রাজবাড়ী সদর উপজেলার পাঁচুরিয়া ইউনিয়নের মুকুন্দিয়া গ্রামে বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ময়ে (২২) ধর্ষনের অভিযোগের ঘটনায় গত বুধবার প্রতিবন্ধী ওই তরুণীর বোন আলেয়া বেগম বাদী হয়ে মুকুন্দিয়া গ্রামের রওশন মীরের ছেলে মিন্টু মীর ও তার চাচাতো ভাই শাজাহান মীরের স্ত্রী বিউটি বেগম (৪০) কে আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে রাজবাড়ী সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করে। মামলা নং-২২।

বর্তমানে নির্যাতনের শিকার প্রতিবন্ধী তরুণীটি ৮ মাসের অন্তসত্বা হয়ে পরেছে।

ওই তরুণীর বোন আলেয়া বেগম বলেন, আমার বুদ্ধি প্রতিবন্ধী বোনকে প্রায়ই কু প্রস্তাব দিতো লম্পট মিন্টু মীর। আট মাস আগে একদিন বিকেল বেলায় মিন্টুর চাচাতো ভাবি বিউটি বেগমের বাড়ির সামনে দিয়ে হেটে যাওয়ার সময় তিনি টিভি দেখার কথা বলে আমার বোনকে ডেকে তার একতলা বিল্ডিংয়ের ছাদের সিঁড়ি ঘরে নিয়ে যায়। এরপর বিউটি মিন্টুকে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ডেকে আনে।পরে বিউটির সহযোগিতায় মিন্টু মীর আমার বোনকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। এ ঘটনার পর তারা আমার বোনকে ঘটনাটি কাউকে না বলার জন্য ভয়ভীতি দেখিয়ে হুমকি দেয় যে কারো কাছে বললে প্রাণে মেরে ফেলবে।

তিনি আরও জানান, মিন্টু মীরের ধর্ষণের ফলে আমার বোন বর্তমানে ৮ মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পরেছে। পেটের আকার বড় হতে দেখে আমরা ভেবেছিলাম ওর পেটে টিউমার হয়েছে। যার কারণে গত ৭ মে রাজবাড়ী শহরের নুর ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ওর আল্ট্রাস্নোগ্রাম করানো হয়। আল্ট্রাস্নোগ্রাম রিপোর্টে কর্তব্যরত চিকিৎসক আমাদের জানান ওর পেটে ৮ মাসের ছেলে বাচ্চা রয়েছে। এ ঘটনার শোনার পর আমরা তাকে অনেক জিজ্ঞাসাবাদ করলে এক পর্যায়ে সে ধর্ষণের ঘটনার কথা খুলে বলে। পরে ৮ তারিখে থানায় একটি মামলা দায়ের করি।

ধর্ষণের শিকার হওয়া তরুণীর মা হাজেরা বেগম জানায়, আমার আমার বুদ্ধি প্রতিবন্ধী মেয়েকে অটোচালক মিন্টু তার চাচাতো ভাবির সহযোগিতায় ধর্ষণ করে। এখন আমার মেয়ে অন্তঃসত্ত্বা হওয়ায় এলাকায় মুখ দেখাতে পারছি না। মিন্টু আমাদের এমন সর্বনাশ করলো আবার উল্টো আমাদের ভয়ভীতি দেখাচ্ছে।

তরুণীর ছোট ভাই মোঃ আলামিন জানায়, এই ঘটনায় মামলা করার পর থেকে ২নং আসামি বিউটির স্বামী সাজাহান মীর মামলা উঠানোর জন্য বিভিন্নভাবে চাপ দিচ্ছে। মামলা না উঠালে প্রাণে মেরে ফেলারও হুমকি দেয়।

স্থানীয় গ্রামবাসী মোঃ আসলাম ব্যপারী জানায়, বুদ্ধি প্রতিবন্ধী মেয়েটি খুবই ভালো। সে এলাকায় সবার কাছে প্রিয়। ওর মতো একটি অসহায় প্রতিবন্ধী মেয়ের সাথে এমন কাজ যে করেছে তার দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি চাই।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা রাজবাড়ী সদর থানার এস আই এনছের আলী জানান, মামলা দায়ের হবার পর থেকে মিন্টু মীর ও তার ভাবি বিউটি বেগম পলাতক ছিলো। এক পর্যায় আজ ভোর রাতে মিন্টু মীর কে মুকুনদিয়া থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অপর জনকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।বুদ্ধিপতিবন্ধী মেয়েটির ডাক্তারি পরীক্ষা ও বিজ্ঞ আদালতে জবানবন্দি রেকর্ডের প্রক্রিয়া চলছে।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।