নিজস্ব সংবাদদাতা, ঢাকা; সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৬৪ হাজারের বেশি দপ্তরি কাম প্রহরী পদটি সরকারিকরণ বা রাজস্বখাতে সৃজনের প্রস্তাব নাকচ করে দিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। দপ্তরি কাম প্রহরী পদটি আউটসোর্সিংয় প্রক্রিয়ায় সেবাগ্রহণ নীতিমালায় তফসিলভুক্ত হওয়ায় পদটি রাজস্বখাতে সৃজনের সুযোগ নেই বলে ছাফ জানিয়ে দিয়েছে জনপ্রশাসন ।

গতবছর ৬৪ হাজার ৮৪৩টি দপ্তরি কাম প্রহরীর পদ রাজস্বখাতে সৃজনের প্রস্তাব জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছিল প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।দপ্তরি কাম প্রহরী পদটি রাজস্বখাতে সৃজনের প্রস্তাব নাকচ করে গত ২৩ ফেব্রুয়ারি প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। চিঠিতে বলা হয়, দপ্তরি কাম প্রহরী পদটি আউটসোর্সিংয় প্রক্রিয়ায় সেবাগ্রহণ নীতিমালায় তফসিলভুক্ত হওয়ায় পদটি রাজস্বখাতে সৃজনের সুযোগ নেই।

এদিকে রাজস্বখাতে পদ সৃজনের প্রস্তাব নাকচ করায় ক্ষুব্ধ দপ্তরীরা। পদটি রাজস্বখাতে স্থানান্তরের দাবিতে আগামী ৯ মার্চ জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দিয়েছেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় দপ্তরি কাম প্রহরী সমিতির নেতারা। এদিন সকালে সংবাদ সম্মেলন করে সমিতির পক্ষ থেকে দাবি দাওয়া গণমাধ্যমকে জানানো হবে। সংগঠনের সভাপতি মামুন সরদার ও সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

জানা গেছে, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দপ্তরি কাম প্রহরী পদে বর্তমানে আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে জনবল নিয়োগ হয়। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে নিয়োজিত এ পদে কর্মরতরা। আর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কর্মরত দপ্তরিরা দীর্ঘদিন ধরে তাদের পদটি রাজস্বখাতে স্থানান্তরের দাবিতে আন্দোলন করছেন।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, বর্তমানে সারাদেশে ৬৫ হাজার ৫২৭টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এসব বিদ্যালয়ের ভবন, স্থাপনা মেশিনারিজ, মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর, ল্যাপটপ ইত্যাদি রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করেন দপ্তরি কাম প্রহরীরা। এদের মধ্যে ৬৮৮টি পদ ইতোমধ্যেই রাজস্বখাতে সৃজিত হয়েছে। আর ৩৬ হাজার ৯৮৮ টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরি কাম প্রহরী পদ আউট সোর্সিংয়ের মাধ্যমে সৃজিত হয়েছে। পদ সৃজন না-হওয়া অবশিষ্ট ২৭ হাজার ৮৪৫ টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরি কাম প্রহরির পদসহ মোট ৬৪ হাজার ৮৪৩টি পদ রাজস্বখাতে সৃজনের প্রস্তাব জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছিল প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।

গত ৬ অক্টোবর গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপসচিব ড. মো. মাহবুবুর রশীদ স্বাক্ষরিত চিঠিটি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছিল। চিঠিতে বলা হয়, প্রস্তাবিত দপ্তরি কাম প্রহরী পদটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য জরুরি। ইতোমধ্যে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ থেকে আউটসোর্সিংয়ের প্রক্রিয়ায় সেবাগ্রহণ নীতিমালা-২০১৮ জারি করা হয়েছে। সে নীতিমালায় ১২টি সেবা আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে গ্রহণ করা যাবে বলে নির্ধারিত হয়েছে। কিন্তু নীতিমালায় দপ্তরি কাম প্রহরী সেবা আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে গ্রহণ করা যাবে বলে নির্ধারিত হয়নি। তাই দপ্তরি কাম প্রহরী পদটি রাজস্বখাতে সৃজন করা প্রয়োজন।

গত ১৬ সেপ্টেম্বর আউটসোর্সিয়ের মাধ্যমে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দপ্তরি কাম প্রহরী পদে জনবল সংগ্রহের নীতিমালা-২০১৯ জারি করে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। এতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দপ্তরি কাম প্রহরী পদে তিন বছরের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেয়ার কথা বলা হয়। বর্তমানে নিয়োগপ্রাপ্ত দপ্তরি কাম প্রহরীদের পদটি রাজস্বখাতে অন্তর্ভুক্তকরণ, আইনানুযায়ী কর্মঘণ্টা নির্ধারণ, বেতন বৈষম্য নিরসন এবং সাপ্তাহিক ছুটির দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন। নতুন নীতিমালায় বর্তমানে কর্মরত দপ্তরিদের দাবি বাস্তবায়ন হয়নি।

আমাদের বাণী ডট কম/০১ মার্চ ২০২০/জিএমএন 

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।