ঝিনাইদহের শৈলকুপায় ঐহিত্যবাহী পাইলট বালিকা বিদ্যালয়ে শিক্ষকদের কর্মবিরতি অব্যাহত রয়েছে। মামলা প্রত্যাহার, কর্মচারী মারধরের ন্যায় বিচারসহ নানা অনিয়ম দূর্নীতির অভিযোগে গত ১৫ নভেম্বর থেকে সাধারণ শিক্ষকগণ এর কর্মবিরতি পালন করছেন। ফলে চলমান বার্ষিক পরীক্ষা ব্যবস্থাপনা ঝুঁকির মুখে পড়েছে। সচেতন অভিভাবকদের আশঙ্ক স্কুল শিক্ষকদের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের কবলে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ায় প্রভাব পড়তে পারে।

সরেজমিন ঘুরে জানা যায়, বুধবার ২০১৯ সালের মাধ্যমিক পর্যায়ের বার্ষিক পরীক্ষা শুরু হয়েছে। শৈলকুপা পাইলট বালিকা বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক দিলারা ইয়াসমিন জোয়ার্দ্দার নিয়োগপ্রাপ্তির পর থেকেই শিক্ষকদের মাঝে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ দ্বন্দ্ববিবাদের নেপথ্যে প্রধান শিক্ষক দিলারা জোয়ার্দ্দার একটি শ্লীলতাহানির অভিযোগে একাধিক শিক্ষকের নামে মামলা করেন।

সহকারি প্রধান শিক্ষক ফজলুর রহমানসহ অন্তত ২৮ শিক্ষক প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অর্থআত্মসাৎ, কর্মচারী মারপিট ও কারন অকারনে শিক্ষকদের সাথে দূর্ব্যবহারের অভিযোগের ন্যায়বিচার পেতেই কর্মবিরতি চালাচ্ছেন। স্কুলের শিক্ষক কর্মচারীসহ ৪১ জনের মধ্যে সিংহভাগ কর্মবিরতিতে অংশ নিয়েছে। ১২টি কক্ষে ৯ জন শিক্ষক ও ৩ জন তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারী দিয়ে পরীক্ষা সম্পন্ন হতে দেখা গেছে।

বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের এক সদস্য জানান, এভাবে হযবরল অবস্থায় পরীক্ষা চলতে থাকলে শেষ পর্যন্ত কি হবে বলা দুস্কর, তিনি অভিযোগ করেন- প্রধান শিক্ষক ৩য় শ্রেণীর কর্মচারী দিয়ে পরিক্ষা হলে ডিউটি করাচ্ছেন যা নিয়মবহির্ভূত। অচল এ অবস্থা চলতে থাকলে অদূর ভবিষ্যতে বিদ্যালয়টির শিক্ষা ব্যবস্থা চরম ঝুঁকিতে পড়বে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

শৈলকুপা পাবলিক লাইব্রেরি সাধারণ সম্পাদক স্বপন বাগচি বলেন, শিক্ষকদের দ্বন্দ্বের জের ধরে বহু পুরাতন স্কুলটি আজ ঐতিহ্য হারাতে বসেছে। সহ¯্রাধিক কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যতের কথা ভেবে স্কুলের আভ্যন্তরীণ সমস্যা সমাধান অতীব জরুরী, হামলা, মামলা অভিযোগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য শুভকর নয়।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শামীম আহম্মেদ খান বলেন, বার্ষিক পরীক্ষা চলাকালীন সাধারণ শিক্ষকদের কর্মবিরতি দূঃখজনক, তবে দাবিদাবা নিয়ে বিবাদমান জটিল এ সমস্যা শুধুমাত্র পরিচালনা পরিষদই সমাধান করতে পারেন তাদেরকে অবহিত করা হয়েছে। তিনি জানান, ১২টি কক্ষের জন্য অন্তত ২৪ শিক্ষকের দায়িত্বে থাকা প্রয়োজন।

প্রধান শিক্ষক দিলারা ইয়াসমিন জোয়ার্দ্দার বেশিরভাগ শিক্ষকের কর্মবিরতির সত্যতা স্বীকার করে বলেন, বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদ আভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের সমস্যা সমাধান করবেন। সাময়িক সমস্যা হলেও বাকি শিক্ষকদের নিয়ে একভাবে পরীক্ষার কাজ সম্পন্ন করছেন। তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ ভূয়া ভিত্তিহীন ও ষড়যন্ত্রমূলক বলেও দাবি করেন। এছাড়াও একটি রাজনৈতিক মহল নেপথ্য উস্কানি দিয়ে শিক্ষাব্যবস্থা ধ্বংসের পায়তাড়া চালাচ্ছেন যা রীতিমত ভয়ঙ্কর বলেও তিনি মন্তব্য করেছেন।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।