৩ নভেম্বরের মধ্যে প্রধান শিক্ষকদের ১০ম ও সহকারী শিক্ষকদের ১১তম গ্রেডে বেতনের দাবি বাস্তবায়ন না হলে প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা বর্জন করবেন প্রাথমিকের শিক্ষকরা। পুলিশের বাধায় পণ্ড হয়ে যাওয়া শিক্ষকদের মহসমাবেশ শেষে এ ঘোষণা দিয়েছিলেন প্রাথমিক শিক্ষকদের বেতন বৈষম্য নিরসনে গঠিত মোর্চা বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক ঐক্য পরিষদের নেতারা। এরপর বেশ কয়েকবার প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেনসহ মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরেরর কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠক করে দাবি আদায়ে ফলপ্রসু আশ্বাস পেলেও ১৩ নভেম্বরের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে দেখা করে নিজেদের দাবি জানাতে চান শিক্ষক নেতারা। আর এ দিনের মধ্যে প্রধান শিক্ষকদের ১০ম ও সহকারী শিক্ষকদের ১১তম গ্রেডে বেতনের দাবি বাস্তবায়ন না হলে প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা বর্জন করার ঘোষণায় অনড় শিক্ষকরা।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।