বৈশ্বিক লিঙ্গ সমতা সূচকে গতবারের চেয়ে বাংলাদেশ তিন ধাপ পিছিয়েছে। এ বছর বাংলাদেশের অবস্থান ৫০তম। তবে দক্ষিণ এশিয়ায় শীর্ষ। এ নিয়ে টানা পঞ্চমবার এ অঞ্চলে সেরা হলো বাংলাদেশ।

মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) প্রকাশ হওয়া ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের ‘দ্য গ্লোবাল জেন্ডার গ্যাপ-২০২০’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। ২০০৬ সাল থেকে এ সূচক প্রকাশ হচ্ছে।

এ সূচকে নারী ও পুরুষের বৈষম্য এবং বিভিন্ন সময় এ বৈষম্য দূর করতে দেশগুলোর অগ্রগতি তুলে ধরা হয়। স্বাস্থ্য ও গড় আয়ু, শিক্ষার সুযোগ, অর্থনীতিতে অংশগ্রহণ এবং রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন এ চার দিক বিশ্লেষণ করে নারী-পুরুষের বৈষম্য প্রতিবেদন তৈরি করা হয়।

বাংলাদেশের তুলনায় দক্ষিণ এশিয়ার বাকি দেশগুলো অনেক পেছনে রয়েছে। বাংলাদেশ ছাড়া দক্ষিণ এশিয়ার কোনো দেশ একশতেও স্থান পায়নি। নেপাল ১০১তম, শ্রীলংকা ১০২তম, ভারত ১১২তম, মালদ্বীপ ১২৩তম, ভুটান ১৩১তম ও পাকিস্তান ১৫১তম স্থানে রয়েছে।

এ প্রতিবেদনে যুক্তরাষ্ট্রের (৫৩তম) অবস্থান বাংলাদেশের তিন ধাপ নিচে। প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশ প্রায় ৭২ দশমিক ৬ শতাংশ ক্ষেত্রে লিঙ্গবৈষম্য কমিয়ে এনেছে। চারটি উপসূচকের মধ্যে বাংলাদেশ রাজনীতিতে নারীর ক্ষমতায়নে সবচেয়ে শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে।

এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের স্কোর ৫৪ দশমিক ৫ শতাংশ, বৈশ্বিক অবস্থান সপ্তম। অর্থনীতিতে অংশগ্রহণ ও সুযোগ তৈরিতে বাংলাদেশের অবস্থান ১৪১তম, শিক্ষার সুযোগ তৈরিতে ১২০তম এবং স্বাস্থ্য ও গড় আয়ুতে ১১৯তম।

ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম প্রকাশিত প্রথম ‘দ্য গ্লোবাল জেন্ডার গ্যাপ’ প্রতিবেদনে বাংলাদেশের বৈশ্বিক অবস্থান ছিল ৯১তম। সে সময় নারীর রাজনীতিক ক্ষমতায়ন উপসূচকে অবস্থান ছিল ১৭তম, শিক্ষার সুযোগ তৈরিতে ৯৫তম, অর্থনীতিতে অংশগ্রহণ ও সুযোগ তৈরিতে ১০৭তম এবং স্বাস্থ্য ও গড় আয়ুতে ১১৩তম।

এবারের প্রতিবেদনে বাংলাদেশের বিষয়ে বলা হয়, বিশ্বের একমাত্র দেশ যেখানে ৫০ বছরের মধ্যে পুরুষের তুলনায় নারীরা দীর্ঘমেয়াদে নেতৃত্বের শীর্ষস্থানে রয়েছে। তবে দেশটির মন্ত্রিসভায় মাত্র ৮ শতাংশ এবং জাতীয় সংসদে ২০ শতাংশ নারী প্রতিনিধিত্ব করছেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়, শীর্ষ ৫০ দেশের তালিকায় থাকা এবং দক্ষিণ এশিয়ায় নেতৃত্ব দেওয়া বাংলাদেশের জন্য বড় অর্জন। তবে নারীর মৌলিক অধিকার জোরদার করা এবং তাদের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সম্ভাবনার উন্নতি করার যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে দেশটির।

প্রতিবেদনের তথ্য মতে, অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে ২০১৮ সালের হিসাবে মোট শ্রমশক্তির ৩৮ শতাংশ, প্রাপ্তবয়স্ক নারীদের অংশ ছিল। ২০১৭ সালে যা ছিল ৩৪ শতাংশ।

এবারও বৈশ্বিক এ তালিকার শীর্ষে রয়েছে আইসল্যান্ড। দশমবার দেশটি এ তালিকার শীর্ষে অবস্থান করছে। বৈশ্বিক লিঙ্গসমতা সূচকে দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে রয়েছে নরওয়ে ও ফিনল্যান্ড।

তালিকায় শীর্ষ ১০ দেশের মধ্যে রয়েছে— সুইডেন, নিকারাগুয়া, নিউজিল্যান্ড, আয়ারল্যান্ড, স্পেন, রুয়ান্ডা ও জার্মানি। সবচেয়ে নিচের অবস্থানে থাকা পাঁচটি দেশ হলো— কঙ্গো প্রজাতন্ত্র (১৪৯), সিরিয়া (১৫০), পাকিস্তান (১৫১), ইরাক (১৫২) ও ইয়েমেন (১৫৩)।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।