নিজস্ব সংবাদদাতা, ঢাকা; সরকারি স্কুল কলেজের শিক্ষকরা সরকারি কোষাগার থেকে বেতন পেলেও এমপিওভুক্ত বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা নামে মাত্র সরকারি অনুদান পেয়ে থাকেন। তবে নন এমপিও বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কর্মরত শিক্ষক কর্মচারী সরাকারের কোন খাত থেকেই আর্থিক সুবিধা পান না সম্পুন্ন বিনা বেতনে তারা শিক্ষকতা পেশায় নিয়োজিত। সংসার চালাতে ও জীবন নির্বাহের জন্য তারা প্রাইভেট কোচিং কিংবা গৃহশিক্ষক হিসেবে কাজ করেন। কিন্তু  শিক্ষা আইন ২০১৯-এর খসড়ার ৩০ ধারায় বলা হয়েছে, কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কোনো শিক্ষক নিজ    প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীকে প্রাইভেট পড়াতে পারবেন না। তবে অভিভাবকদের সম্মতিতে স্কুলের আগে বা পরে নীতিমালা অনুযায়ী অতিরিক্ত ক্লাস করাতে পারবেন। তবে কোচিং সেন্টার পরিচালনা করা বা কোচিং সেন্টারে শিক্ষকতা করা নিষিদ্ধ গণ্য হবে না।

শিক্ষা আইনের খসড়ার ২৬ ধারার ১ ও ৩ উপধারায় বলা হয়েছে, কোনো ধরনের নোট বই বা গাইড বই মুদ্রণ, বাঁধাই, প্রকাশ বা বাজারজাত করা যাবে না। এই বিধান লঙ্ঘন করলে অনূর্ধ্ব তিন বছর কারাদণ্ড বা পাঁচ লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ড হবে। কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বা শিক্ষক শিক্ষার্থীদের নোট বই, গাইড বই কেনা বা পাঠে বাধ্য করলে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে।

শিক্ষা আইন ২০১৯-এর খসড়ার ৯ ধারার ২(ক) উপধারায় বলা হয়েছে, সরকার নির্ধারণ বা পুনর্নির্ধারণ না করা পর্যন্ত ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত হবে মাধ্যমিক স্তর। (খ) উপধারায় বলা হয়েছে, একাদশ থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত উচ্চ মাধ্যমিক স্তর। অথচ জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০-এর ৫ নম্বর পৃষ্ঠায় প্রাক-প্রাথমিক ও প্রাথমিক শিক্ষা প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, প্রাথমিক শিক্ষার মেয়াদ পাঁচ বছর থেকে বৃদ্ধি করে আট বছর অর্থাৎ অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত চালু করার পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। ১২ নম্বর পৃষ্ঠায় মাধ্যমিক শিক্ষা প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, নতুন শিক্ষাকাঠামোয় নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত মাধ্যমিক শিক্ষা স্তর হিসেবে বিবেচিত হবে।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, শিক্ষা আইনের খসড়া যেভাবে আছে সেটা পাস হলে তা হবে জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০-এর সঙ্গে সাংঘর্ষিক। বিশ্বের বেশির ভাগ দেশেই প্রাথমিক শিক্ষা অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত। আর সে লক্ষ্যেই সবার সম্মতিতে শিক্ষানীতিতে তা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল।

খসড়া আইনের ২৬ ধারার ৪ উপধারায় বলা হয়েছে, সরকারের অনুমতিপ্রাপ্ত নতুন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্থাপন ও পরিচালনার জন্য নিবন্ধন বাধ্যতামূলক হবে। বিদেশি পাঠক্রমে পরিচালিত স্কুল, কিন্ডারগার্টেন, মাদরাসা পরিচালনায়ও একই শর্ত প্রযোজ্য হবে। তবে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, বাংলাদেশে প্রায় অর্ধলাখ কিন্ডারগার্টেন আছে, যাতে কয়েক লাখ শিশু পড়ালেখা করছে। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চেয়ে সেগুলো বেশি জনপ্রিয়। ওগুলোর কোনো নিবন্ধন নেই। তারা পাঠ্য বই পায়, নিজ স্কুলের নামে পরীক্ষায়ও অংশ নিতে পারে।

আমাদের বাণী ডট কম/২২ ফেব্রুয়ারি ২০২০/রপিএ

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।