ডেস্ক রিপোর্ট, ঢাকা;  ঈদের আগে খুলনার খালিশপুর, দৌলতপুর, কে.এফ.ডি সহ রাষ্ট্রায়ত্ব জুটমিলের স্থায়ী, অস্থায়ী, বদলী নির্বিশেষে সকল শ্রমিকের বকেয়া মজুরি ও বর্তমান স্কেলে ঈদ বোনাস পরিশোধ, মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও গ্রেফতারকৃত নেতৃবৃন্দকে মুক্তির দাবি জানিয়েছে সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট।

আজ শুক্রবার (২২ মে ২০২০) সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক সৌমিত্র কুমার দাস স্বাক্ষরিত  গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে  সংগঠনটির সভাপতি রাজেকুজ্জামান রতন ও সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবিব বুলবুল ঈদের আগেই খালিশপুর, দৌলতপুর, কে.এফ.ডি সহ রাষ্ট্রায়ত্ব জুটমিলের স্থায়ী, অস্থায়ী, বদলী নির্বিশেষেসকল শ্রমিকের বকেয়া মজুরি ও মজুরি কমিশন ২০১৫ এর স্কেল অনুসারে ঈদ বোনাস পরিশোধ, আন্দোলনরত শ্রমিকদের নামে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং গ্রেফতারকৃত খালিশপুর জুট মিল শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দের নি:শর্ত মুক্তির দাবি জানান।

নেতৃবৃন্দ বলেন, শ্রম আইন ২০০৬ এর ৪(৮) ধারা অনুসারে কোন শ্রমিকের শিক্ষানবিশীকাল হবে ৩ মাস তবে দক্ষ শ্রমিকের ক্ষেত্রে শিক্ষানবিশীকালের মেয়াদ আরও ৩ মাস বৃদ্ধি করা যাবে আর শিক্ষানবিশীকাল শেষে বা তিনমাস মেয়াদ বৃদ্ধি শেষে কনফরমেশন লেটার দেওয়া না হইলেও সংশ্লিষ্ট শ্রমিক স্থায়ী বলে গণ্য হবে। আর ৪(৫) ধারা অনুসারে কোন শ্রমিককে অস্থায়ী শ্রমিক বলা হবে যদি কোন প্রতিষ্ঠানে তার নিয়োগ এমন কোন কাজের জন্য হয় যা একান্ত ভাবে অস্থায়ী ধরণের এবং যা সীমিত সময়ের মধ্যে সম্পন্ন হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। অর্থাৎ কোন স্থায়ী ধরণের কাজের জন্য নিযুক্ত শ্রমিকের শিক্ষানবিশীকাল সফল ভাবে সম্পন্ন হওয়ার পরও ঐ শ্রমিককে অস্থায়ী শ্রমিক হিসাবে গণ্য করা শ্রম আইনের সুস্পষ্ট লংঘন। অথচ খালিশপুর, দৌলতপুর, কে.এফ.ডি সহ রাষ্ট্রিয় ৫টি পাটকলের শতভাগ শ্রমিক বছরের পর বছর নিয়মিত কাজ করার পরেও বি.জে.এম.সি কর্তৃপক্ষ ঐ শ্রমিকদের স্থায়ী শ্রমিকের পরিচয় পত্র দেয়নি। এখন অস্থায়ী শ্রমিকের অজুহাতে আইন ও মানবিকতাকে পদদলিত করে নিন্ম আয়ের অসহায় শ্রমিকদের করোনা দুর্যোগে রাষ্ট্র ঘোষিত সাধারণ ছুটির সময়ের মজুরি থেকে বঞ্চিত করার চেষ্টা হচ্ছে। রাষ্ট্রায়ত্ব কারকানার শ্রমিকদের জন্য ঘোষিত মজুরি কমিশন ২০১৫ বহু আগেই বাস্তবায়ন হওয়ার পর এখন পূর্বের মজুরি কাঠামোর ভিত্তিতে ঈদ বোনাস দিতে চাওয়া রাষ্ট্রের আইন অস্বীকার করার শামিল।

এছাড়াও এই শ্রমিকদের নতুন মজুরি কমিশনের হিসাবে এরিয়ারের টাকা এবং সাধারন ছুটি ঘোষণার পূর্বের কয়েক সপ্তাহের মজুরি এখনো বকেয়া রয়েছে। সাধারণ সময়ে মজুরি বকেয়া থাকলে ধার-কর্য করে জীবনযাপন করা গেলেও করোনা মহামারি দুর্যোগের এই সময়ে সেই সুযোগ না থাকায় শ্রমিকরা মজুরি ও ঈদ বোনাস পরিশোধের ন্যায্য দাবিতে আন্দোলনে নামতে বাধ্য হয়েছে। রাষ্ট্রিয় প্রতিষ্ঠান হিসাবে বি.জে.এম.সি’র উচিত ছিল করোনা সংক্রমিত হয়ে মৃত্যুর ঝুঁকি থেকে রক্ষা করতে শ্রমিকদের খাদ্য ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিতে পদক্ষেপ নিয়ে উদাহরণ তৈরী করা করা। কিন্তু ন্যূনতম মানবিকতায় বিচার না করে আন্দোলন দমনের কৌশল হিসাবে স্থানীয় স্বর্থান্বেষী মহল কে দিয়ে প্রায় ৬ শতাধিক শ্রমিকের নামে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। খালিশপুর জুট মিল শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দকে গ্রেফতার করা হচ্ছে। গ্রেফতার আতঙ্ক তৈরি হয়েছে সাধারণ শ্রমিকদের মধ্যে। ঊৎসব দুরে থাক অর্থকষ্টে-খাদ্যাভাবে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে শ্রমিকদের জীবন বাঁচানোই দুঃসাধ্য।

নেতৃবৃন্দ, শ্রমিকদের বিরুদ্ধে স্বৈরাতান্ত্রিক ও অমানবিক আচরণের নিন্দা জানান এবং শ্রমিকদের নামে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও গ্রেফতারকৃত খালিশপুর জুট মিল শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেন। নেতৃবৃন্দ, সরকার বরাদ্দ দেওয়ার পরও বি.জে.এম.সি শ্রমিকদের মজুরি বকেয়া রাখায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং অবিলম্বে শ্রমিকদের ৫ দফা মেনে নেওয়ার আহবান জানান।

আমাদের বাণী ডট/২২ মে ২০২০/পিবিএ 

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।