মাদারীপুর সদর উপজেলার গাছাবাড়ীয়া জামিয়া কারিমিয়া মাদ্রাসায় টাকা চুরির অভিযোগে শিক্ষকের নির্যাতনে বুধবার সন্ধ্যায় হাসিব নামে (১০) এক ছাত্রে মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় শিক্ষক ইলিয়াছ মোল্লাকে আটক করেছে পুলিশ।

হাসিব মাতুব্বর সদর উপজেলার কেন্দুয়া ইউনিয়নের শ্রীনাদী এলাকার ভ্যানচালক আনোয়ার মাতুব্বরের ছেলে।

হাসিববের পরিবারের অভিযোগ, গত রোববার ৫শ’ টাকার চুরি অভিযোগে ২য় শ্রেণির ছাত্র হাসিবকে নির্যাতন করে ওই মাদ্রসার শিক্ষক ইউসুফ মোল্লা। এরপর হাসিব মাদ্রাসা থেকে পালিয়ে তার বাড়ি চলে যায়। বুধবার সকালে তার বাবা-মা তাকে মাদ্রাসায় দিয়ে গেলে আবারো আশিককে নির্যাতন করলে গুরুতর অসুস্থ হয়ে যায়।

বিকালে কয়েকজন শিক্ষক নির্যাতনে কথা ধামাচাপা দিতে হাসিবের মুখে কিটনাশক ঢেলে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এসময় হাসপাতালে নিয়ে আসা মাদ্রাসার অন্য শিক্ষকরা পালিয়ে গেলেও আবুল বাসার নামে একজনের কথায় সন্দেহ হলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ তাকে আটক করে।

হাসিবের বাবা আনোয়ার মাতুব্বর কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আমার ছেলেকে মাত্র ৫শ টাকা চুরির অভিযোগে নির্যাতন করে মেরে ফেলেছে।

মাদ্রাসার পাশে নির্মাণ শ্রমিকের কাজ করা কালাম ফকির জানান, আমি ওই মাদ্রাসার পাশে একটি বাড়িতে কাজ করছিলাম। হঠাৎ দেখি একটি ছেলে মাদ্রাসার বাইরে ছটফট করছে। আমি দৌড় কাছে গিয়ে সবাইকে ডাক দিলে মাদ্রাসার শিক্ষকসহ ছাত্ররা বের হয়ে আসে। এরপর তাকে একটি ভ্যানে করে হাসপাতালে পাঠানো হয়। এরপর কী হয়েছে আমি জানি না।

এব্যাপারে অভিযুক্ত শিক্ষক ইউসুফ আলি মোল্লা ফোনে জানান, বাড়ি থেকে যে টাকা মাদ্রাসার জন্য দেয়া হতো সব টাকা বিভিন্নভাবে খরচ করে ফেলেছে হাসিব। আমার টাকা চুরি করায় আমি তাকে কয়েকটি আঘাত করেছিলাম। এরপর সে পালিয়ে বাড়ি চলে গিয়েছিল। সকালে তার মা এসে আবার মাদ্রাসায় দিয়ে গেলে আমরা রাখতে চাইনি। তারপরও অনুরোধ করে রেখে যায়। এরপর আমি ও মাইনুল ইসলাম স্যার ১টার আগেই কালকিনি চলে আসি ওয়াজ মাওফিল শুনতে। এরপর সন্ধ্যায় জানতে পারি হাসিব হাসপাতালে মারা গেছে। আজ কোনো ঘটনাই ঘটেনি তার সাথে। আমি চাই সঠিক ঘটনা বের হোক।

গাছাবাড়ীয়া জামিয়া কারিমিয়া মাদ্রাসার কমিটির সাধারণ সম্পাদক হাবিব হাওলাদারকে একাধিকবার ফোন দিয়ে তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।

মাদারীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সওগাতুল আলম বলেন, এ ব্যাপারে এখনো কোনো মামলা হয়নি। আমরা জিজ্ঞাসাবাদের জন্য একজনকে নিয়ে এসেছি। মামলা হলে তদন্ত করে আইগত ব্যবস্থা নেব।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।