ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১৯ শয্যার শিশু ও মহিলা ওয়ার্ডে পুরুষ রোগীদেরও সেবা দেয়া হচ্ছে। ওই ওয়ার্ডে পুরুষ রোগীদেরও বেডে চিকিৎসা সেবা নিতে দেখা গেছে।

পাশের বারান্দা ও হাসপাতালের খোলা ছাদেও রয়েছেন প্রায় ২০ রোগী। সব মিলিয়ে ৫৮ জন চিকিৎসা নিচ্ছেন। আর এত রোগীর চিকিৎসা সেবা দিতে গিয়ে রীতিমত হিমশিম খাচ্ছেন দু’জন নার্স।

সোমবার রাত ৯টার দিকে ওই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে এমন দৃশ্য দেখা যায়।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ৩১ শয্যা বিশিষ্ট নবীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ২০১১ সালে ৫০ শয্যায় উন্নীত হয়। পরে ২০১৪ সালে হাসপাতালটিতে আধুনিক সুযোগ সুবিধা নিয়ে সম্প্রসারিত তিনতলা বিশিষ্ট নতুন একটি ভবনের উদ্বোধন করা হয়। নতুন এই ভবনের নীচতলায় চিকিৎসকদের চেম্বার, ইপিআই কেন্দ্র ও স্টোর কক্ষ এবং দ্বিতীয় তলায় প্রশাসনিক কক্ষ, লেবার কক্ষ, অপারেশন থিয়েটারসহ আনুষাঙ্গিক কক্ষ রয়েছে। আর তিনতলায় রোগীদের জন্য তিনটি কেবিন, কর্তব্যরত চিকিৎসক ও নার্সদের জন্য দুটি কক্ষ ও ১৯ শয্যার একটি মহিলা ও শিশু ওয়ার্ড রয়েছে।

সূত্র জানায়, নতুন ভবনটি চালু হবার পর ঝুঁকিপূর্ণ থাকায় ৩১ শয্যার পুরাতন দ্বিতল ভবনের পুরুষ ও মহিলা ওয়ার্ড দুটির কার্যক্রম চলতি বছরের জুলাই মাসে বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ। পরে দ্বিতল ভবনের ওই দুটি ওয়ার্ডের কার্যক্রম তিনতলা বিশিষ্ট নতুন ভবনের তিনতলায় স্থানান্তর করা হয়। ১৯ শয্যার একমাত্র শিশু ও মহিলা ওয়ার্ডেই এখন পুরুষ ও মহিলাসহ সব রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিতে হচ্ছে। আর এ কারণে ১৯ শয্যার মহিলা ওয়ার্ড, বারান্দা ও হাসপাতালটির ছাদে পর্যন্ত রোগীদেরকে এখন চিকিৎসা দিতে কর্তৃপক্ষকে রীতিমত হিমশিম খেতে হচ্ছে।

জমিলা বেগম, রাহানা বেগম, কবির মিয়াসহ একাধিক রোগী ও তাদের আত্মীয় বলেন, আগের বিল্ডিংয়ে মহিলা ও পুরুষ আলাদা আলাদা ওয়ার্ড ছিল। হাসপাতালটিতে বেডের সংখ্যাও বেশি ছিল। কিন্তু এখন নতুন বিল্ডিংয়ে মাত্র ১৯টি বেডের পাশাপাশি বারান্দা ও ছাদেও গাদাগাদি করে রোগীদের চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। ফলে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন রোগীরা।

স্থানীয় একাধিক ভুক্তভোগীরা জানান, হাসপাতালটিতে আধুনিক সকল সুযোগ সুবিধা থাকার পরও এখন পর্যন্ত দ্বিতীয় তলায় অপারেশন কার্যক্রম (ওটি) চালু হচ্ছে না। ফলে ডেলিভারি রোগীদের প্রচুর অর্থ ব্যয় করে প্রাইভেট হাসপাতালে চিকিৎসা (সিজার) নিতে হচ্ছে।

হাসপাতালটির প্রধান, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মো. হাবিবুর রহমান বলেন, ‘৩১ শয্যার পুরাতন ভবনটি পরিত্যক্ত হওয়ায় এখন মাত্র ১৯ শয্যার একটি ওয়ার্ডে সব রোগীদের চিকিৎসা দিতে হচ্ছে। তাই রোগীদের কিছুটা অসুবিধা হচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘শুধু গত (সোমবার) একদিনে এখানে ৫৮ জন রোগী ভর্তি ছিলেন। তাই নিরুপায় হয়েই আমাদেরকে বারান্দা ও পাশে থাকা ছাদেও রোগীদের চিকিৎসা দিতে হচ্ছে।’

স্থানীয় সংসদ সদস্য (ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫) এবাদুল করিম বুলবুল মুঠোফোনে বলেন, ‘আগামী সপ্তাহেই আমি হাসপাতালটি পরিদর্শনে যাব।’

পরিত্যক্ত ভবনের জায়গায় শিগগিরই নতুন ভবনের কার্যক্রম চালুর উদ্যোগ নেয়ার পাশাপাশি খুব দ্রুত হাসপাতালটির ওটির কার্যক্রমও চালু করা হবে ইনশাআল্লাহ।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।