সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা দীর্ঘ দিন ধরেই ১১ তম গ্রেডে বেতন চেয়ে আসছেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে স্পষ্ট বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে শিক্ষকরা বেতন বৈষম্য নিরসন চেয়ে সমাধান না পেলেও পেতে চলেছেন ‘বায়োমেট্রিক হাজিরা’! এতে শিক্ষকদের মধ্য মিশ্র প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

শিক্ষকরা বলছেন, বায়োমেট্রিক হাজিরায় প্রাথমিক শিক্ষার মান রাতারাতি বৃদ্ধি করে দিবেনা। বরং এতে শিক্ষকদের মধ্য নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। তাছাড়া শুধু প্রাথমিক শিক্ষকদের জন্য নয়, সরকারের সকল অফিসে বায়োমেট্রিক হাজিরা বাধ্যতামূলক করা হোক। এর আগে ১১তম গ্রেডে বেতন দেওয়া দরকার ছিলো।

জানা যায়, প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকদের সাথে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সহকারী শিক্ষকদের বেতন বৈষম্য নিরসনের জন্য গত কয়েক বছর ধরে আন্দোলন করে আসছেন শিক্ষকরা। এর জন্য কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে অনশনও করেছেন তারা। এছাড়া বিভিন্ন সময় অবস্থান কর্মসূচি, বিক্ষোভ ও মানববন্ধনও করেছেন শিক্ষকরা। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে শুধুই আশ্বাস মিলেছে। সর্বশেষ গত মাসে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আকরাম-আল-হোসেনের সাথে শিক্ষক নেতাদের বৈঠক হয়। সেখান থেকে বলা হয় আগামী বছর অর্থাৎ ২০২০ সালের ১৭ মার্চের পূর্বেই শিক্ষকদের দাবি মানা হবে।

এদিকে বেতন বৈষম্য নিরসন না করেই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের শতভাগ উপস্থিতি নিশ্চিত করতে চলতি মাস ধেকেই চালু হতে যাচ্ছে ‘বায়োমেট্রিক হাজিরা’। এর ফলে আঙুলের ছাপের মাধ্যমে বিদ্যালয়ে শিক্ষকদের হাজিরা নিশ্চিত করা যাবে। হাজিরার বিষয়টি উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তারা মনিটরিং করবেন।

চলতি মাসের মধ্যে দেশের প্রতিটি বিদ্যালয়ে হাজিরা যন্ত্র (ডিভাইস) বসানো হবে বলে জানা গেছে। রাজধানী ঢাকাসহ গুরুত্বপূর্ণ শহরের নামী মাধ্যমিক স্কুল ও কলেজে অনেক আগেই বায়োমেট্রিক হাজিরা চালু হয়েছে। সারাদেশের ৬৫ হাজার ৬০১টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক রয়েছেন তিন লাখ ২২ হাজার ৭৬৬ জন। তাদের প্রত্যেককে এই ডিজিটাল হাজিরার আওতায় আনা হচ্ছে।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আকরাম আল হোসেন বলেন, শিক্ষকদের জবাবদিহির মধ্যে এনে বিদ্যালয়ে শতভাগ পাঠদান নিশ্চিত করতে চাই। এ জন্য এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। উপজেলা পর্যায়ের শিক্ষা কর্মকর্তারা এটি দেখভাল করবেন।

তিনি আরো বলেন, অনেক উপজেলায় এরই মধ্যে ডিভাইসটি কেনা হয়েছে, অনেক উপজেলায় কেনা হচ্ছে। এটি বসানোর মাধ্যমে নিশ্চিত হবে যে কবে কোন তারিখে কোন শিক্ষক বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত ছিলেন। কোন শিক্ষক বিলম্বে বিদ্যালয়ে হাজির হন, সেটিও জানা যাবে। সামগ্রিকভাবে প্রাথমিক শিক্ষার ক্ষেত্রে এ সিদ্ধান্ত ইতিবাচক ফল বয়ে আনবে।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।