মজুরি কমিশনসহ ১১ দফা দাবি বাস্তবায়নে সহকর্মীদের সঙ্গে আমরণ অনশন শুরু করেছিলেন প্লাটিনাম জুট মিলের শ্রমিক আব্দুস সাত্তার (৫৫)।

জীবন চলে গেলেও দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত ঘরে ফিরবেন না বলে প্রতিজ্ঞ ছিলেন তিনি। কিন্তু দেখে যেতে পারলেন না তাদের আন্দোলনের সফলতা। অনশনে অসুস্থ হয়েই মারা গেলেন আব্দুস সাত্তার।

বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান পাটকল শ্রমিক আব্দুস সাত্তার।

বিষয়টি নিশ্চিত করে রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল সিবিএ-নন সিবিএ সংগ্রাম পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক খলিলুর রহমান বলেন, প্লাটিনাম জুট মিলের তাঁত বিভাগের শ্রমিক আব্দুস সাত্তার অনশনরত অবস্থায় সকালে অসুস্থ হয়ে পড়লে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে সন্ধ্যায় মারা যান তিনি।

প্লাটিনাম জুট মিলের সিবিএ সাধারণ সম্পাদক মো. হুমায়ুন কবির খান বলেন, অনশনে অসুস্থ হয়ে গেলে প্লাটিনাম জুট মিলের শ্রমিক সাত্তারকে হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

এদিকে, তার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের স্লোগান আর কান্নায় ভারী ওঠে গোটা শিল্পাঞ্চল। এ সময় সহকর্মীর মৃত্যুতে অনেকের চোখে পানি দেখা যায়।

স্থানীয় সূত্র জানায়, আমরণ অনশনে প্রায় শতাধিক শ্রমিক অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাদের অনেককে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) থেকে মজুরি কমিশন বাস্তবায়সহ ১১ দফা দাবিতে আমরণ অনশন কর্মসূচি শুরু করেন খুলনা অঞ্চলের রাষ্ট্রায়ত্ত নয়টি পাটকলের শ্রমিকরা। রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল সিবিএ-নন সিবিএ সংগ্রাম পরিষদের ডাকে এ আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করছেন তারা।

আন্দোলনে থাকা পাটকলগুলো হলো- ক্রিসেন্ট জুট মিল, খালিশপুর জুট মিল, দৌলতপুর জুট মিল, প্লাটিনাম জুবিলি জুট মিল, স্টার জুট মিল, আলিম জুট মিল ও ইস্টার্ন জুট মিল, কার্পেটিং জুট মিল ও জেজেআই জুট মিল।

শ্রমিক নেতারা জানান, আগামী ১৫ ডিসেম্বর সকাল ১১টায় পাট মন্ত্রণালয়ে আন্দোলনরত পাটকল শ্রমিকদের সঙ্গে পাটমন্ত্রী ও শ্রম প্রতিমন্ত্রীর বৈঠকের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এজন্য ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত খুলনার কর্মসূচি স্থগিত করার অনুরোধ করেছেন শ্রম প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ান। কিন্তু তা মানেননি শ্রমিকরা।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।