শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন ছিল সোনিয়ার (২১)। পরিবারের অসচ্ছলতার কারণে বড় মেয়ে সোনিয়াকে বিয়ে দেয়ার পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু এখনই বিয়ে করার ব্যাপারে অমত দিয়ে সে স্বপ্ন দেখছিল শিক্ষকতার। সেজন্য মেঘনা নদী পাড়ি দিয়ে প্রথম শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা দিতে গিয়েছিল। কিন্তু পথিমধ্যে বাল্কহেডের ধাক্কায় প্রায় ৪০ জনের অধিক যাত্রী নিয়ে ট্রলারটি ডুবে যায়।

ট্রলার ডুবে গুরুতর আহত হয়ে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (আইসিইউ) ছয় দিন ভর্তি ছিল সোনিয়া। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টায় পৃথিবী থেকে চিরবিদায় নিয়ে চলে যেতে হয় তাকে।

গত শুক্রবার নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলায় চরকিশোরগঞ্জের মেঘনা নদীতে ট্রলারডুবির ঘটনায় গুরুতর আহত হয় সোনিয়া।

তার মৃত্যুর খবরটি তার বাবা আওলাদ হোসেন নিশ্চিত করেছেন।

ঘটনার পরে ট্রলারে থাকা সোনিয়াকে গুরুত্বর আহত অবস্থায় প্রথমে মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর অবস্থার অবনতি দেখে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখান থেকে ঢাকা সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ছিল সে।

গজারিয়া উপজেলার ইমামপুর ইউনিয়নের আধার মানিক গ্রামের বাসিন্দা সোনিয়া ট্রলারে চেপে মেঘনা পার হয়ে মুন্সীগঞ্জ লঞ্চঘাট আসছিল। সেখান থেকে মুন্সীগঞ্জের সরকারি হরগংগা কলেজে পরীক্ষায় অংশ নেয়ার কথা ছিল তার।

পরিবারিক সূত্রে জানা যায়, ডান পায়ের রগ ছিঁড়ে গেছে, মেরুদণ্ডের হাড় ভেঙ্গে গেছে এবং শরীরের কয়েকটি স্থান থেতলে গেছে। সোমবার আইসিইউ রুম থেকে বেডে হস্তান্তর করা হয় সোনিয়াকে।

দরিদ্র রিকশাচালক আওলাদ হোসেনের মেয়ে সোনিয়া আক্তার। তিন বোন আর এক ভাইয়ের মধ্যে সবার বড় সোনিয়া। বাবা রিকশা চালিয়ে যা রোজগার করতেন তা দিয়েই তাদের সংসার চলত।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।