মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের আওতায় থাকা বিভিন্ন সরকারি স্কুল-কলেজ এবং শিক্ষাসংশ্লিষ্ট অফিসের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী পদে নিয়োগের ফল প্রকাশের নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত আদেশ রোববার জারি করা হয়েছে।

জানা গেছে, ২০১৩ সালে এক হাজার ৯৬৫ জন কর্মচারী নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়। লিখিত পরীক্ষা নেয়া হয় একই বছরে। কিন্তু পরীক্ষায় ব্যাপক অনিয়ম, দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে।

অভিযোগ ওঠে, প্রত্যেক প্রার্থীর কাছ থেকে বিভিন্ন অঙ্কের ঘুষ গ্রহণের মাধ্যমে নিয়োগ দেয়া হচ্ছে। অধিদফতরের একটি সিন্ডিকেট এই টাকা সংগ্রহ করছে, অধিদফতরের শীর্ষ কর্মকর্তাকেও দায়ী করা হয়।

তখন এসব অভিযোগ উপেক্ষা করে অধিদপ্তর। নিয়োগপ্রক্রিয়া চালিয়ে যাওয়ার উদ্যোগ নেয়। কিন্তু অভিযোগ আমলে নিয়ে ওই নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল করে দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

পরে এই নিয়োগ নিয়ে একাধিক চিঠি চালাচালি করে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও অধিদফতর। তখন নতুন করে বিজ্ঞপ্তি দেয়া হবে কি না তা নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হয়। এভাবে চার বছর পার হয়ে যায়।

এরপর ২০১৭ সালে নতুন করে পরীক্ষা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সেই পরীক্ষার মাধ্যমে তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগের ফল প্রকাশ করা হয়। কিন্তু দেড় বছর পার হলেও চতুর্থ শ্রেণির ৯৮৭ জন কর্মচারী নিয়োগের ফল দিতে পারেনি শিক্ষা বিভাগ।

জানা যায়, নিয়োগ প্রক্রিয়ার মধ্যে থাকা ৯৮৭ পদ বাদেই গত ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ২,২০১টি পদ ফাঁকা রয়েছে। পদ শূন্য থাকায় স্কুল ও কলেজে দাফতরিক ভোগান্তি হচ্ছে।

অধিদপ্তর জানায়, গত ১৭ ফেব্রুয়ারি অধিদফতরের মহাপরিচালক শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব বরাবর এ সংক্রান্ত একটি চিঠি দেন।

সেখানে বলা হয়, চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিকে কেন্দ্র করে নো ওয়ার্ক নো পে’র ভিত্তিতে স্কুল-কলেজে কর্মরত কর্মচারীদের ৪৮টি রিট মামলা বিচারাধীন। যাতে রিট পিটিশনার ২,২০২ জন। একটি মামলার রায়ে সুপ্রিম কোর্ট উভয়পক্ষকে আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত স্থিতাবস্থা বহাল রাখার আদেশ দিয়েছিলেন। আমাদের পক্ষ থেকে দ্রুত মামলার শুনানির ব্যবস্থাগ্রহণ করতে অ্যাটর্নি জেনারেলকে অনুরোধ করা হয়েছিল। এই ৯৮৭টি পদ ছাড়াও বর্তমানে আরও ২,২০১টি পদ শূন্য আছে।

এই চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় গত ১৮ মার্চ আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত চেয়েছিল। সেখানে বলা আছে, রিট পিটিশনারদের সংখ্যা যেহেতু ২,২০২ জন। আর যেহেতু ৯৮৭টি বাদেও ২,২০১টি পদ শূন্য রয়েছে। তাই ৯৮৭ পদে নিয়োগ প্রদানসহ অন্য পদেও নিয়োগের কার্যক্রম শুরু করা যাবে কি না।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।