নিজস্ব সংবাদদাতা, ঢাকা;  বিশ্বব্যাপী দাবানলের মত ছড়িয়ে পড়ছে করোনাভাইরাস। এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্ত বিশ্বের প্রতিটি দেশেই যেন বিদ্যুতের গতিতে এ ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়ছে। বাংলাদেশের লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে এর সংখ্যা। সাথে লাশের মিছিলও হচ্ছে বড়।  দেশে করোনাভাইরাসে আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে। এতে ভাইরাসটিতে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে চারজনে। নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন আরও ৬ জন। এতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৯ জনে।

আর এই ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে প্রাক-প্রাথমিক থেকে শুরু করে সব রকমের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো আরও ৯ দিন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। সে অনুযায়ী, আগামী ৯ এপ্রিল পর্যন্ত ছুটি থাকবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে।

শিক্ষার্থীদের পড়ালেখায় যাতে ব্যাঘাত না ঘটে তার জন্য সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নিয়মিত পড়ালেখা চালিয়ে যেতে শিক্ষার্থীদের মায়েদের মোবাইলে ইউনিক এসএমএস (ক্ষুদেবার্তা) পাঠানোর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার (২৩ মার্চ ২০২০) ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে দেশের সব জেলার প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাদের নানা নির্দেশনা দিয়েছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব আকরাম আল হোসেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আকরাম আল হোসেন মঙ্গলবার  বলেন, দেশের এক কোটি ৩৭ লাখ শিক্ষার্থীর মায়েদের মোবাইলে একটি ইউনিক এসএমএস পাঠানো হবে। এ পর্যন্ত বিদ্যালয়ে যা পড়ানো হয়েছে, যা পড়ানোর কথা ছিল তা বন্ধের মধ্যে মায়েদের তত্ত্বাবধানে ছাত্রছাত্রীদের পড়ালেখা চালিয়ে যেতে বলা হবে। এই এসএমএসটি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর থেকে পাঠাতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

সচিব বলেন, শিক্ষার্থীদের পড়ালেখা চালিয়ে যেতে নিয়মিত সংসদ টেলিভিশন ও রেডিওর মাধ্যমে সিলেবাস অনুযায়ী শ্রেণি পাঠের ক্লাস সম্প্রচার করা হবে। দেশের সেরা মানের শিক্ষকদের দ্বারা ভিডিও রেকর্ডিং করে তা সম্প্রচার করা হবে। নিয়মিত বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকরা মোবাইলে অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া মনিটরিং করতে বলা হয়েছে।

করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে দেশের সব বিপণিবিতান। এছাড়া মুলতবি করা হয়েছে জামিন ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়াদি ছাড়া নিম্ন আদালতের বিচারিক কাজ। এমনকি মাদারীপুরের শিবচর উপজেলাকে লকডাউনও ঘোষণা করা হয়েছে।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণরোধে আগামী ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত দেশের সরকারি-বেসরকারি সব ধরনের প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করেছে সরকার। বন্ধ করে দেয়া হয়েছে বাস, ট্রেন, লঞ্চসহ সব ধরনের গণপরিবহন। এ কার্যক্রমে স্থানীয় প্রশাসনকে সহায়তার জন্য দেশের সব জেলায় মোতায়েন করা হয়েছে সশস্ত্র বাহিনী।

গত ডিসেম্বরের শেষ দিকে চীনের উহানে প্রথম শনাক্ত হওয়া করোনাভাইরাস এখন বৈশ্বিক মহামারি। বিশ্বের ১৯৫টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে এ ভাইরাসটি। এখন পর্যন্ত এই প্রাণঘাতী ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা তিন লাখ ৭৮ হাজার ৮৪৮ এবং মারা গেছেন ১৬ হাজার ৫১৪ জন। অপরদিকে চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে এক লাখ দুই হাজার ৬৯ জন।

আমাদের বাণী ডট কম/২৪ মার্চ ২০২০/টিএ

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।