টাঙ্গাইল  সংবাদদাতা; গত কয়েকদিন যাবত যমুনার অস্বাভাবিক পানি বৃদ্ধি ফলে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে বন্যা পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়েছে। এতে অর্ধ লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে পানি। অনেক স্থানে দেখা দিয়েছে ভাঙন। গৃহহারা হয়েছে শত শত পরিবার।

জানা যায়, গত কয়েকদিনে যমুনার পানি অতিমাত্রায় বৃদ্ধির কারণে যমুনা নদী তীরবর্তী গ্রামগুলোতে ব্যাপক ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে গৃহহীন হয়ে পড়েছে শত শত পরিবার। তলিয়ে গেছে পাট, আউশ ধান, তিল, সজ, বাদামসহ কয়েক হাজার একর জমির ফসল।

চর চন্দনী গ্রামের কৃষক রহিজ উদ্দিন জানান, ‘একদিকে নদীর পানি বাড়ছে, অন্যদিকে বাড়ি ভাঙছে। যা আবাদ করছিলাম সব বানে তলায়া গেছে। বাড়ি ঘর গরু ছাগল লইয়া কনু যামু কি করমু কিছুই দিসা পাইতাছি না।’

গাবসারা ইউপি চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান মনির জানান, ইউনিয়নের প্রায় ১৫টি গ্রামে ভাঙন দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যেই ভূইয়াপাড়া, ফলদাপাড়া, রামপুর, খন্দকার পাড়া, চন্দনী, নিকলাপাড়া, মেঘারপটল গ্রামে প্রায় ৩শ’ ১০টি পরিবার নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। ভাঙনকবলিত ছিন্নমূল পরিবারগুলো অতিকষ্টে বিভিন্ন স্থানে আশ্রয় নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে। উপজেলার অর্জুনা ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে প্রায় ২৫০টি পরিবারের ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলিন হয়েছে বলে জানান ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আইয়ুব আলী মোল্লা।

এদিকে ভাঙন আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে উপজেলার অর্ধশতাধিক গ্রামের মানুষ। গোবিন্দাসী ইউনিয়নের খানুর বাড়ি, ভালকুটিয়া ও কষ্টাপাড়া গ্রামের প্রায় অর্ধশতাধিক বাড়ি যমুনার গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। হুমকির মুখে রয়েছে গোবিন্দাসী গরুর হাট, গোবিন্দাসী উচ্চ বিদ্যালয়, ৩শ’ বছরের পুরানো কষ্টাপাড়া কালি মন্দির, খানুরবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতল ভবনসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। নিকরাইল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল মতিন সরকার জানান, কোনাবাড়ী, বাহাদুর টোকনা ও পলশিয়া গ্রামে ৪৫টি পরিবারের বাড়িঘর যমুনায় বিলীন হয়েছে।

টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো: সিরাজুল ইসলাম জানান, যমুনার পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় আপাতত জিও ব্যাগ ফেলা বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে পানি কমার সাথে সাথে পুনরায় জিও ব্যাগ ফেলা হবে।

ভূঞাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছা: নাসরিন পাভীন জানান, ভাঙন কবলিত পরিবারের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। তাদের জন্য এ পর্যন্ত কোন ত্রাণ বরাদ্দ পাইনি। তবে এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।

আমাদের বাণী ডট কম/২৯  জুন ২০২০/পিপিএম  

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।