সৈয়দপুরে চলতি আমন মওসুমে অভ্যন্তরীণ ধান সংগ্রহ ২০১৯-২০২০ অভিযান শুরু হয়েছে। স্থানীয় খাদ্য বিভাগ কৃষকদের কাছ থেকে ধান ক্রয়ের মাধ্যমে ওই অভিযান শুরু করে। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সৈয়দপুরে লটারীতে নির্বাচিত কৃষকদের কাছ থেকে ১২০ মেট্রিক টন ধান কেনা হয়েছে। এদিকে চলতি আমন মওসুমে মিলারদের কাছ থেকে চাল কেনার জন্য নির্দেশনা এসেছে। চলতি সপ্তাহে চাল সংগ্রহ কার্যক্রম শুরু হবে।

স্থানীয় খাদ্য দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, সৈয়দপুর উপজেলায় পৌরসভাসহ ৫টি ইউনিয়নে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় ৯২৯ মেট্রিক টন ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী প্রতি কৃষকের ১ মেট্রিক টন করে ৯২৯ জনের কাছ থেকে ২৬ টাকা কেজি দরে ধান কেনার প্রক্রিয়া শুরু করে স্থানীয় খাদ্য দপ্তর।

সূত্র জানায়, সৈয়দপুর উপজেলায় পৌর এলাকাসহ ৫টি ইউনিয়নে এবার ৯ হাজার ৭০ জন আমন আবাদ করে। ফলনও হয় বাম্পার। স্থানীয় কৃষি বিভাগ এবার আমন উৎপাদনে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিল ৮ হাজার ২৫০ মেট্রিক টন। আর অর্জিত হয়েছে ৮ হাজার ২০০ মেট্রিক টন। কিন্তু ধান কেনা হবে ৯২৯ মেট্রিক টন। ফলে বিতর্ক এড়াতে উপজেলায় ৯ হাজার ৭০ জন কৃষকের মাঝে ৯২৯ জন কৃষক বাছাই করতে গত মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে পৌর এলাকাবাসহ ৫টি ইউনিয়নে কৃষক নির্বাচনে লটারী করা হয়। জনসংখ্যার আনুপাতিক হারে পৌর এলাকায় ৯৬ জন কৃষক নির্বাচনে ৩২৮ জন, কামারপুকুর ইউনিয়নে ১৫১ জন নির্বাচনে ১ হাজার ৫৫১ জন, কাশিরাম বেলপুকুর ১৭৩ জন নির্বাচনে ১ হাজার ৭৯০ জন, বাঙ্গালীপুরে ১৫০ জন নির্বাচনে ২ হাজার ১৩৩ জন, বোতলাগাড়ীতে ১৯৯ জন নির্বাচনে ২ হাজার ১৯জন এবং খাতামধুপুর ইউনিয়নে ১৬০ জন কৃষক নির্বাচনের জন্য ১ হাজার ২৪৯ জন কৃষক লটারীতে অংশ নেন।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. নাসিম আহমেদ, উপজেলা খাদ্য অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) মাহমুদ হাসান, খাদ্য সরবরাহ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফজলুল হক, কৃষি দপ্তরের কর্মকর্তা, ইউপি চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্টদের উপস্থিতিতে ওইসব লটারী অনুষ্ঠিত হয়। লটারীতে সরকারি মূল্যে ৯২৯ জন কৃষক ৯২৯ মেট্রিক টন ধান বিক্রি করার সুযোগ পেলেও ৮ হাজার ১৪১ জন কৃষক সরকারি মূল্যে ধান বিক্রি করা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। কৃষকদের সূত্র জানায়, সিংহভাগ ওইসব কৃষক তাদের ধান নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছেন। ফলে তাদের উৎপাদিত ধান মিলার এবং আড়তদারসহ ফাড়িয়াদের কাছে স্বল্প মূল্যে বিক্রি করতে হচ্ছে।

এদিকে লটারীতে নির্বাচিতদের কাছ থেকে ধান কিনতে গত ৩ ডিসেম্বর ধান ক্রয়ের উদ্বোধন করা হয়েছে। স্থানীয় খাদ্য সরবরাহ কেন্দ্রে ধান সংগ্রহ অভিযানের উদ্বোধন করেন প্রধান অতিথি উপজেলা চেয়ারম্যান মো. মোখছেদুল মোমিন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ইউএনও মো. নাসিম আহমেদ। উপস্থিত ছিলেন খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. ফজলুল হক, মুক্তিযোদ্ধা মো. একরামুল হক সরকারসহ অন্যান্যরা।

জানতে চাইলে, খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. ফজলুল হক বলেন, সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী কৃষকদের কাছ থেকে ধান কেনা শুরু হয়েছে। চলতি সপ্তাহে আমন চাল কেনার প্রক্রিয়া শুরু হবে। তিনি বলেন, এবার উপজেলায় ১ হাজার ১ টন চাল সংগ্রহ করা হবে। এর মধ্যে সিদ্ধ ৯৭৩ ও আতপ ২৮ টন চাল কেনা হবে। এজন্য ২৩ জন মিলারের সাথে চুক্তি করা হবে।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।