ফণীর আঘাত হানার ফলে ভারতের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় অন্ধ্রপ্রদেশ ও ওড়িশায় ভারী বর্ষণ শুরু হয়েছে। প্রবল শক্তি সঞ্চয় করে অগ্রসর হতে থাকা ঘূর্ণিঝড় ফণীর কারণে আক্রান্ত অঞ্চল গুলোতে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে উঠেছে। আবহাওয়াবীদরা বলছেন, ক্রমান্বয়ে ফণীর আঘাত আরো বিস্তৃত হতে পারে।

ভারতীয় দৈনিক ইন্ডিয়া ট্যুডের এক বিশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অন্ধ্রপ্রদেশের বিশাখাপত্তনমে ৯০ থেকে ১১০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ো হাওয়ার সঙ্গে তীব্র বৃষ্টি শুরু হয়েছে। এ গণমাধ্যম সূত্রে আরো জানা গেছে, উপকূলীয় রাজ্য ওড়িশায় অত্যন্ত ভারী ৩০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে। বৃষ্টিপাত এলাকায় বাতাসের গতি ঘণ্টায় ১৭০ থেকে ১৮০ কিলোমিটার বেগে বইছে।

অতিরিক্ত ঝড় ও বৃষ্টির কারণে বিপাকে পড়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। প্রাণ বাঁচাতে নিরাপদ স্থানের সন্ধানে বাড়ি-ঘর ছাড়ছেন কেউ কেউ। অন্ধ্রপ্রদেশের কাকদ্বীপের উপকূলীয় থানা এলাকায় উচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। উপকূলীয় এলাকায় কাঁচা বাড়ির বাসিন্দাদের ইতোমধ্যে আশ্রয় শিবিরে সরিয়ে আনার প্রস্তুতি শুরু করেছে স্থানীয় প্রশাসন।

ফণীর সম্ভাব্য তাণ্ডব মোকাবেলার প্রস্তুতি পর্যালোচনা করতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি জরুরি বৈঠকে বসেছেন বলে জানা গেছে। ভারতের মন্ত্রীপরিষদ সচিব, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব ও ভারতীয় আবহাওয়া অধিদফতর, জাতীয় দুর্যোগ মোকাবেলা বাহিনী (এনডিআরএফ) ও জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা বৈঠকে ফণীর ক্ষয়ক্ষতি মোকাবেলায় নেয়া প্রস্তুতির ব্যাপারে নরেন্দ্র মোদিকে অবগত করেন।

ভারতের আবহাওয়া অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার সকালে ঘূর্ণিঝড়টি ওড়িশার পুরী উপকূল থেকে মাত্র ৪০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছিল। বিকেলের দিকে পুরী শহরের দক্ষিণ উপকূলে বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে।

টাইমস অব ইন্ডিয়ার খবরে বলা বলছে, ওড়িশা সরকার ইতোমধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ উপকূলীয় এলাকা থেকে প্রায় ৩ লাখ ৩১ হাজার ৭৯৪ জনকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিয়েছে। এই রাজ্য থেকে মোট ১১ লাখ ৫৪ হাজার ৪৭৫ জনকে সরিয়ে নেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। এছাড়া ৪ হাজার ৮৫২টি ঘূর্ণিঝড় ও বন্যা আশ্রয় কেন্দ্র চালু করা হয়েছে।

বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদফতর বলছে, ৩০০ কিলোমিটার ব্যাসের ঘূর্ণিঝড় ফণী শুক্রবার ভারতের ওড়িশা উপকূল অতিক্রম করে সন্ধ্যার দিকে খুলনাসহ বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় জেলাগুলোতে পৌঁছাতে পারে। তবে ঝড়ের অগ্রবর্তী অংশের প্রভাব বাংলাদেশের খুলনা অঞ্চলে দেখা দিতে পারে শুক্রবার সকাল থেকেই। এরজন্য স্থানীয় সকলকে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় গ্রহণের জন্য বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতর থেকে বলা হয়েছে।

[wpdevart_like_box profile_id=”https://www.facebook.com/amaderbanicom-284130558933259/” connections=”show” width=”300″ height=”550″ header=”small” cover_photo=”show” locale=”en_US”]

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।