সুজন ভট্টাচার্য্য, ব্যুরো প্রধান চট্টগ্রাম সংবাদদাতা;  ‘জীবে প্রেম করে যেই জন সেই জন সেবিছে ঈশ্বর” এই মন্ত্রে উজ্জ্বীবিত হয়ে মানবতার সেবায় দিনরাত ছুটে চলেছেন তরুণ।নাম তার আসিফ আকবর। তিনি বান্দরবান সদর উপজেলা যুবলীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক।

গত ২৪ মার্চ থেকে ৫ এপ্রিল পর্যন্ত ৮২০ জন গরীব, অসহায় ও কর্মহীন হয়ে পড়া মানুষ কে মানবিক সহায়তা হিসেবে নিত্য প্রয়োজনীয় উপহার সামগ্রী পৌছেঁ দিয়েছেন তিনি।বান্দরবান জেলা শহরে ব্যাক্তিগত উদ্দ্যেগে প্রথম ব্যাক্তি হিসেবে মানবিক সহায়তা নিয়ে এগিয়ে এসেছিলেন এই আসিফ আকবর নামের তরুণ।

বান্দরবান সদর উপজেলা যুবলীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক
ছবি; সংগৃহীত

আসিফ জানান করোনাভাইরাস এর প্রার্দূরভাব এর কারণে গত ২৩ শে মার্চ রাতে বান্দরবান শহরের সমস্ত খাবার হোটেল গুলো যখন গুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়।সেই সময় একজন অসহায় মানুষের দু মুঠো ভাতের জন্য হাহাকার তাকে বিষণ ভাবে নাড়া দেয়।সেই লোকটির আর্তনাদে চোখে জল আসে তার।ক্ষুধার্ত লোকটা কে খাবার কিনে দেওয়ার পর তিনি বড় পরিসরে মানবতার সেবা করার জন্য দৃঢ় ভাবে প্রতীজ্ঞাবদ্ধ করেন নিজেকে।

যেই কথা সেই কাজ, পরদিন ২৪ মার্চ ১ শ টি হত দরিদ্র ও কর্মহীন পরিবারের মাঝে মানবিক উপহার পৌছেঁ দেন তিনি।চলার পথে আসিফ আকবরের সংঙ্গী হয় রানা চৌধুরী নামে একজন মানবপ্রেমী।

বান্দরবান সদর উপজেলা যুবলীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক
ছবি; সংগৃহীত

এই দিকে আসিফ আকবর যখন মানুষের বাড়িতে,রাস্তায়,বিভিন্ন অলিগলিতে বান্দরবানের মানুষের সেবায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন ঢাকায় তখন তার সন্তান সম্ভবা স্ত্রী শারীরিক অসুস্থতা নিয়ে আজিমপুর মাতৃসদন হাসপাতালে ভর্তি।

একদিকে না খেতে পারা মানুষের হাহাকার অন্যদিকে সন্তান সম্ভবা স্ত্রী হাসপাতালে।দোটানায় পড়ে গিয়ে অসহায় বোধ করেন।স্বামীর এমন অবস্থা বুঝতে পেরে আসিফ আকবর এর সহধর্মীনি নিজেই তাকে এই বলে আশ্বস্ত করেন, আমার কিছু হবে না তুমি মানবতার সেবায় যেভাবে কাজ করছো তাদের দোয়ায় আমি এবং আমাদের অনাগত সন্তান সুস্থ এবং ভালো থাকবো।

স্ত্রী র অনুপ্রেরণায় নতুন করে উজ্জ্বীবিত হয়ে এবার দিনরাত মানুষের সেবা করার কাজে মনোনিবেশ করেন আসিফ।

বান্দরবান সদরের ৯ টি ওয়ার্ড ও প্রতিটি পাড়া মহল্লায় ঘুরে ঘুরে মানবতার সেবায় মানবিক সহায়তা হিসেবে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস পত্র তুলে দেওয়া, নগদ টাকা প্রদান সহ নানা কৌশলে মানুষের কল্যাণে কাজ করা শুরু করেন তিনি।সব সময়ের মতো ছায়া সঙ্গী হিসেবে ছিলেন যুবলীগ নেতা রানা চৌধুরী।

তিনি আরো বলেন পার্বত্য মন্ত্রী এর একান্ত সহকারী (এপিএস) ও জেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগ সভাপতি সাদেক হোসেন চৌধুরীর অনুপ্রেরণা ও সার্বিক সহায়তা পেয়ে কাজের পরিধি আরো বিস্তৃত করার মানসে ছুটে যায় বান্দরবান সদর উপজেলার ২নং কুহালং ইউনিয়ন এর বিভিন্ন ওয়ার্ড,বটতলী পাড়া,ডলুপাডা,দলবনিয়া পাড়া,বটতলী চেয়ারম্যান পাড়া সহ বিভিন্ন এলাকায় চাল, ডাল,তৈল,মরিচ,আলু,লবণ,সাবান,কাঁচা তরকারী সহ নিত্য প্রয়োজনীয় উপহার সামগ্রী নিয়ে।

ইতিমধ্যে আসিফ এবং রানার এই মানবিক কাজের খবর জানতে পারেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি।তিনি এই দুজন মানবতাবাদী মানুষ কে ডেকে নেন তার নিজ বাস ভবনে। ভূয়সী প্রশংসা করেন তাদের মানবিক কর্মকান্ডের।

আফিস বলেন বান্দরবানের অভিভাবকের কাছ থেকে আশির্বাদ পেয়ে নিজেকে সেদিন কিছুটা হলে ও সফল মনে হয়েছিলো।সেই সাথে দায়িত্ববোধ টা ও বেড়ে গেলো বহু গুণ।

সব শেষে আসিফ জানান গতকাল ৮ এপ্রিল আমি একটি পুত্র সন্তানের পিতা হয়েছি কিন্তু এখনো আমার ছেলেটি কে একবার কোলে নিয়ে আদর করার সুযোগ আমার হয়নি।তারপর ও মানুষের দোয়ায় আমার ছেলে এবং স্ত্রী সুস্থ আছেন বলে মুঠোফোনে জানতে পেরেছি।

আপনারা আমার ছেলের জন্য দোয়া করবেন।আমি আপনাদের সেবায় কাজ করছি এবং করোনাভাইরাস এর সংকট শেষ না হওয়া পর্যন্ত আমৃত্যু কাজ করে যাবো।

আমাদের বাণী ডট কম/০৯ এপ্রিল ২০২০/এভিপি 

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।