ঝিনাইদহের শৈলকুপার মুক্তিযোদ্ধারা সোমবার আবাইপুর ট্রাজেডী দিবস পালন করেছেন। ’৭১ এর ১৪ অক্টোবর ভোরে পাকসেনাদের সাথে মুখোমুখি যুদ্ধে ১৮ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। দেশ স্বাধীনের পর থেকে মুক্তিযোদ্ধারা শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে দিনটি পালন করে আসছেন। সোমবার সকালে আবাইপুরে মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণে নির্মিত স্মৃতি ফলকে পুষ্পস্তবক অর্পন করেন মুক্তিযোদ্ধাগন। এরপর আবাইপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হেলাল উদ্দিন বিশ্বাস এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন শৈলকুপা উপজেলা চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন শিকদার।

আলোচনায় অংশ নেন মুক্তিযোদ্ধা রহমত আলি মন্টু, মনোয়ার হোসেন মালিতা, বিশ্বাস লুৎফর রহমান, রইচ উদ্দিন, হাজী ওয়াজেদ আলি, লুৎফর রহমান টুলু প্রমুখ। পরে শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে দোয়া মাহফিল আনুষ্ঠিত হয়। মুক্তিযুদ্ধের শুরুতে শৈলকুপায় মুক্তিযোদ্ধারা শক্ত অবস্থান গড়ে তোলেন।

তারা পাক বাহিনী বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্থানে কখনো চোরাগোপ্তা, কখনো সামনা সামনি আক্রমন চালাতে থাকে। বাগুটিয়া, ভবানীপুর ও নাগিরাটে মুক্তিযোদ্ধারা ক্যাম্প স্থাপন করেন। ১৪ অক্টোবর সকালে মুক্তিযোদ্ধারা খবর পান পার্শবর্তী মাগুরা জেলায় শ্রীপুরে পাক সেনা অবস্থান নিয়েছে। সিদ্ধান্ত নেন পাক বাহিনীকে প্রতিহত করার। ১৯৭১ সালের ১৪ অক্টোবর ভোর রাতে পাক বাহিনী মুক্তিযোদ্ধাদের অবস্থান ৩ দিক থেকে ঘিরে ফেলে। তারা ভারি অস্ত্র দিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের উপর ব্যাপক গুলি বর্ষণ শুরু করে। মুক্তিযোদ্ধাগনও পাল্টা আক্রমন শুরু করে। দু পক্ষের মধ্যে যুদ্ধ চলতে থাকে। এই যুদ্ধে ১৩ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। ওই সময় মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে এক পাক লেফট্যানেন্ট নিহত হয়। পাকি বাহিনী যুদ্ধবন্দী ৫ জন মুক্তিযোদ্ধাকে সঙ্গে করে এনে শৈলকুপা ব্রীজের পাশে নির্মম ভাবে পিটিয়ে হত্যার পর নদীর দক্ষিণ পাশে গনকবর দেয় হয়।

আবাইপুর ইউনিয়ন পরিষদের সামনে স্মৃতি ফলকে শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের নাম লেখা আছে। তারা হলেন, নজরুল ইসলাম, আবুল হোসেন, আবু জাফর, চেতন জোয়ার্দ্দার, ইউসুফ আলি, আলি মুদ্দিন, সিমার, আবু সুফিয়ান, সিরাজুল ইসলাম, কাশেম আলি, আজিবর রহমান, শাহাদাৎ হোসেন, বাবর আলি, মকছেদ আলি, শহীদুল ইসলাম, রুস্তম আলি ও সৈয়দ আলি।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।