যশোরের শার্শা উপজেলায় ঘুষ না পেয়ে গৃহবধূকে (৩০) সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে করা মামলা পুলিশ ব্যুরো অব ইনেভেস্টিগেশনে (পিবিআই) হস্তান্তর করা হয়েছে। শুক্রবার (৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে মামলার নথিপত্র হস্তান্তর করা হয়। যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সালাহউদ্দিন শিকদার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

পিবিআই যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কেএমএইচ জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, শার্শার লক্ষণপুরে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ মামলার নথিপত্র শুক্রবার দুপুরে গ্রহণ করা হয়েছে। মামলার তদন্তভার দেওয়া হয়েছে এসআই মোনায়েম হোসেনকে।

এসআই মোনায়েম হোসেন খান বলেন, ‘মামলার কাগজপত্র পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন, ভিক্টিমের সঙ্গে কথা বলেছি, আরও কিছু বিষয়ে খোঁজখবর নিচ্ছি। এছাড়া মামলার সব ধরনের আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে।’

এর আগে শুক্রবার সকালে (৬ সেপ্টেম্বর) সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার ওই গৃহবধূ সাংবাদিকদের জানান, ভয়ভীতির কারণে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সামনে এসআই খায়রুলের নাম তিনি প্রকাশ করতে পারেননি। তবে, তিনি এসআই খায়রুল এবং অন্য তিন জন আসামির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।

প্রসঙ্গত, ২ সেপ্টেম্বর যশোরের শার্শা উপজেলার লক্ষ্মণপুর এলাকায় ওই গৃহবধূকে পুলিশের এসআই খায়রুল আলম ও সোর্স কামরুজ্জামান ওরফে কামারুল সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ ওঠে। ২৫ আগস্ট ওই মহিলার স্বামীকে পুলিশ আটক করে। তাকে ছেড়ে দেওয়ার শর্তে ৫০ হাজার টাকা দাবি করে গোড়পাড়া পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই খায়রুল আলম। টাকা না দেওয়ায় তাকে ৫০ বোতল ফেনসিডিল দিয়ে চালান দেওয়া হয়। ২ সেপ্টেম্বর গভীর রাতে এসআই খায়রুল, সোর্স কামারুলসহ চার জন ওই গৃহবধূর বাড়িতে যান। তারা আবারও ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন। টাকা না দেওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে এসআই খায়রুল ও কামারুল তাকে ধর্ষণ করেন বলে ওই গৃহবধূর অভিযোগ। ৩ সেপ্টেম্বর সকালে তিনি যশোর জেনারেল হাসপাতালে ডাক্তারি পরীক্ষা করাতে গেলে বিষয়টি চাউর হয়ে যায়। ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য সেদিন বিকালে আলামত সংগ্রহ করেন ডাক্তাররা।

এদিকে, সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনা জানাজানি হওয়ায় জেলা পুলিশ প্রশাসন নড়েচড়ে বসে। পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। ওই গৃহবধূ ৩ সেপ্টেম্বর রাতে শার্শা থানায় একটি মামলা (নম্বর-০৪/০৩.০৯.১৯) করেন। এতে এসআই খায়রুলের নাম রাখা হয়নি। আসামি করা হয় শার্শার চটকাপোতা এলাকার কামরুজ্জামান ওরফে কামরুল, লক্ষ্মণপুর এলাকার আব্দুল লতিফ ও আব্দুল কাদেরকে এবং একজনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়।

৫ সেপ্টেম্বর যশোর জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার-আরএমও ডা. আরিফ আহমেদ জানান, ডাক্তারি পরীক্ষায় ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে। তবে, সেখানে কার কার সিমেন রয়েছে তার জন্য ডিএনএ টেস্ট প্রয়োজন।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।