মোঃ গোলাম রসুল মিয়া; বর্তমানে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলেতে প্রচুর পরিমাণ শিক্ষক সংকট রয়েছে। আমি নীলফামারী জেলার ডিমলা উপজেলার ঠাকুরগন্জ গ্রামের মাহামুদ্দিন পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একজন সহকারী শিক্ষক, আমার বিদ্যালয়েও ২ জন শিক্ষক সংকট রয়েছে। শিক্ষার মান উন্নয়ন এবং শিক্ষক সংকট দুর করতে ৩৭০০০ হাজার কোয়ালিটি সম্পন্ন প্যানেল প্রত্যাশী আসল মেধাবীদের নিয়োগ দেওয়ার জন্য জোর দাবি জানাচ্ছি, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নিকট।২৪ লক্ষ পরীক্ষা দিয়ে মাত্র ৫৫ হাজার উত্তীর্ণ হয়েছে যা শতকরা ২.৩%।

আমরা ১৮ হাজার নিয়োগ পেলেও বাদ রয়েছে ৩৭০০০ হাজার। যেহেতু ২০১৮ এর সার্কুলারটা ছিলো শূন্য পদের ভিত্তিতে নিয়োগ এবং বর্তমানে অনেক শূন্য পদ রয়েছে সেই সকল শূন্য পদে ৩৭০০০ হাজার প্রকৃত কোয়ালিটি সম্পন্ন প্যানেল প্রত্যাশীকে নিয়োগ দেওয়ার জন্য প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী জাকির হেসেন স্যার, মাননীয় সচিব আকরাম আল হোসেন স্যার, মাননীয় ডি জি ফসিউল্লাহ স্যার সহ শিক্ষার সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সদয় দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। করোনার কারনে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা আজ প্রায় ধ্বংসের পথে সেই ক্ষতি পুষিয়ে নিতে প্রাইমারিতে প্যানেল গঠন করে ৩৭০০০ হাজার কোয়ালিটি সম্পন্ন প্যানেল প্রত্যাশীকে নিয়োগ দেওয়া জরুরী বলে আমি মনে করি, কারন একটি সার্কুলার দিয়ে শিক্ষক নিয়োগ দিতে প্রায় ২-৩ বছর সময় লেগে যায় যা অনেক সময় সাপেক্ষ আর করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের কারনে যেখানে মানুষ ঘর থেকে বের হতে পারছে না যেখানে সার্কুলার দিয়ে শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া প্রায় অসম্ভব । বর্তমানে প্রাইমারিতে ৪০০০০ হাজারের অধিক শূন্য পদ, ৬৮ হাজার রিজার্ভ পদ এবং ২৬ হাজার প্রাক-প্রাথমিক পদ রয়েছে। ২০১০,২০১২,২০১৩ এবং ২০১৪ সালে প্রাইমারিতে প্যানেল গঠন করে শিক্ষক নিয়োগের নজির রয়েছে।

প্রাথমিক শিক্ষা হচ্ছে শিক্ষার মূল ভিত্তি সেই ভিত্তিকে শক্তিশালী করতে সর্বপ্রথম বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষক সংকট দুর করতে হবে। বিবিসির রিপোর্ট অনুযায়ী বিশ্বব্যাংকের জরিপে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৬৫% শিশু রিডিং পড়তে পারেনা এর কারন হচ্ছে বিদ্যালয়গুলেতে প্রচুর শিক্ষক সংকট রয়েছে। এইতো কয়েকদিন আগে একটি অনলাইন পত্রিকায় দেখলাম বঙ্গবন্ধু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মাত্র ২ জন শিক্ষক, যেখানে ৬ জন শিক্ষক থাকার কথা এছাড়াও অনেক বিদ্যালয়ে শিক্ষক ঘাটতি রয়েছে। বাংলাদেশ প্রাইমারি এডুকেশন অ্যানুয়াল সেক্টর পারফর্মেন্স রিপোর্ট ২০১৯ এর তথ্য মতে ১ জন শিক্ষক দিয়ে পরিচালিত হয় ৭৪৯ টি বিদ্যালয়,২ জন শিক্ষক দিয়ে পরিচালিত হয় ১১২৪ টি বিদ্যালয় এবং ৩ জন শিক্ষক দিয়ে পরিচালিত হয় ৪০০৮ টি বিদ্যালয়… এই রিপোর্ট থেকেই বোঝা যায় দেশের প্রাথমিক বিদ্যালগুলোর শিক্ষার অবস্থা… শিক্ষক সংকট রেখে কখনোই শিক্ষার মান উন্নয়ন সম্ভব নয় তাই প্রাথমিকে প্যানেল গঠন করে ৩৭০০০ হাজার কোয়ালিটি সম্পন্ন প্যানেল প্রত্যাশীকে দ্রুত নিয়োগ দেওয়া হোক।

১৬ জুন ২০১৬ দৈনিক শিক্ষার নিজস্ব প্রতিবেদন অনুযায়ী ডি পি ই এর তথ্য মতে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ২০০ শিক্ষক অবসরে যায়। জাতির পিতা শিক্ষার মুলভিত্তিকে শক্তিশালী করার জন্য ১৯৭৩ সালে প্রায় ৩৭০০০ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতিয়করন করেন যেখানে প্রায় ১ লক্ষ ৫০ হাজার শিক্ষকের কর্মসংস্থান হয়…তারই ধারাবাহিকতায় তার সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৩ সালে ২৬ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতিয়করন করেন যেখানেও প্রায় ১ লক্ষ ২ হাজার শিক্ষকের কর্মসংস্থান হয়….জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী (মুজিব বর্ষে) কে চিরস্মরণীয় করে রাখতে এবং শূন্য পদের ভিত্তিতে ৩৭০০০ হাজার প্যানেল প্রত্যাশীকে নিয়োগ দেওয়া হোক। করোনার কারনে পিছিয়ে পড়া শিক্ষার মান উন্নয়ন হবে, শিক্ষক সংকট দুর হবে, ৩৭০০০ হাজার মেধাবীর বেকারত্ব রোধ হবে, ৩৭০০০ হাজার পরিবারের রিজিকের ফয়সালা হবে এবং ৭৪ হাজার বাবা-মা সন্তানকে পড়ালেখা শেখানোর স্বার্থকতা খুজে পাবে সেই সাথে মুজিব বর্ষ চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।

সহকারী শিক্ষক মাহামুদ্দিন পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নীলফামারী জেলা।

আমাদের বাণী ডট কম/২৬ জুন ২০২০/পিপিএম 

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।