ফেনী সংবাদদাতা; করোনার উপসর্গ নিয়ে একজন কলেজ অধ্যক্ষ ও দুই বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে ফেনী জেনারেল হাসপাতালের আইসোলেশ ওয়ার্ডে চিকিৎসাদীন অবস্থায় সফিকুর রহমান (৮০) ও ফেনী ডায়াবেটিস হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে সিরাজুল হক (৮৫) নামে দুই বৃদ্ধের মৃত্যু হয়। এছাড়া ফেনী মেডিনোভা প্রাইভেট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আনোয়ার উদ্দিন (৫৩) নামে এক অধ্যক্ষের মৃত্যু হয়েছে।
ফেনী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. মো. ইকবাল হোসেন জানান, করোনার উপসর্গ নিয়ে সোনাগাজী উপজেলার চরমজলিশপুর ইউনিয়নের কাটাখিলা গ্রামের বাসিন্দা অশিতিপর বৃদ্ধ সফিকুর রহমান গত রবিবার হাসপাতালের আসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি হন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার মধ্য রাতে তার মৃত্যু হয়। স্থানীয় চরমজলিশপুর ইউপি সদস্য শাহহজাহান সাজু জানান, হাসপতাল থেকে মরদেহ বাড়িতে নিলে স্থানীয় প্রশাসনের নির্দেশে স্বাস্থ্য বিধি মেনে জানাযা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।
এদিকে ফেনী ডায়াবেটিস হাসপাতালের পরিচালক ডা. মোয়াজ্জেম হোসেন জানান, ফুলগাজী উপজেলার মুন্সীরহাট ইউনিয়নের উত্তর আনন্দপুর গ্রামের বাসিন্দা অশিতিপর বৃদ্ধ সিরাজুল হক কয়েকদিন ধরে জ্বর-শ্বাসকষ্টে ভুগছেন। অবস্থার অবনতি হলে বুধবার তাকে হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়।
চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার ভোরে তার মৃত্যু হয়। ফুলগাজীর মুন্সীরহাট ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নুরুল আমিন জানান, হাসপতাল থেকে মরদেহ বাড়িতে নিলে স্থানীয় প্রশাসনের নির্দেশে স্বাস্থ্য বিধি মেনে বৃহস্পতিবার সকালে জানাযা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। অপরদিকে বৃহস্পতিবার ভোরে শহরের মেডিনোভা প্রাইভেট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পঞ্চাশোর্ধ আনোয়ার উদ্দিনের মৃত্যু হয়েছে। তিনি জেলার দাগনভূঞা উপজেলার উত্তর আলীপুর স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ ছিলেন। মেডিনোভা প্রাইভেট হাসপাতালে চেয়ারম্যান আবদুল কুদ্দুস সুমন জানান, ছাগলনাইয়া উপজেলার শুভপুরের বাসিন্দা অধ্যক্ষ আনোয়ার উদ্দিন গত কদিন ধরে জ্বরে ভূগছিলেন। বুধবার শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে সন্ধ্যায় তিনি মেডিনোভা প্রাইভেট হাসপাতালে ভর্তি হন। রাতে শ্বাসকষ্ট বেড়ে তার শারীরিক অবস্থার অববনতি হতে থাকে। পরে ভোরের দিকে তার মৃত্যু হয়।
নিহতের পারিবারিক সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার বাদ জোহর গ্রামের বাড়িতে স্বল্প পরিসরে নামাজে জানাজা শেষে মরদেহ পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
এদিকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত অনলাইন স্বাস্থ্য বুলেটিনের সর্বশেষ (১৬ জুলাই ২০২০) দেশে করোনাভাইরাসে গত ২৪ ঘণ্টায় আরো ৩৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময়ে আক্রান্ত হয়েছেন ২ হাজার ৭৩৩ জন। এ নিয়ে দেশে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৯৬ হাজার ৩২৩ জনে আর মোট মারা গেছেন ২ হাজার ৪৯৬ জন। ‘আমরা গত ২৪ ঘণ্টায় ৮০টি পরীক্ষাগার থেকে নমুনা সংগ্রহ হয়েছে ১৩ হাজার ৫৪৮টি। আর নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১২ হাজার ৮৮৯টি। মোট নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৯ লাখ ৯৩ হাজার ২৯১টি। ২৪ ঘণ্টায় এই সংগৃহীত নমুনা থেকে শনাক্ত রোগী পেয়েছি ২ হাজার ৭৩৩ জন। ২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের হার ২১ দশমিক ২০ শতাংশ। এ পর্যন্ত শনাক্ত ১ লাখ ৯৬ হাজার ৩২৩ জন। শনাক্তের হার ১৯ দশমিক ৭৬ শতাংশ।’ ‘২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছে ১ হাজার ৯৪০ জন। এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছে ১ লাখ ৬ হাজার ৯৬৩ জন। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৫৪ দশমিক ৪৮ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যুবরণ করেছে ৩৯ জন। এ পর্যন্ত মৃত্যু দাঁড়ালো ২ হাজার ৪৯৬ জন। শনাক্ত বিবেচনায় মৃত্যুর হার ১ দশমিক ২৭ শতাংশ। মৃত্যু বিশ্লেষণে পুরুষ ৩১ জন এবং নারী ৮ জন। এ পর্যন্ত মৃত্যুবরণ করেছেন পুরুষ ১ হাজার ৯৭১ জন এবং নারী ৫২৫ জন।’
আমাদের বাণী ডট কম/১৬ জুলাই ২০২০/পিপিএম