ঝিনাইদহের শৈলকুপায় স্মার্ট কার্ড বিতরনের সময় ইউপি সদস্যের নেতৃত্বে বহিরাগতরা হামলা চালিয়েছে। এতে নারী কর্মী সহ ৫ ডাটা এন্ট্রী অপারেটর গুরুত্বর আহত হয়েছে । পুলিশ গিয়ে আহতদের উদ্ধার করেছে । আহতদের শৈলকুপা ও ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। হামলায় ল্যাপটপ সহ গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র ছিনতায়-ভাংচুর করা হয়েছে। এ ঘটনায় স্থগিত করা হয়েছে স্মার্ট কার্ড বিতরণ কার্যক্রম।

সোমবার সকাল ১০টার দিকে গাড়াগঞ্জ বালিকা বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।

শৈলকুপা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, শৈলকুপার ১৩ নং উমেদপুর ইউনিয়নের স্মার্ট কার্ড বিতরণের সোমবার শেষ দিন। ৪ হাজার ৭’শত স্মার্ট কার্ড বিতরণ কার্যক্রম চলছে ইউনিয়নটিতে। ইউনিয়নের গাড়াখোলা, গাড়াগঞ্জ, মধুপুর, মহেশপুর, বারইপাড়া সহ কয়েকটি গ্রামের ভোটাররা স্মার্ট কার্ড নিতে সোমবার সকালে গাড়াগঞ্জ বালিকা বিদ্যালয় কেন্দ্রে আসে। এ সময় ইউনিয়নটির বারইপাড়া গ্রামের ইউপি সদস্য স্বপন নারীদের লাইনে পুরুষ ঢোকানোর চেষ্টা করে বলে অপারেটররা অভিযোগ করে। এছাড়া পূর্বের হারিয়ে যাওয়া ও ডুপ্লিকেট কার্ডের বিপরীতে নির্বাচন কমিশন কর্তৃক ধার্যকৃত ৩’শ৬৮ টাকা ফী না দিয়ে ইউপি সদস্য স্বপন তার কিছু পরিচিত লোকদের ফ্রী স্মার্ট কার্ড নেয়ার চেষ্টা করে। এতে বাঁধা দিলে স্বপন ও তার লোকজন হামলা চালায় ডাটা এন্ট্রী অপারেটরদের উপর। এতে গুরুত্বর আহত হয় স্মার্ট জাতীয় পরিচয় পাত্র বিতরণ প্রকল্পের খন্ডকালীন নারী ডাটা এন্ট্রী অপারেটর নাসরিন আক্তার, ডাটা এন্ট্রী অপারেটর মো: আবু আব্দুল্লাহ, টেকনিক্যাল সাপোর্ট অপারেটর ইসমাইল হোসেন, ডাটা এন্ট্রী অপারেটর রুবায়েত ও মাজেদুল ইসলাম। হামলার খবর পেয়ে শৈলকুপা থানা থেকে পুলিশ গিয়ে তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। আহত ইসমাইল কে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছে। হামলাকারীরা নির্বাচন অফিসের কাজে ব্যবহৃত ল্যাপটপ ভাংচুর করে এবং অফিসিয়াল কাগজপত্র ছিড়ে ফেলে ।

হামলায় আহত অপারেটর নাসরিন আক্তার ও অন্যান্য আহত কর্মীরা জানান, নারীদের স্মার্ট কার্ড দেয়ার লাইনে পুরুষ ঢুকিয়ে দেয় ইউপি সদস্য স্বপন। এতে বাঁধা দিলে হামলা চালায়। এছাড়া ফি না দিয়ে স্মার্ট কার্ড নেয়ার চেষ্টা করে। এমন ঘটনায় স্মার্ট কার্ড নিতে আসা ভোটারদের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত ইউপি স্বপনের সাথে যোগাযেগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। এই হামলার পর শৈলকুপা উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা স্মার্ট কার্ড বিরতণ কার্যক্রম বন্ধ ঘোষনা করেন।

উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মশিউর রহমান জানান, লাইনে দাঁড়ানো ও অনিয়মের প্রতিবাদ করায় হামলা চালানো হয়েছে। তিনি বলেন ঘটনাটি নির্বাচন কমিশন কে জানানো হয়েছে। তাদের নির্দেশনা পেলে মামলা সহ পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে। থানা পুলিশ বিষয়টি নিয়ে অবগত বলে জানান তিনি।

শৈলকুপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বজলুর রহমান জানান, নির্বাচন কর্মকর্তা থানায় এসেছিল তবে উপজেলা পরিষদে বসে তারা সিদ্ধান্ত নিবে। তিনি জানান, পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে আহতদের উদ্ধার করেছে। এছাড়া অভিযুক্ত ইউপি সদস্য স্বপনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আনা হয়েছে।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।