সিলেটের বিশ্বনাথ সরকারি ডিগ্রি কলেজের মানবিক বিভাগের একাদশ শ্রেণির জুবেল মিয়া জীবনযুদ্ধে হার না মানা এক সৈনিক। দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে প্রতিনিয়ত লাড়াই করে যাচ্ছে সে। জুবেল প্রতিদিন সকালে কলেজের ক্লাস শেষে বিকেলে হকারি করে। প্রতিদিন বিকেলে ভ্যানগাড়ি নিয়ে নেমে পড়ে বিভিন্ন জাতের সবজির প্যাকেটজাত বীজ বিক্রির কাজে।

জুবেল মিয়া উপজেলার রামপাশা ইউনিয়নের কাদিপুর গ্রামের মৃত জমির আলীর ছেলে। বর্তমানে উপজেলা সদরের পুরান বাজার এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করছে। মা, দুই ভাই ও দুই বোন নিয়ে তার সংসার।

গত শনিবার বিকেলে উপজেলা সদরের পুরান বাজার এলাকায় জুবেলের সঙ্গে দেখা হলে সে জানায়, ১৮ মাস বয়সে তার বাবা মারা যান। অভাবের সংসার। অনেক কষ্ট করে লেখাপড়া শুরু করে সে। এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে এবার বিশ্বনাথ সরকারি ডিগ্রি কলেজে মানবিক বিভাগে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছে।

প্রতিদিন সকালে ক্লাস যায় জুবেল। ক্লাস থেকে ফিরে খেয়েদেয়ে বিকেলে নেমে পড়ে ব্যবসায়। দীর্ঘ পাঁচ বছর ধরে বড় ভাই সাহেদ আলীর সঙ্গে ক্ষুদ্র ব্যবসা করে আসছে সে।

জুবেল জানায়, ফলের মৌসুমে ফল আর শীতের মৌসুমে সবজির বীজ বিক্রয় করে সে। তারা দুই ভাই দুটি ভ্যানগাড়িতে করে উপজেলা সদরের বিভিন্ন স্থানে বীজ ফেরি করে বেড়ায়। তারা প্রায় ২৫ হাজার টাকা নিয়ে এ ব্যবসা শুরু করেছে। প্রতিদিন সে ৫০০-৬০০ টাকার বীজ বিক্রি করতে পারে। এর আগে ফল বিক্রি করেছে।

জুবেল বলে, সংসারের ব্যয়ভার সামলাতে ব্যবসা করছে সে। একসময় পড়াশোনার খরচ মেটাতে হিমশিম খেতে হতো তাকে। তবে ব্যবসা শুরু করার পর পড়াশোনাটা ভালোভাবেই করতে পারছে। নিজের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে জুবেল বলে, ‘লেখাপড়া করে উচ্চশিক্ষিত হওয়ার পাশাপাশি শীর্ষ উদ্যোক্তাদের কাতারে পৌঁছাতে চাই।’

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।