ছেলেদের পাকা ঘরে ঠাঁই হয়নি অশীতিপর বৃদ্ধা সমলা বিবির। তার জায়গা হয়েছে গোয়াল ঘরে। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।

ঘটনা ঘটেছে কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর উপজেলায়। বৃদ্ধ মাকে ছেলেরা গোয়ালঘরে রেখেছে। তবে শনিবার ওই অবহেলিত বৃদ্ধাকে গোয়ালঘর থেকে উদ্ধার করেছে উপজেলা প্রশাসন। উদ্ধার হওয়া বৃদ্ধা উপজেলার সাহেদল ইউনিয়নের সাহেদল গ্রামের আব্দুল নবীর স্ত্রী সমলা বিবি (৯০)।

আব্দুল নবীর চার ছেলে ও চার মেয়ে। ছেলেরা সবাই ভালো পরিবেশে পাকাঘরে বসবাস করেন। তাদের আয় রোজগারও ভালো। কিন্তু ছেলেরা মায়ের খাবার দেয় না। যখন যেমন চেয়ে পাওয়া যায় তাই খেয়ে কোনোমতে বেঁচে আছেন সমলা বিবি।

এ অবস্থা দেখে ওই বাড়ির এক মেয়ের জামাই এগিয়ে আসেন। তিনি বাড়ির লোকজনকে বলেও সমলা বিবির থাকা-খাওয়ার বিষয়টি সুরাহা করতে না পেরে হোসেনপুর থানা পুলিশের সহযোগিতা নেন।

হোসেনপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মো. মোস্তাফিজুর রহমান অভিযোগ পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সোনাহর আলীর সঙ্গে কথা বলেন। এমন এক বৃদ্ধা মায়ের ঘটনার খবর জেনে শনিবার বিকেলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সোনাহর আলী হোসেনপুর থানার ওসি শেখ মো. মোস্তাফিজুর রহমানকে সঙ্গে নিয়ে ওই গ্রামের আব্দুল নবীর বাড়িতে ছুটে যান।

খবর পেয়ে স্থানীয় সাহেদল ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিরাও ঘটনাস্থলে আসেন। পরে বাড়ির গোয়ালঘরে গিয়ে বৃদ্ধা সমলা বিবিকে বের করে আনা হয়। বাড়ির লোকজনের সব কথা শুনে পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়, সরকার বৃদ্ধ মা-বাবার ভরণপোষণ আইন করেছে। আইনে ভরণপোষণ করা বাধ্যতামূলক। ভরণপোষণ না করলে জেল-জরিমানা হবে। এনিয়ে বাড়ির লোকজন ক্ষমা চান এবং বৃদ্ধা সমলার নতুন ঘর নির্মাণসহ ভরণপোষণ করা হবে বলে অঙ্গীকার করেন।

সমলা বিবির নাতি ওমর ফারুক তার দাদি সমলা বিবির খাবারের দায়িত্ব নিয়েছেন। বৃদ্ধার ছেলেরা দু’দিনের মধ্যে মা সমলার জন্য নতুন ঘর নির্মাণ করে দেবেন। আর এসব কাজের তদারকি করবেন স্থানীয় ইউপি সদস্য ও এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা।

হোসেনপুর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সোনাহর আলী বলেন, এক অসহায় বৃদ্ধা মায়ের ভালো থাকার ব্যবস্থাসহ ভরণপোষণের কাজটি করে পুলিশ পাশে দাঁড়িয়েছে। ওই বৃদ্ধা মায়ের পাশে আগামীদিনেও থাকবে পুলিশ।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।