ছাড়পত্র (ট্রান্সফার সার্টিফিকেট বা টিসি) ইস্যুর নামে কোটি টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে শিক্ষাবোর্ডগুলোর বিরুদ্ধে। ছাড়পত্র নিতে একজন শিক্ষার্থীকে বোর্ডভেদে গুণতে হচ্ছে ৫০০ থেকে দুই হাজার টাকা পর্যন্ত।

খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, ঢাকা শিক্ষা বোর্ডে টিসি ফি ৭০০ টাকা। কুমিল্লা বোর্ডেও ৭০০। নতুন প্রতিষ্ঠিত ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডে এই ফি ৮০০ টাকা। যশোর ও রাজশাহী বোর্ডে এক হাজার, চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডে এক হাজার ২০০ টাকা, সিলেট বোর্ডে এক হাজার ৫০০ এবং বরিশাল শিক্ষা বোর্ডে এই ফি সবচেয়ে বেশি- দুই হাজার টাকা। টিসি ফির সঙ্গে সংশ্নিষ্ট শিক্ষার্থীকে আবার টিসির জন্য ব্যাংক ড্রাফট করতে হয়। সেখানে আরও ৫৮ টাকা ব্যাংক চার্জ দিতে হয়।

আবার একই বোর্ডে দুই ধরনের টিসি ফি রয়েছে। চট্টগ্রাম বোর্ডে ইন্টারনাল টিসি ফি (একই বোর্ডের আওতাধীন অন্য কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি হতে চাইলে) এক হাজার টাকা নেওয়া হলেও বোর্ড ট্রান্সফার বা বিটিসি (অন্য বোর্ডের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে) ফি এক হাজার ২০০ টাকা।

শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের অভিযোগ, ছাড়পত্র দেয়ার নামে রমরমা বাণিজ্য ফেঁদে বসেছে দেশের শিক্ষা বোর্ডগুলো। বিভিন্ন স্তরের শিক্ষার্থীদের ছাড়পত্র ইস্যুর নামে বোর্ডগুলো কোটি কোটি টাকা আয় করছে। তারা বলছেন, শিক্ষা বোর্ড তো কোনো ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নয়; তবু কেন সেখানে কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা শিক্ষার্থীদের থেকে আদায় করা হবে?

অন্যদিকে বোর্ডগুলো বলছে, খরচ নির্বাহ করার জন্যই ফি নিতে হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মু. জিয়াউল কবির মনে করেন, সব শিক্ষা বোর্ডের আর্থিক সংগতি এক রকমের নয়। নতুন বোর্ডগুলোয় আয় কম। তাই তাদের বিভিন্ন ফির হার একটু বেশি। তিনি জানান, পরীক্ষার ফি ছাড়া বাকি সব ফি বোর্ডভেদে ভিন্ন ভিন্ন অঙ্কের।

টিসি ফি গ্রহণে সর্বশীর্ষে থাকা বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. ইউনুস যুক্তি দেখিয়ে বলেন, ‘আমার বোর্ডে শিক্ষার্থীর সংখ্যা অন্য সব বোর্ডের চেয়ে কম। আয়ও কম। সব খরচ বোর্ডের আয় থেকেই নির্বাহ করা হয়ে থাকে। বোর্ডের অর্থ কমিটির সিদ্ধান্ত অনুসারেই সব ফি নির্ধারণ করা হয়। এটি চেয়ারম্যানের একক কোনো সিদ্ধান্ত নয়। আর আমার বোর্ডের আর্থিক অবস্থা খুবই খারাপ।’

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।