বান্দরবান জেলার লামা উপজেলার আজিজনগর ইউনিয়ন সদরের প্রাণ কেন্দ্রে অবস্হিত চাম্বি হেডম্যান পাড়ায় দেদারছে চলছে দেশীয় চোলাই মদের রমরমা ব্যাবসা।

সুত্র জানায়,আজিজনগর ইউনিয়নের হেডম্যান পাড়ায় ২শতাধিক ক্ষুদ্র নৃ গোষ্টীর বসবাস।এখানকার বেশীরভাগ বাড়ি ই হয়ে ওঠেছে এক একটি মদ তৈরীর কারখানা।এখানে উৎপাদিত মদ অত্র ইউনিয়ন ছাড়াও পাচার হচ্ছে পার্শ্ববর্তী ২ টি উপজেলা চকরিয়া ও লোহাগাড়ায়।এছাড়াও পাশের ইউনিয়ন হারবাং থেকে বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ এসে হেডম্যান পাড়ায় বসে সস্তায় দেশীয় মদ কিনে খেয়ে আজিজনগরে হৈ চৈ করছে।

স্হানীয় যুবকদের মধ্যেও এটি এখন আশংখা জনক ভাবে ছড়িয়ে পড়ছে।সস্তায় কিনতে পাওয়া বাংলা মদ থেকে অনেকেই ঝুঁকে পড়ছে মরণনেশা ইয়াবার দিকে।

এই নিয়ে অভিবাবক মহলে দেখা দিয়েছে ব্যাপক উদ্ভেগ ও উৎকন্ঠা।

এই বিষয়ে আজিজনগর পুলিশ ফাঁড়ি ইনচার্জ মোঃ কামরুজামান এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি  জানান,গত মাসে হেডম্যান পাড়ায় অভিযান চালাতে গেলে ওই পাড়ার ‘চাইনিজ’ নামের একজন তালিকাভুক্ত আসামী নেশাগ্রস্ত অবস্থায় তাকে এবং সঙ্গীয় পুলিশ সদস্য দের দাড়ালো দা হাতে মারতে আসেন।তিনি আরো জানান পাচারের সঙ্গে জড়িত বেশীরভাগ ই নারী হওয়ায় তাদের কাছে তথ্য থাকলে ও অনেক সময় নারী পুলিশ সদস্য না থাকায় পাচারকারী কে সঠিক ভাবে তল্লাশি চালানো যায় না।তারপর ও বিভিন্ন সময় অভিযান পরিচালনা করে যাদের কে আটক করা হয় তারা ২/১ দিনের মধ্যেই জামিনে বের হয়ে এসে আবার এই ব্যাবসা শুরু করে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সাবেক এক ছাত্রলীগ নেতা জানান,আজিজনগর এক সময় শিল্প নগরী হিসেবে দক্ষিণ চট্টগ্রামের সব চেয়ে বেশী সুনাম অর্জন করেছিলো।আর বর্তমানে চাম্বি হেডম্যান পাড়ার মদের জন্য এলাকার সুনাম বিনষ্ট হচ্ছে।যুব সমাজের মধ্যে দেখা দিচ্ছে মাদকাসক্তি।

আজিজনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন কোম্পানি বলেন,হেডম্যান পাড়ায় মদ বিক্রি হয় এটা সত্যি।তবে তিনি চেয়ারম্যান হবার পর থেকে নানামুখী উদ্দ্যেগ নিয়ে ও কর্মসংস্হান সৃষ্টির মাধ্যমে এর পরিমান অর্ধেকের কমে নামিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছেন।এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন জনসচেতনতা ছাড়া এটি পুরোপুরিভাবে বন্ধ করা কোন ভাবেই সম্ভব নয়।

প্রসঙ্গত গত ২০১৮ সালের ২৮ জুন র্য়াব ও বান্দরবান জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিট্রেট এর অভিযানে ১ লক্ষ ৫ লিটার মদ ও ৩৪ কেজি মদ তৈরীর সরন্জাম উদ্ধার করা হয়।এসময় ৫ জন কে আটক করা হলে ও মূল হোতাদের ধরতে না পারায় ৫ হাজার টাকা করে অর্থ দন্ড দিয়ে আটককৃত দের ছেড়ে দেয়।

এই বিষয়ে লামা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আপ্পেলা রাজু নাহা বলেন, আজিজনগরে চোলাই মদের বিস্তার রোধে পুলিশ তার সর্বোচ্চ টায় করছে।এর মধ্যে তার নেতৃত্ব বেশ কয়েকবার অভিযান চালানো হয়েছে এবং প্রায় কয়েক হাজার লিটার মদ উদ্ধার করা হয়েছে।

লামা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নূর এ -জান্নাত রুমী এই বিষয়ে এই প্রতিবেদক কে জানান, জনসচেতনতা বৃদ্ধি করা ছাড়া কোনোভাবেই এটি স্হায়ী ভাবে বন্ধ করা সম্ভব হবেনা।তবে চোলাই মদ পাচার রোধে পুলিশ কে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে এবং এই ক্ষেত্রে স্হানীয় জনপ্রতিনিধি দের আরো বেশী সচেষ্ট হয়ে কাজ করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।তিনি আরো জানান অল্প কয়েকদিনের মধ্যে আজিজনগর চাম্বি হেডম্যান পাড়ায় জনসচেতনতা মূলক একটি সেমিনার করা হবে।

এলাকার সচেতন মহল বলছেন রাজনৈতিক ভাবে প্রভাবশালী দের কাছ থেকে সেল্টার না পেলে হেডম্যান পাড়ার মদ উৎপাদনকারীরা অনেক আগেই এসব ব্যাবসা বন্ধ করে দিতো।তারা এই বিষয়ে কঠোর ব্যাবস্হা গ্রহনের জন্য বান্দরবান জেলা প্রশাসক ও পার্বত্য বিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি এর দৃষ্টি আর্কষণ করেন।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।