ডেস্ক রিপোর্ট, ঢাকা;  ঈদের আগে নতুন এমপিওভুক্ত হওয়া দুই হাজার ৬১৫ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ৩৩ হাজার শিক্ষক-কর্মচারীর মধ্যে মাত্র পাঁচ হাজার ৯৪ জন বেতন-ভাতা পাচ্ছেন। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা (মাউশি) অধিদপ্তর, মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তর ও কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের এমপিও সংক্রান্ত বিশেষ বৈঠক শেষে পাঁচ হাজার ৯৪ জন শিক্ষক-কর্মচারীকে এমপিওভুক্ত করার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

সূত্র জানায়, নতুন এমপিওভুক্ত হওয়া দুই হাজার ৬১৫ প্রতিষ্ঠানে প্যাটার্নভুক্ত প্রায় ৩৩ হাজার শিক্ষক-কর্মচারী রয়েছেন। কিন্তু ২ থেকে ৫ মে পর্যন্ত মাত্র চার দিন সময় দেওয়ায় দুই-তৃতীয়াংশ শিক্ষক-কর্মচারীই আবেদন করতে পারেননি। আবার সার্ভার-সংক্রান্ত জটিলতা থাকায় অনেক শিক্ষক-কর্মচারী কাগজপত্র নিয়ে বসে থাকলেও অনলাইনে আবেদন সাবমিট করতে পারেননি।

তবে মাউশি অধিদপ্তর সূত্র জানায়, নতুন এমপিওভুক্ত হওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য দ্বিতীয় দফায় আগামী ২২ মে থেকে অনলাইনে আবেদন গ্রহণ শুরু হবে, তা চলবে ৩১ মে পর্যন্ত। ৪ জুনের মধ্যে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তারা এবং ৮ জুনের মধ্যে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাদের আবেদনগুলো নিষ্পত্তি করতে বলা হয়েছে। ১৫ জুনের মধ্যে এমপিও আবেদনের কাজ শেষ করতে বলা হয়েছে আঞ্চলিক উপ-পরিচালকদের। এরপর দু-চার দিনের মধ্যে কেন্দ্রীয় বৈঠক করে দ্বিতীয় দফায় এমপিও দেওয়া হবে।

মাউশি অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. সৈয়দ গোলাম ফারুক কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘যেসব শিক্ষক-কর্মচারী এমপিওভুক্ত হতে পারেননি, তাঁদের জন্য দ্বিতীয় দফায় আগামী ২২ মে থেকে আবেদন গ্রহণ শুরু হবে। আর যাঁরা এমপিওভুক্ত হয়েছেন, ঈদের আগেই তাঁদের বেতন-ভাতা ছাড় করা হবে।’

জানা যায়, গতকাল শনিবার নতুন এমপিওভুক্ত স্কুল-কলেজের তিন হাজার ৬২৬ জন শিক্ষক-কর্মচারীকে এমপিওভুক্ত ও স্তর পরিবর্তন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মাউশি অধিদপ্তর। এঁদের মধ্যে স্কুলের দুই হাজার ১৬৮ জন এবং কলেজের এক হাজার ৪৫৮ জন শিক্ষক-কর্মচারী রয়েছেন।

নতুন এমপিওভুক্ত হওয়া স্কুলের দুই হাজার ১৬৮ জন শিক্ষক-কর্মচারীর মধ্যে বরিশাল অঞ্চলের ১৩৩ জন, চট্টগ্রাম অঞ্চলের ২৩১ জন, কুমিল্লা অঞ্চলের ১৬৫ জন, ঢাকা অঞ্চলের ৫১৩ জন, খুলনা অঞ্চলের ৪৪৫ জন, ময়মনসিংহ অঞ্চলের ১৪৭ জন, রাজশাহী অঞ্চলের ২৯০ জন, রংপুর অঞ্চলের ৯২ জন এবং সিলেট অঞ্চলের ১৫২ জন শিক্ষক-কর্মচারী রয়েছেন।

নতুন এমপিও পাওয়া কলেজের এক হাজার ৪৫৮ জন শিক্ষক-কর্মচারীদের মধ্যে বরিশাল অঞ্চলের ৩২৬ জন, চট্টগ্রাম অঞ্চলের ৬৭ জন, কুমিল্লা অঞ্চলের ১১১ জন, ঢাকা অঞ্চলের ১০৫ জন, খুলনা অঞ্চলের ২৮৫ জন, ময়মনসিংহ অঞ্চলের ২৬৮ জন, রাজশাহী অঞ্চলের ১৫ জন, রংপুর অঞ্চলের ১২৮ জন এবং সিলেট অঞ্চলের ১৫৩ জন শিক্ষক-কর্মচারী রয়েছেন।

এদিকে নতুন এমপিওভুক্ত কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ১২১ জন শিক্ষক-কর্মচারীকে এমপিওভুক্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর। প্রাথমিক যাচাই শেষে অধিদপ্তরে আসা নতুন এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের ১২১টি আবেদন এমপিওভুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

এ ছাড়া নতুন এমপিওভুক্ত মাদরাসার এক হাজার ৩৪৭ জন শিক্ষক-কর্মচারীকে এমপিওভুক্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তর। গত শুক্রবার মাদরাসার এমপিও কমিটির সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

জানা যায়, নতুন এমপিওভুক্ত হওয়া শিক্ষক-কর্মচারীরা ঈদুল ফিতরের আগেই গত বছরের জুলাই মাস থেকে দুটি ঈদ উৎসব ভাতা, বৈশাখীভাতা ও এপ্রিল মাস পর্যন্ত বেতন পাচ্ছেন। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পূর্বঘোষণা অনুযায়ী গত বছরের ১ জুলাই থেকে এরিয়ারসহ পাচ্ছেন শিক্ষক-কর্মচারীরা। গত বছরের আগস্টে ঈদুল আজহার বকেয়া উৎসব বোনাসটি পাবেন তাঁরা। আর গত মাসে পুরনো এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা যেভাবে বৈশাখীভাতা পেয়েছেন, তেমনি নতুন এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা পাবেন। এটি তাঁরা বকেয়া হিসেবে পাবেন। এর সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে আগামী ২৫ মে অনুষ্ঠেয় ঈদুল ফিতরের ভাতা।

দীর্ঘ প্রায় ১০ বছর পর গত ২৩ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুই হাজার ৭৩০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিভুক্তির ঘোষণা দেন। এরপর দীর্ঘ ছয় মাস যাচাই-বাছাই শেষে গত ২৯ এপ্রিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ এক হাজার ৬৩৩ এবং কারিগরি ও মাদরাসা বিভাগ ৯৮২টি প্রতিষ্ঠানের তালিকা চূড়ান্ত করে। এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরাই এমপিওর আবেদনের সুযোগ পান।

আমাদের বাণী ডট কম/১৭ মে ২০২০/ডিএ

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।