সংযোগ সড়ক ছাড়াই অপরিকল্পিভাবে নির্মাণ করা হয়েছে সেতু। সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলার ভদ্রঘাট ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের গাড়াবাড়ি নদীর ওপর নির্মাণ করা হয় এ সেতু। দুই পাশে সংযোগ সড়ক না থাকায় এলাকাবাসীর কোনো কাজেই আসছে না সেতুটি। এটি এখন এলাকাবাসীর গলার কাটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ কারণে ১৫ গ্রামের প্রায় ২৫ হাজার মানুষের যাতায়াতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। সেতুটি নির্মাণের পর নানা অজুহাতে ৬ মাসেও সংযোগ সড়ক তৈরি করেনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

গাড়াবাড়ি গ্রামের কৃষক মজিবুর রহমান, মঈনুল হক, সোলায়মান হোসেনসহ একাধিক ব্যক্তিরা জানান, গাড়াবাড়ি হাটখোলা ও নলকা-দশসিকা সড়কের পাশে অবস্থিত গাড়াবাড়ি-বড়হর সড়কে প্রায় ৬ মাস আগে ৩০ লাখ টাকা ব্যয়ে ৪০ ফুট দৈর্ঘ্যরে এই সেতুটি কামারখন্দ উপজেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগ নির্মাণ করে। কিন্তু দীর্ঘদিন যাবৎ এর সংযোগ সড়ক নির্মাণ না করায় এই এলাকার ৪টি প্রাইমারি স্কুল, ১টি কলেজ, ১টি মাদ্রাসা, ২টি হাইস্কুলের প্রায় ৩ হাজার শিক্ষার্থীদের ঝুঁকি নিয়ে নৗকায় নদী পার হতে হচ্ছে।

স্থানীয় ভদ্রঘাট ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড সদস্য আবুল কালাম বলেন, সংযোগ সড়ক না থাকায় এলাকাবাসীর যাতায়াতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে এটা সত্য। তবে এটাও সত্য যে এলাকাবাসী মাটি না দেওয়ায় বর্ষার আগে সংযোগ সড়ক নির্মাণ সম্ভব হয়নি। বর্ষার পানি নেমে গেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে ভদ্রঘাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক জানান, এই সেতু ও সংযোগ সড়ক নির্মাণ ইউনিয়ন পরিষদের কাজ নয়। তাই এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না। এ বিষয়ে আমাকে কিছু জানানোও হয়নি। তাই এ বিষয়ে আমি কিছু বলতেও পারব না।

এ বিষয়ে সেতুটির নির্মানের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রাজশাহীর মেসার্স নির্জন এন্টারপ্রাইজের মালিক ঠিকাদার মিলন রহমান বলেন, এলাকাবাসী মাটি না দেওয়ায় বর্ষার আগে কাজটি শেষ করা সম্ভব হয়নি। বর্ষার পানি সরে গেলে সংযোগ সড়কটি নির্মাণ করা হবে।

কামারখন্দ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) আয়শা সিদ্দিকা জানান, এ সেতু নির্মাণ কাজ আমি এখানে যোগদানের আগে হয়েছে। তাই এ বিষয়ে আমি বেশি কিছু বলতে পারব না। তবে যত দূর জানি, কাজ শেষ না হওয়ায় ইউএনও মহোদয় ওই ঠিকাদারের কিছু বিল পেমেন্ট দেননি। কাজ শেষ হওয়ার পর দেবেন। সে হিসেবে বর্ষার পানি সরে গেলে ঠিকাদারের কাজটি করে দেওয়ার কথা রয়েছে। কাজ শেষ হলে তাকে বিল দিয়ে দেওয়া হবে।

তবে কামারখন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম জানান, বর্ষার কারণে মাটি না পাওয়ায় সময় মত কাজটি করা সম্ভব হয়নি। তবে বর্ষার পানি সরে গেলেই সংযোগ সড়কটি নির্মাণ করা হবে। তখন আর এলাকাবাসীর এই দুর্ভোগ থাকবে না।

এ ব্যাপারে কামারখন্দ উপজেলা চেয়ারম্যান এসএম শহিদুল্লাহ সবুজ জানান, বিষয়টি আমার জানা আছে। আমি একাধিকবার ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখেছি। ওখানে বর্ষার পানি থাকায় কাজটি করা সম্ভব হচ্ছে না। পানি সরে গেলে এলাকাবাসীর যাতায়াতের সুবিধার্থে সংযোগ সড়কটি নির্মাণ করে দেওয়া হবে। তখন আর এ সমস্যা থাকবে না এলাকাবাসীর।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।