বখাটের অত্যাচার ও বাল্যবিয়ে থেকে নিজেকে রক্ষা পেতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) নাজিমুল হায়দারের কাছে স্কুলছাত্রী মোমিনা আক্তারের চিঠি দেয়ার একদিন পর অভিযুক্ত সেই বখাটে উছমান ভূঁইয়াকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। বুধবার রাতে আশুগঞ্জের ইউএনও মো. নাজিমুল হায়দার ভ্রম্যামাণ আদালত পরিচালনা করে এ কারাদণ্ড দেন।

এর আগে গত সোমবার আশুগঞ্জের ইউএনও এবং মঙ্গলবার সরাইলের ইউএনও’র কাছে চিঠি দেয় মোমিনা আক্তার। সে আশুগঞ্জ উপজেলার বগৈর গ্রামের মৃত নুরুল আমিনের মেয়ে ও সরাইল উপজেলার বেড়তলা উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী।

আশুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. নাজিমুল হায়দার সাংবাদিকদের জানান, স্কুলছাত্রী মোমিনা আক্তারের চিঠির প্রেক্ষিতে উভয় পক্ষকে ডাকা হয়। সেখানে উভয়ের সঙ্গে কথা বলে দণ্ডবিধির ৫০৯ ধারা মোতাবেক উছমান ভূঁইয়াকে ছয় মাসের বিনাশ্রম কারদণ্ড দেয়া হয়েছে।

চিঠিতে আশুগঞ্জ উপজেলার বইগর গ্রামের মোমিনা আক্তার লেখেন, আমি জেলার সরাইল উপজেলার বেড়তলা উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর ছাত্রী। আমার শ্রেণী রোল নম্বর দুই। চার বছর আগে আমার বাবা গ্রামের দুস্কৃতিকারীদের হাতে খুন হন। সেই থেকে আমার পরিবার চরম অসহায়ত্বের মাঝে দিনযাপন করে আসছে। অভিভাবকহীন পরিবারের মেয়ে হওয়ার সুযোগ নিয়ে বইগর গ্রামের শেখ সাদি ভূইঁয়ার বখাটে ছেলে উছমান ভূঁইয়া প্রায়ই আমাকে উত্যক্ত করে। এতে বখাটের অভিভাবকদের কাছে বিচার দিলে ওই বখাটে মোমিনাকে জোরপূর্বক বিয়ের ঘোষণা দেয়।

এদিকে বিয়ের খবর পেয়ে মোমিনা বাড়ি থেকে পালিয়ে জেলার সরাইল উপজেলার কাটানিশার গ্রামে বড় বোনের বাড়িতে আশ্রয় নেয়। জানা গেছে, শনিবার বখাটে উছমান ভূঁইয়া সেখানে গিয়ে মোমিনাকে ধরে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে।

ঘটনার বিবৃতি দিয়ে স্কুলছাত্রী মোমিনা আক্তার জানায়, আমার বিয়ের বয়স হয়নি। আমি পড়ালেখা করতে চাই। আমার বড় তানজিনা আক্তার নামে এক বোন অবিবাহিত অবস্থায় আছেন। তিনি তিন্নি আনোয়ারা মহিলা কলেজের প্রথমবর্ষের ছাত্রী। আমি এই বখাটের সঙ্গে বাল্যবিয়ে থেকে রক্ষা পেতে সকলের সহযোগিতা চাই।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।