কুমিল্লার হোমনায় ৫ম শ্রেণিতে পড়ুয়া এক ছাত্রীকে স্কুল থেকে নিজ রুমে ডেকে নিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। আজ মঙ্গলবার ছাত্রীটিকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য কুমেক হাসপতালে এবং জবানবন্দি রেকর্ডের জন্য আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ।

এ ব্যাপারে ভিকটিমের বাবা শ্রমিক লীগ নেতা ইব্রাহিম বাদী হয়ে সোমবার রাতে চার জনকে আসামী করে হোমনা থানায় মামলা দায়ের করেছেন। এ ঘটনায় পুলিশ তাৎক্ষণিক আবু সালেহ নামে একজনকে আটক করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠিয়েছে।

মামলার বিবরণে জানা যায়,হোমনা উপজেলার বাগমারা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণির ওই ছাত্রী স্কুলে যাওয়া আসার পথে একই গ্রামের মুফতি নূরুজ্জামানের ছেলে জালাল মিয়া প্রেম নিবেদনসহ উত্ত্যক্ত করতো। বিষয়টি বার বার জালালের পরিবারের সদস্যদের জানালেও তারা কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। এভাবে দীর্ঘদিন প্রেম নিবেদন করার এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে বন্ধুত্ব হয়ে যায়। এরই সূত্র ধরে জালাল গত এক বছর আগে ছাত্রীটিকে ফুঁসলিয়ে বাগমারা মহিলা মাদ্রাসা ছুটির সময় মাদ্রাসার একটি কক্ষে নিয়ে মেয়েটিকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। তখন মেয়েটির পরিবার বিষয়টি জানতে পেরে জালালের অভিভাবকদের নিকট বিচার দিলেও তারা এ ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। লোক লজ্জার ভয়ে মেয়েটির পরিবার তখন থানায় জানানো বা কোনো দেন দরবারও করেননি।

গত সোমবার বিকাল তিনটায় ছাত্রীটি স্কুলে ছিল। এরই এক ফাঁকে তাকে আবারো জালাল বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ফুঁসলিয়ে স্কুল থেকে ডেকে স্কুলের পাশে নিজ বাড়িতে তার থাকার রুমে নিয়ে জোর পূর্বক ধর্ষণ করে। এ সময় জালালের বন্ধু আবু সালেহ তাদের পাহারা দেন। ছাত্রীটির আর্তচিৎকারে লোকজন ছুটে এলে জালাল দৌড়ে পালিয়ে যায় এবং তারা ছাত্রীিিটকে উদ্ধার করে বলে অভিযোগ করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে হোমনা থানার ওসি সৈয়দ মো. ফজলে রাব্বি জানান, ছাত্রী ধর্ষণের ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। পুলিশ তাৎক্ষণিক একজনকে আটক করেছে। বাকীদের আটকের চেষ্টা চলছে। মেয়েটিকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং জবানবন্দী রেকর্ড করার জন্য আদালতে পাঠানো হয়ছে।

এ ব্যাপারে ধর্ষণের অভিযোগ উঠা জালালের পিতা মুফতি নূরুজ্জামান বলেন, ধর্ষণের ঘটনা সম্পূর্ণ একটি সাজানো নাটক। আমার মান সম্মান ও সমাজে হেয় প্রতিপন্ন করার উদ্দেশে গ্রামের একটি বিশেষ মহল আমার পরিবারের বিরুদ্ধে এ নাটক সাজিয়েছে।

ইউএনও আজগর আলী, ওসি সৈয়দ ফজলে রাব্বি, পৌর মেয়র অ্যাড. নজরুল ইসলাম ভিকটিমের বাড়ি ও ধর্ষণের ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এদিকে ধর্ষক ও এর সঙ্গে জড়িতদের আটক এবং শাস্তির দাবিতে মঙ্গলবার উপজেলা সদরে মানববন্ধ কর্মসূচী পালিত হয়েছে।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।