ঘটনাটি কুলাউড়া উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নের বালিয়াটিলা গ্রামের। শারমিন ছিল ওই গ্রামের লাল মিয়ার মেয়ে ও শমসেরনগর সুজা মেমোরিয়াল কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী ছিল। আজ সোমবার সকাল সাড়ে ৯টায় পুলিশ তার নিজ বাড়ির ঝুলন্ত ফ্যান থেকে মরদেহ উদ্ধার করে।

মৃত্যুর আগের একটি চিরকুট লিখে গিয়েছে শারমিন। যাতে লেখা- ‘আমার জীবনের ১৬টি বছর খুব সুন্দর ছিল। কিন্তু ১৭তম বছরে অনেক কিছু ঘটে গেছে। সবকিছু এলোমেলো হয়ে গেছে’।

মা-বাবা ও পরিবারের সদস্যদের উদ্দেশ্য করে চিরকুটে সে আরো লেখে, আমি খুব ভালো ছাত্রী ছিলাম। আমার আব্বা, আম্মা ও ভাই আমাকে খুব আদর করেন, ভালোবাসেন। আমার মা-বাবা আমাকে তাদের পছন্দের ছেলের সাথে বিয়ে দিতে চাইছিলেন। কিন্তু আমি বিয়ের জন্য রাজী ছিলাম না। সে কথাটি তাদেরকে কখনো প্রকাশ করতে পারিনি। আবার আমি বিয়েতে রাজী না হলে মা-বাবা কষ্ট পাবেন। আমি তাদেরকে কষ্ট দিতে চাই না। কাঁদতে আমার খুব কষ্ট হয়। আত্মহত্যা মহাপাপ। তবে বেঁচে থাকা আমার জন্য অসম্ভব তাই মৃত্যুর পথ বেছে নিয়েছি। আমি জানি আল্লাহ আমাকে ক্ষমা করবেন না। ওপারে জাহান্নামের আগুনে আমি জ্বলবো। তবুও আমাকে সবাই মাফ করে দিয়েন, খুশি হব।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রবিবার দিবাগত রাতে শারমিন ঝুলন্ত ফ্যানের সাথে ওড়না পেঁচিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহনন করে। সোমবার ভোরে শারমিনের ছোট বোন শাহরীন ঘুম থেকে উঠে বড়বোনকে গলায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় দেখে চিৎকার দেয়। ছোটবোনের চিৎকারে মা-বাবা এসে তাকে ফ্যানের সাথে ঝুলতে দেখে পুলিশকে খবর দেন। খবর পেয়ে কুলাউড়া থানার উপপরিদর্শক মো. আবুল বাশার শারমিনের লাশ উদ্ধার করেন। এ সময় ঘর থেকে শারমিনের হাতে লেখা দুই পৃষ্ঠার একটি চিরকুট উদ্ধার করে পুলিশ।

হাজিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল বাছিত বাচ্চু ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ধারণা করছি এটা আত্মহত্যা। কুলাউড়া থানার উপপরিদর্শক মো. আবুল বাশার বলেন, প্রাথমিকভাবে আত্মহত্যার প্রমাণ মিলেছে। চিরকুটটি ছিঁড়ে ফেলা হয়েছিল। পরে ছেঁড়া চিরকুটটি ঘর থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।

কুলাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো. ইয়ারদৌস হাসান বলেন, প্রাথমিক সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা রুজু করা হয়েছে।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।