বেতন বৈষম্য নিরসনে পূর্বঘোষিত ১৩ নভেম্বরের পর আন্দোলনের বিষয়ে এখনো অনড় রয়েছেন প্রাথমিক শিক্ষকরা। ১৩ নভেম্বরের মধ্যে দাবি পূরণ না হলে প্রাথমিক সমাপনী ও বার্ষিক পরীক্ষা বর্জন করবেন তারা।

এদিকে চলমান পরিস্থিতিতে ৮ নভেম্বর (শুক্রবার) জরুরি বৈঠক ডেকেছে বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক ঐক্য পরিষদ। দাবির বিষয় নিয়ে বৃহস্পতিবার প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিবের সাথে বৈঠক হওয়ার কথাও রয়েছে। একজন শিক্ষক নেতা বিষয়টি নিশ্চিত করলেও আরেকজন শিক্ষক নেতা  জানিয়েছেন বৈঠকের বিষয়টি এখনো নিশ্চিত নয়।

এদিকে আন্দোলনরত প্রাথমিক শিক্ষকরা সমাপনী পরীক্ষা গ্রহণে অস্বীকার করলে এ পরীক্ষা নিবেন মাধ্যমিকের শিক্ষকরা। মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) অধিদপ্তর থেকে সব জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে এক চিঠিতে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে প্রাথমিক শিক্ষকদের মধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। তারা বলছেন,প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা বর্জনের পর বার্ষিক পরীক্ষাও বর্জন করা হবে। পুলিশ বা মাধ্যমিকের শিক্ষক দিয়ে পরীক্ষা নেয়া এবং পরবর্তীতে খাতা দেখা ফল প্রস্তুত এবং ঘোষণা করা প্রাথমিকের শিক্ষক ছাড়া করা অসম্ভব হবে। বিষয়টি আলোচনার জন্য শুক্রবার ঢাকায় জরুরি বৈঠক ডাকা হয়েছে। বৈঠকে প্রতিটি জেলা থেকে ঐক্য পরিষদের ৩ জন প্রতিনিধিকে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে।

বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক ঐক্য পরিষদের সদস্যসচিব মোহাম্মদ শামছুদ্দীন মাসুদ বুধবার (৬ নভেম্বর) দুপুরে  জানান, দাবি আদায়ে ১৩ নভেম্বরের পর প্রাথমিক সমাপনী ও বার্ষিক পরীক্ষা বর্জনের পূর্ব ঘোষিত আন্দোলন অব্যাহত রাখতে শিক্ষকরা অনড় আছেন। আগামী শুক্রবার ঐক্য পরিষদের জরুরি বৈঠক ডাকা হয়েছে। ওই বৈঠকে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

বৃহস্পতিবার বিকাল ৪ টায় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব আকরাম আল হোসেনের বৈঠক আছে কিনা জানতে চাইলে শামছুদ্দীন মাসুদ বলেন, বৈঠকের বিষয়টি এখনো নিশ্চিত নয়।

প্রধানমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাত করিয়ে দেয়ার যে প্রতিশ্রুতি গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন দিয়েছিলেন সে ব্যাপারে কোনো অগ্রগতি নেই বলেও তিনি জানান।

এর আগে বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) সকালে বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক ঐক্য পরিষদের প্রধান মুখপাত্র মো. বদরুল আলম জানিয়েছিলেন,বৃহস্পতিবার বিকাল ৪ টায় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব আকরাম আল হোসেনের সাথে আমাদের বৈঠক আছে। আশা করি এই বৈঠকে একটা সমাধান আসবে।

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের জন্য দশম গ্রেড এবং সহকারী শিক্ষকদের জন্য ১১তম গ্রেডের ঘোষণা ২০১৭ সালে দেওয়া হয়েছিল। এখন পর্যন্ত সেই ঘোষণা বাস্তবায়ন হয়নি। বর্তমানে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সহকারী শিক্ষকেরা ১৪তম গ্রেডে ও প্রশিক্ষণবিহীন শিক্ষকেরা ১৫তম গ্রেডে বেতন পান। আর প্রশিক্ষণ পাওয়া প্রধান শিক্ষকেরা ১১তম গ্রেডে এবং প্রশিক্ষণবিহীন প্রধান শিক্ষকেরা ১২তম গ্রেডে বেতন পান।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।