মেহেরপুর সংবাদদাতা; জেলার  মুজিবনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সরকারি অর্থে কেনাকাটায় নয়ছয়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। সরকারি ওই প্রতিষ্ঠানটিতে একটি এলইডি বাল্বের দাম দেওয়া হয়েছে ৭৭০ টাকা। আর ফ্যানের দর ২ হাজার ৭৩০ টাকা। যন্ত্রপাতি মেরামত না করেই ২ লাখ ৩৬ হাজার ৯০০ টাকার বিল উত্তোলন এবং স্টেশনারি দোকানির নামে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার বিল দেওয়া হয়েছে ২ লাখ ২০ হাজার টাকা।

অনুসন্ধানে উঠে এসেছে নামকাওয়াস্তে বিল ভাউচার করে সরকারি এ অর্থ প্রদানের ঘটনা। এসব বিল ভাউচার করে সরকারি টাকা লোপাটের অভিযোগ উঠেছে বিল ভাউচারকারীদের বিরুদ্ধে। মুজিবনগর উপজেলা হিসাব রক্ষণ অফিস এসব বিল ভাউচারের অর্থ প্রদানের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

এ বিষয়ে চলছে নানান সমালোচনা। রূপপুরের বালিশ কেলেঙ্কারির মতো কোনো ঘটনা এখানে ঘটেছে কি-না তা খতিয়ে দেখে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি করেছেন স্থানীয়রা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মুজিবনগর উপজেলার ১০টি কমিউনিটি ক্লিনিকে ২টি করে ফ্যান ও ২টি করে এলইডি বাল্ব সরবরাহের লক্ষ্যে মেহেরপুরের জোহা এন্টারপ্রাইজকে ৭০ হাজার টাকা বিল দেওয়া হয় ২৫ জুন। প্রতিষ্ঠানটি একটি বাল্বের দর ৭০ টাকা আর ফ্যানের দর ধরেছে ২ হাজার ৭৩০ টাকা।

কয়েকটি কমিউনিটি ক্লিনিকে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, পিজিএল নামের এলইডি বাল্ব আর এপোলো সিলিং ফ্যান সরবরাহ করা হয়েছে। তবে পণ্যের মানের সঙ্গে দামের ব্যাপক তফাৎ বলে জানিয়েছেন ইলেট্রনিক্স ব্যবসায়ীরা।

এদিকে মেহেরপুর হোটেল বাজারের ব্রাদার্স স্টোরের প্যাডে হাসপাতালের বিভিন্ন স্থান ও পাত্র পরিষ্কার বাবদ ২৫ জুন ২ লাখ ২০ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার দৃশ্যমান তেমন কিছু নেই। তবে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা দাবি করেছেন তিনি নিজে উপস্থিত থেকে এগুলো পরিষ্কার করেছেন।

অনুসন্ধানে উঠে এসেছে ভুয়া বিলের বিষয়। মেহেরপুর ব্রাদার্স স্টোরের স্বত্বাধিকারী মতিউর রহমান বলেন, হাসপাতালের লোকজন আমার কাছ থেকে স্টেশনারী পণ্য কেনে। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার বিল ভাউচারের বিষয়ে কিছুই জানি না। দোকানের প্যাড কে কখন নিয়ে কি করে তা বলা মুশকিল।

একই তারিখে মেহেরপুর জোহা এন্টারপ্রাইজের প্যাডে ইসিজি মেশিন, অটোক্লেভ ও নেবুলাইজার মেশিন ইত্যাদি এমএসআর খাতভুক্ত মেরামত বাবদ ২ লাখ ৩৬ হাজার ৯০০ টাকার বিল দেওয়া হয়েছে। তবে হাসপাতালের ইসিজি মেশিন অকেজো।

এ-সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে মুজিবনগর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রেজওয়ান আহমেদ বলেন, সব কাজ ঠিকঠাক মতো করা হয়েছে। কোনো প্রকার অসঙ্গতি নেই। টেন্ডার কমিটির সকলেই বিষয়টি বুঝে নেবেন।

এ বিষয়ে মেহেরপুর সিভিল সার্জন ডা. নাসির উদ্দীন বলেন, খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

আমাদের বাণী ডট কম/২৬ জুলাই ২০২০/পিপিএম

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।