আশরাফুল ইসলাম, গাইবান্ধা জেলা সংবাদদাতাঃ গাইবান্ধা জেলার সাদুল্লাপুরের ১১নং খোর্দ্দকোমরপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাময়িক বরখাস্ত হওয়া চেয়ারম্যান আরিফুর রহমান চৌধুরী শামীমকে কারণ দর্শানোর (শোকজ) নোটিশ দেয়া হলেও তিনি কোন জবাব দেননি। শোকজ নোটিশে ‘কেন তাকে চুড়ান্ত ভাবে বরখাস্ত করা হবে না’ তার জবাব দাখিলে ১০ কার্যদিবস সময় দেয়া হয়। কিন্তু সেই শোকজের জবাব না দেয়ায় শেষ পর্যন্ত স্বীয় পদ থেকে তিনি চুড়ান্তভাবে বরখাস্ত হতে পারেন। একই সঙ্গে তার বিরুদ্ধে নেওয়া হতে পারে আইনী ব্যবস্থাও।

এরআগে, গত ২৪ জুন স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-সচিব মোহাম্মদ ইফতেখার চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে চেয়ারম্যান আরিফুর রহমানকে সাময়িক বরখাস্তের আদেশ জারি করে। একই সঙ্গে কেন তাকে কেন চূড়ান্তভাবে বরখাস্ত করা হবে না তার জবাব ১০ কার্যদিবসের মধ্যে দাখিল করতে বলা হয়। প্রধানমন্ত্রীর নগদ সহায়তা কর্মসুচিতে স্ত্রী-মেয়ে ছাড়াও আত্মীয়-স্বজনের নাম অর্ন্তভুক্তসহ নানা অনিয়ম এবং সুবিধাভোগীদের কাছে অর্থ হাতিয়ে নেন আরিফুর রহমান ও তার লোকজন। এ নিয়ে গত ৯ জুন সচিত্র প্রতিবেদন প্রচার করে যমুনা টেলিভিশন ও অনলাইন নিউজ পোর্টাল বাংলা ট্রিবিউন। পরে জেলা প্রশাসকের নির্দেশে সরেজমিন তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হয়। গত ১৬ জুন এ সংক্রান্ত তদন্ত প্রতিবেদন স্থানীয় সরকার বিভাগে পাঠায় জেলা প্রশাসক।

যদিও মুঠফোনে অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যান আরিফুর রহমানের দাবি, জবাব দাখিলের জন্য সময় চেয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগে আবেদন করা হয়েছে। তবে কতদিনের ভেতর জবাব দাখিল করবেন তা জানতে চাইলেও মোবাইলে চার্জ নেই বলে ফোন কেটে দেন তিনি।

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক আবদুল মতিন সাংবাদিদের জানান, সাময়িক বরখাস্তকৃত আরিফুর রহমানের পক্ষে কোন ধরণের জবাব পাওয়া যায়নি। তাকে চুড়ান্ত বরখাস্ত ও পরবর্তী ব্যবস্থা নেবে স্থানীয় সরকার বিভাগ। তবে সম্প্রতি তার বিরুদ্ধে উত্থাপিত অনিয়ম-দুর্নীতি ও অর্থ আদায়ের অভিযোগ পুনরায় তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এদিকে, গত চার বছরে নানা অনিয়ম-দুর্নীতি কর্মকান্ড করলেও আরিফুর রহমানের বিরুদ্ধে ভয়ে কেউ মুখ খোলেনি। তবে সাময়িক বরখাস্তের পর অসংখ্য ভুক্তভোগী ও এলাকাবাসী তার নানা অনিয়ম-অপকর্মের বিস্তার অভিযোগ করছেন। এরমধ্যে টিআর, কাবিখা, এলজিএসপি’র উন্নয়ন প্রকল্পে নানা নয়ছয় ও এলাকার মসজিদ, মন্দিরসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে অনুদান ও বরাদ্দের আশ্বাসে মোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন তিনি। শুধু তাই নয়, দুস্থ-অসহায়দের ত্রাণ সহায়তা এবং প্রতিবন্দী-বিধবা ও বয়স্ক ভাতার কার্ডসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধার কথা বলে টাকা হাতিয়ে নেয়ার অসংখ্য ভুক্তভোগী ভুক্তভোগীদের।

এদিকে, অভিযুক্ত আরিফুর রহমান চৌধুরীকে সাময়িক বরখাস্তের পর খোর্দ্দকোমরপুর ইউনিয়নের (ভারপ্রাপ্ত) চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান মো. সাজু মিয়া। তবে অভিযুক্ত আরিফুর রহমানের অনিয়ম-দুর্নীতি কর্মকান্ড সম্পর্কে সাজু মিয়ার কাছে জানতে চাইলেও তিনি কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।