ঝিনাইদহের শৈলকুপায় লুসানুর রহমান(লুসান) নামে এক যুবক তৃতীয় লিঙ্গ গোষ্ঠীর নাছরিন আক্তার নামে এক হিজরাকে বিয়ের ফাঁদে ফেলে। তাদের দাম্পত্য চলাকালীন লুসান বিভিন্ন প্রকল্পে ব্যবসার কথা বলে স্ত্রী নাসরিনের কাছ থেকে চুক্তিপত্রের মাধ্যমে ১০ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। পরে নানা প্রয়োজনে কয়েক কিঞ্চিতে আরো ৫লাখ টাকাসহ মোট ১৫ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে । বর্তমানে লুসান হিজরা নাসরিনকে মোখিক ভাবে বুঝিয়ে নিজ গ্রামে অবস্থান করে আরো একটি সংসার পেতেছে বলে জানা গেছে। নাসরিনের অভিযোগ লুসান তার সাথে ভালবাসার অভিনয় করে কৌশলে টাকা হাতিয়ে শটকে পড়ার চেষ্টা করছে। সে আরো অভিযোগ করে, তার স্বামী লুসান সংসার জীবনে বেপরোয়া মাদকাসক্ত হওয়ায় সংসারে বাকবিতন্ডার এক পর্যায়ে মোবাইল ফোনে নানা হুমকি ধামকি ভয়ভীতি দেখিয়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে শৈলকুপায় স্বামী সংসারে ফিরতে মরিয়া নাসরিন বিভিন্ন মহলে ধরনা দিচ্ছে।

তথ্য উপাত্তের ভিত্তিতে জানা যায়, ২০১৪ সালের মাঝামাঝিতে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া ফেরিঘাটে টাকা উত্তোলনের সময় শৈলকুপা উপজেলার বিজুলিয়া গ্রামের খাসিয়ার রহমানের ছেলে লুসানের সাথে পরিচয় হয় মানিকগঞ্জ উপজেলার শিবালয় উপজেলার নিহন্দ গ্রামের গফফার শেখের মেয়ে নাসরিন আক্তারের। সেই থেকে ধীরে ধীরে তাদের মাঝে গড়ে ওঠে প্রেমের সম্পর্ক। প্রেম প্রনয় শেষে ২০১৫ সালের ৫ই জানুয়ারি ঢাকা জেলা জর্জ কোর্টে তাদের ৫ লাখ টাকা দেনমোহর ধার্য করিয়া বিবাহ সম্পন্ন হয়। বিবাহের আগে ও পরে বিভিন্ন সময় চুক্তিপত্রে সই করিয়া ১৫ লাখ টাকা আত্মসাত করে। চুক্তিপত্র প্রমাণার্থে জানা যায়, ২০১৫ সালের ১লা জানুয়ারি ৫ লাখ, মার্চে ২ তারিখে ৩ লাখ এবং ওই বছরের মে মাসের ২ তারিখে একই বছর ২ লাখ টাকা ব্যবসার কথা বলে চুক্তিপত্রে সই করিয়া সর্বমোট ১০ লাখসহ আরো নামে বেনামে বিভিন্ন সময় ৫ লাখ টাকা গ্রহণ করে। ধার গ্রহণের টাকা নাসরিন চাইলে লুসান বিভিন্ন সময় তালবাহানা ও সময়ক্ষেপণ করে ঘুরাতে থাকে। অর্থলোভী লুসান টাকা হাতিয়ে নেওয়ার পর থেকেই নাসরিনের কল রিসিভ করা বন্ধ করে দেয় ও বিভিন্ন সময় হুমকি ধামকি দিতে থাকে এবং সে কোন প্রকার টাকা ধার নেননি বলে অস্বীকার করে।

বিজুলিয়া ও শৈলকুপা এলাকায় লুসানের সম্পর্কে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ছাত্র জীবন থেকেই লুসান মাদক ও নারীসক্ত এবং ডানপিঠে অর্থলোভী ও বেপোরয়া জীবনযাপন করায় পরিবার আত্মীয় পরিজন থেকে অনেকটাই বিছিন্ন। সম্প্রতি থানা মোড়ে জনৈক দিয়ানত আলীর কণ্যাকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে দ্বিতীয় স্ত্রী হিসাবে সংসার করছে।
প্রথম স্ত্রী নাসরিন জানায়, স্বামীর স্বীকৃতি ও ভালবাসার দুর্বলতাকে পুঁজি করে নারীলোভি লুসান তার মতো একাধিক মেয়েকে প্রেমের জালে ফাসিয়েছে , যার অডিও ভিডিওসহ নানা তথ্য সংগৃহীত আছে। নাসরিনের বিয়ের বিষয়টি দৌলতদিয়া, পাটুরিয়া, শিবালয়, মানিকগঞ্জসহ তার আদিনিবাস খুলনার রুপসা এলাকায় অনেকেই জানে।

নাসরিনের আত্মীয় স্বপন জানায়, টুরিষ্ট ভিসায় নাসরিন ও লুসান কলকাতা বেড়াতে গিয়ে একটি আবাসিক হোটেলে নাসরিনকে হত্যার উদ্দেশ্যে তার মাথায় আঘাত করে। অজ্ঞান অবস্থায় নাসরিনকে রুমে তালাবদ্ধ রেখে ২ লাখ টাকা হাতিয়ে লুসান গোপনে বাংলাদেশে ফিরে আসে। সেই থেকে তাদের দাম্পত্যকলহ সৃষ্টি হয়।

সংশিষ্ট বিষয়ে মানিকগঞ্জ থানা প্রশাসন ও শৈলকুপার একাধিক রাজনৈতিক নেতা নাসরিনের অভিযোগ থেকে জানতে পেরেছে। এব্যাপারে লুসানের মুঠো ফোনে বহুবার যোগাযোগ করা হলেও কোন সদুত্তর মেলেনি। নাসরিন ন্যায় বিচারের আশায় প্রশাসনের বিভিন্ন মহলে ছুটে বেড়াচ্ছে।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।