পানছড়ি উপজেলায় চিহ্ন’র প্রতিষ্ঠাতা ও পানছড়ি সদর ইউডিসি উদ্যোক্তা মুহাম্মদ শামিম সিহাব এ প্রতিবেদকে জনান, প্রাণঘাতী নোভেল করোনা ভাইরাস এর ভয়ঙ্কর থাবায় বৈশ্বিক মহামারি থেকে বাদ যায়নি বাংলাদেশ। প্রশাসন, স্বাস্থ্য বিভাগ ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের তৎপরতায় বেশ কিছুদিন নিরাপদ থাকলেও শেষ রক্ষা হয়নি পর্যটনখ্যাত প্রিয় খাগড়াছড়ির। এ সময় বিভিন্ন হোটেল রেস্টুরেন্টে উচ্ছিষ্ট খাবার ও ডাস্টবিন ঘেঁটে খাবার সংগ্রহ করা অসহায় ভবঘুরে ভাসমান মানসিক ভারসাম্যহীন মানুষগুলো চরম খাদ্য সংকটে পড়ে। তাঁদের বাঁচিয়ে রাখতে গত ২৬শে মার্চ থেকে তাদের পাশে দাঁড়ায় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘চিহ্ন’। ‘আমার শহরে অভুক্ত ঘুমাবে না একটি অভিযোগহীন মানুষ’ এই শ্লোগানে দীর্ঘ তিন মাসেরও অধিক সময় ধরে নোভেল কোরোনা ভাইরাসের জেরে অস্থিরতার মধ্যেও প্রতিদিনকার রোদ-বৃষ্টি উপেক্ষা করে অসহায় মানুষগুলোর মুখে খাবার তুলে দিচ্ছি।
শেয়ার করুনঃ
এম আই মাহিম, খাগড়াছড়ি জেলা সংবাদদাতাঃ করোনা ভাইরাসে এক ভিন্নধর্মী সেবা প্রদান করেছে সামাজিক, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন “চিহ্ন”। রাস্তায় পড়ে থাকা মানসিক ভারসাম্যহীনদের মাঝে নিরবে রান্না করা খাবার সরবরাহ করে যাচ্ছে সংগঠনটি।
জেলার পানছড়ি উপজেলা ঘুরে দেখা যায়, দুপুরের উত্তপ্ত রোধ উপেক্ষা করে অতি অসহায় ও ভাসমান মানসিক ভারসাম্যহীন মানুষের মাঝে রান্না করা খাবার বিতরণ করছেন সংগঠনটির স্বেচ্ছাসেবীরা। প্রতিটি প্যাকেটে ভাত, মুরগির মাংস, ডিম ও সবজির সাথে মিনারেল পানির বোতল নিয়ে বাজার ও আশেপাশের এলাকায় মানসিক ভারসাম্যহীন মানুষদের খুঁজে বের করার ব্যস্ততার ফাঁকে স্বেচ্ছাসেবীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, গত ২৬শে মার্চ থেকে এই কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন তারা। প্রথম দুইমাস প্রতিদিন প্রায় ২৮/৩০ জন ও গত একমাস থেকে ১৬/১৭ জন ভবঘুরে মানসিক ভারসাম্যহীন ও অতি অসহায় মানুষকে রান্না করা খাবার সরবরাহ করছেন।
দেশের এই সংকটময় পরিস্থিতিতে ‘ফুড শেয়ার ইউথ চিহ্ন’ নামে এখন পর্যন্ত প্রায় ২৫০০ জনের অধিক ভবঘুরে মানসিক ভারসাম্যহীন, প্রতিবন্ধী ও অতি অসহায় মানুষের মাঝে রান্না করা এক বেলার খাদ্য সরবরাহ করেছি এবং আমাদের অন্যান্য কার্যক্রমের মধ্যে গত রমজান মাসে সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থায়নে “ইফতার শেয়ার ইউথ চিহ্ন” নামে অসহায় প্রায় ২০০টি পরিবারের মাঝে ৮ থেকে ১০ দিনের খাদ্য ও ইফতার সামগ্রী পৌছে দিয়েছি। প্রশাসনিক ও অন্যান্য সহযোগীতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, শুরুতে উপজেলা প্রশাসন মানবিক সহযোগীতায় আমাদের পাশে দাঁড়ালেও বর্তমানে সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থায়নে কার্যক্রম পরিচালনা করতে গিয়ে অর্থসংকটে হিমশিম খেতে হচ্ছে। তবুও অসহায় মানুষগুলোর খাদ্য নিশ্চয়তায় শত প্রতিকুলতাকে উপেক্ষা করে তিনি তার কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার ইচ্ছা পোষণ করেন। পানছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম ও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো: রাকিবুল ইসলাম স্যারদের আন্তরিক সহযোগীতা ও পরামর্শ আমাদের পথ চলায় সহায়ক ভূমিকা পালন করেছে। পাশাপাশি সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবীদের অক্লান্ত পরিশ্রম ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের ভালোবাসা ছাড়া আমাদের কার্যক্রম এতদুর অগ্রসর প্রায় অসম্ভব ছিল। তাই সংগঠনের পক্ষথেকে সবাইকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
আমাদের বাণী ডট কম/১৪ জুলাই ২০২০/পিপিএম
শেয়ার করুনঃ