কুষ্টিয়ার দৌলতপুরের পদ্মা নদীতে পানি বৃদ্ধির কারনে উপজেলার রামকৃষ্ণপুর ও চিলমারী ইউনিয়নের ৩৭ গ্রামের প্রায় ১০ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। দু’টি ইউনিয়নের চরাঞ্চলের সব প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।
বাড়িঘরে পানি ঢুকে তারা জলমগ্ন অবস্থায় রয়েছে। আকষ্মিক বন্যায় চরাঞ্চলের প্রায় ১ হাজার ৫শ হেক্টর জমির মাষকলাইসহ বিভিন্ন ফসল তলিয়ে গেছে। দেরিতে বন্যার হওয়ার কারণে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছেন কৃষকরা। সেই সাথে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন বন্যাকবলিত অসহায় মানুষ।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, এক সপ্তাহে ধরে পদ্মা নদীতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত আছে। ভারতের ফারাক্কা হয়ে পদ্মায় পড়ছে পানি। প্রতিদিন গড়ে ০.১২ সেন্টিমিটার করে পানি পাড়ছে। বৃহস্পতিবার পদ্মার হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে পানির উচ্চতা ছিল ১৩.৮৬ সেন্টিমিটার। বিপদসীমা হল ১৪.২৫ সেন্টিমিটার। অর্থাৎ বিপদসীমার ০.৩৯ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে পানি প্রবাহ হচ্ছে।
এদিকে রামকৃষ্ণপুর ও চিলমারী ইউনিয়নের সোনাতলা, চরসোনাতলা, চল্লিশপাড়া, সৌদিপাড়া. ঠাকুরপাড়া, চরপাড়া, ইনসাফনগর, চিলমারী, চরচিলমারী, মানিকেরচর, বাংলাবাজার, চরবাহিরমাদী, বাহিরমাদী, ভবনন্দদিয়াড়, আতারপাড়াসহ ৩৭ গ্রামের সর্বাধিক পরিবারের বসতবাড়ি ও ঘরে পানি ঢুকে পড়েছে।
দু’টি ইউনিয়নের চরাঞ্চলের সব প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। ফলে শিক্ষার্থীরাসহ পানিবন্দি সাধারণ মানুষ পরিবার নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছে। উপজেলার রামকৃষ্ণপুর, চিলমারী, ফিলিপনগর ও মরিচা এই ৪ ইউনিয়নের চাষকরা আবাদী জমির প্রায় ১৫’শ মাসকলাইসহ বিভিন্ন ফসল পানিতে তলিয়ে গিয়ে প্রায় ৯ কোটি টাকার ফসলের ক্ষতি হয়েছে।
ভাগজোত এলাকার কৃষক কাবিল হোসেন জানান, বন্যার পানিতে তার ৮ বিঘা জমির মাস কলাই ডুবে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ফিলিপনগর গ্রামের কৃষক মাহবুবুর রহমান জানান, পদ্মার পানি বেড়ে যাওয়ায় তাদের প্রায় ৪০ বিঘা জমির মাষকলাই পানিতে তলিয়ে গেছে।
রামকৃষ্ণপুর ইউপি চেয়ারম্যান সিরাজ মন্ডল জানান, তার ইউনিয়নের চরাঞ্চলের ২৪টি গ্রামের মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে। বর্তমানে তারা মানবেতর অবস্থায় রয়েছে।
দৌলতপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) সাইদুর রহমান জানান, দুর্যোগ মোকাবেলায় পর্যাপ্ত ত্রান সামগ্রী প্রস্তুত রয়েছে। পানিবন্দি মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা নেয়া হবে।
কুষ্টিয়া-১ দৌলতপুর আসনের সাংসদ এ্যাড. সারওয়ার জাহান বাদশা জানান, পদ্মা নদীতে হঠাৎ পানি বৃদ্ধি পেয়ে ৪ ইউনিয়নের মানুষ ক্ষতির মুখে পড়েছে। বিশেষ করে চিলমারী ও রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের বহু মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়ায় দুর্ভোগে পড়েছেন। প্রতিনিয়ত তাদের খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে। বন্যাকবলিত মানুষের পাশে থেকে তাদের সার্বিক সহযোগিতা করা হবে।
বিজ্ঞাপন 