মাগুরার শ্রীপুর সরকারি ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ নির্মল কুমার সাহার বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতসহ নানাা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে এলাকার সচেতন মহল। তিনি সরকারি জায়গার গাছ বিক্রি ও দোকান ঘর হস্থান্তর করে প্রায় দেড় কোটি টাকা আত্মসাত করেছেন মর্মে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

লিখিত অভিযোগে জানা যায়, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় ও গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর, কর্তৃক জারিকৃত শ্রীপুর ডিগ্রি কলেজ জাতীয় করণের লক্ষ্যে নিয়োগ, স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ হস্থান্তর ও অর্থ ব্যয়ের ওপর নিষেধাজ্ঞা আদেশ জারি করেন। ২০১৬ সালের ২৮ আগষ্ট নিষেধাজ্ঞার পরে শ্রীপুর ডিগ্রী কলেজ মার্কেটের ৩০ টির অধিক দোকান ঘর অধ্যক্ষ নির্মাল কুমার সাহার স্বাক্ষরিত চুক্তি পত্রে হস্তান্তর করেন।

প্রমাণ  হিসেবে ২টি দোকান হস্থান্তরের চুক্তি পত্রে দেখা যায়, একটির থেকে ৩ লাখ ৪৬ হাজার টাকা, অপর একটি দোকান ঘর বাবদ ৪ লাখ টাকা গ্রহন করে ২০১৭ সালের ৩০ এপ্রিল তারিখে হস্থান্তর করেন। দোকান ঘর বরাদ্ধ দিয়ে তিনি ১ কোটির অধিক টাকা অবৈধভাবে উপার্জন করেছেন। এছাড়াও আশির দশকে রোপন কৃত ৭০টির অধিক সেগুন, মেহগনি ও শিশু গাছ ৪৫ লক্ষাধিক টাকায় বিক্রয় করেছেন মর্মে অভিযোগ রয়েছে। তিনি অবসর প্রাপ্ত ৩ জন শিক্ষকের বকেয়া বেতনের ১৫ লাখ ৯৯ হাজার টাকা বারবার আবেদন করার পরও প্রদান না করায় অর্থ অভাবে উক্ত শিক্ষকগন মানবেতর জীবন যাপন করছেন। জানা গেছে, মারিয়া কিবতি নামের এক শিক্ষককে শ্রীপুর ডিগ্রী কলেজে হিসাবে বিজ্ঞান বিভাগে প্রভাষক পদে চাকরি দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে অধ্যক্ষ নির্মল কুমার সাহা ৪ লাখ টাকা ঘুষ গ্রহন করেন। চাকরি না দেয়ায় ফলে উক্ত টাকা ফেরত পাওয়ার জন্য মাগুরা বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট-১ আমলী আদালতে বিপ্লব হোসেন বাদি হয়ে মামলা দায়ের করেন। মাগুরা সি,আর ৬০০/১২ নং মামলায় মাগুরা জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট-২(ভার:) তদন্ত কর্মকর্তার প্রতিবেদন অনুযায়ী অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া যায় মর্মে উল্লেখ করেন।

অভিযোগে আরোও জানা গেছে, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি অনুযায়ী ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ পদে নিয়োগের জন্য কোন প্রার্থীর শিক্ষা জীবনে তৃতীয় বিভাগ গ্রহনযোগ্য নয়। কিন্তু নির্মল কুমার সাহা ডিগ্রী পাশ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে তেঁজগাও কলেজ হতে ১৯৮৭ সালে স্নাতক (পাশ) ৩য় বিভাগে উর্ত্তীন হয়েছেন। নির্মল কুমার সাহার জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ও সরকারি বিধি অনুযায়ী ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ পদে নিয়োগের শিক্ষাগত যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা কোনটাই পূরণ হয়নি। ইতিপূর্বে তিনি নহাটা কলেজিয়েট গার্লস স্কুলে অধ্যক্ষ পদে নিয়োগও বিধি বর্হিভূত ছিল। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জারিকৃত ১৯৯৫ সালে ২৪ অক্টোবর তারিখের শা: ১১/বিবিধ ৫/৯৪(অংশ-৬)/৩৯৫নং স্মারকে কাঠামো বিধি অনুযায়ী উচ্চ মাধ্যমিক মহাবিদ্যালয়ে অধ্যক্ষ নিয়োগের শিক্ষাগত যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা দ্বিতীয় শ্রেনি অনার্সসহ দ্বিতীয় শ্রেনির স্নাতকোত্তর ডিগ্রি এবং সকল পরীক্ষায় দ্বিতীয় বিভাগ থাকতে হবে অথবা প্রথম শ্রেনীর স্নাতকোত্তর ডিগ্রিসহ সকল পরিক্ষায় দ্বিতীয় বিভাগ ও সহকারি অধ্যাপক পদে মহাবিদ্যালয়ে ৫ বছরের অভিজ্ঞাসহ মোট ১২ বছরের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে যার কোনটি তার নেই। এছাড়াও আদালত ও শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে অধ্যক্ষ ওই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে কোচিংয়ের নামে টাকা আদায় করছে বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এ ব্যাপারে অধ্যক্ষ নির্মল কুমার সাহার সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি জানান, কতিপয় ব্যক্তি উদ্দেশ্যমুলকভাবে তার বিরুদ্ধে এ সকল অভিযোগ তুলেছে। যা আদৌ সত্য না।

আমাদের বাণী-আ.আ.হ/মৃধা

[wpdevart_like_box profile_id=”https://www.facebook.com/amaderbanicom-284130558933259/” connections=”show” width=”300″ height=”550″ header=”small” cover_photo=”show” locale=”en_US”]

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।