নিজস্ব সংবাদদাতা, ঢাকা;  ঈদের আগে প্রাইভেট কার-মাইক্রোবাস চালকসহ সকল হালকা যানাবহন চালকদের বকেয়াসহ চলতি মাসের বেতন ও বেসিকের সমান উৎসব ভাতা পরিশোধ এবং লকডাউনে কর্মহীন গাড়ী চালকদের জন্য প্রতিশ্রুতি অনুসারে নগদ ও খাদ্য সামগ্রী সহায়তা নিশ্চিত করার দাবিতে প্রতীকী মানবন্ধন করেছে ‘ঢাকা জেলা ট্যাক্সি, ট্যাক্সি কার, অটোটেম্পু, অটোরিকশা চালক শ্রমিক ইউনিয়ন।

আজ সোমবার সকালে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ই ঢাকার বিভিন্ন থানায় থানায় ‘ঢাকা জেলা ট্যাক্সি, ট্যাক্সি কার, অটোটেম্পু, অটোরিক্সা চালক শ্রমিক ইউনিয়ন (রেজি: নং: ঢাক-২২৮০)’ এর উদ্যোগে করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় মানববন্ধন ও প্রতীকি অবস্থান করে।

জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ‘ঢাকা জেলা ট্যাক্সি, ট্যাক্সি কার, অটোটেম্পু, অটোরিকশা চালক শ্রমিক ইউনিয়ন (রেজি: নং: ঢাক-২২৮০)’ এর সহ-সভাপতি বিরেশ চন্দ্র দাসের সভাপতিত্বে এবং সধারণ সম্পাদক আহাসান হাবিব বুলবুল এর পরিচালনায় অনুষ্ঠিত মানববন্ধন কর্মসূচীতে বক্তব্য রাখেন সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেকুজ্জামান লিপন, কোষাধ্যক্ষ জুলফিকার আলী, ইউনিয়নের সহ-সম্পাদক আলমগীর হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক হাবিবুর রহমান হাবিব, সংগঠক ফজলুল হক শাহীন, মোহাম্মদ ফোরকান, আব্দুল করিম প্রমুখ।

নেতৃবৃন্দ বলেন, উৎসব পালনের অধিকারের মতই সারাবছরের কাজের ধারাবাহিকতায় উৎসব ভাতা পাওয়াও সকল শ্রমিকের অধিকার। কিন্তু প্রাইভেট কার-মাইক্রো চালকসহ হালকা যানবাহন চালকদের জন্য শ্রম আইন স্বীকৃত অধিকার ও সুরক্ষা সমূহ বাস্তবায়ন করা হয়না। শ্রম আইনের প্রয়োগ না থাকায় সারাবছর কাজ করানোর পর শুধু উৎসব ভাতা না দেওয়ার জন্য গাড়ি চালকদের ছাঁটাই করা হয়। এবছর করোনা দুর্যোগের অজুহাতে ছাঁটাই, বেতন কর্তন এবং উৎসব ভাতা থেকে বঞ্চিত করার ঘটনা আরও বৃদ্ধি পেেয়ছে। নেতৃবৃন্দ দুর্যোগকালীন সময়ে কর্মচ্যুত করে গাড়ি চালকদের পরিবারসমূহ কে ঝুঁকির মধ্যে ফেলে শ্রম অসন্তোষ তৈরী না করার অনুরোধ করেন এবং ঈদের পূর্বেই বকেয়াসহ চলতি বেতন ও পূর্ণ উৎসব ভাতা পরিশোধের জন্য মালিকদের প্রতি আহবান জানান।

নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে সরকার গত ২৬ মার্চ ২০২০ থেকে সকল গণপরিবহন চলাচল বন্ধ ঘোষণা করায় অদ্যবধি ৫৩ দিন যাবত সি.এন.জি অটোরিকশা, ট্যাক্সি, ট্যা্িক্স কার চালকেরা কর্মহীন হয়ে উপার্জনের পথ বন্ধ থাকায় পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে। কারণ অধিকাংশ চালক-শ্রমিকরা দৈনিক মজুরির বিনিময়ে কাজ করে। যে সকল গাড়ি চালকেরা চুক্তি ভিত্তিতে কাজ করে তাদেরও মালিকের জমা আর রাস্তা খরচ মিটানোর পরে যে আয় হয় তা দিন চালাতেই ব্যায় হয়ে যায়। তেমন কোন সঞ্চয় থাকেনা। ফলে উপার্জনহীন ৫৩ দিনে পরিবারের সদস্যদের প্রতিদিনের খাবার যোগানই যেখানে অনিশ্চিত সেখানে ঈদের আগমন পরিবহন শ্রমিকদের জীবনযন্ত্রণা বহুগুন বাড়িয়ে দিচ্ছে। লকডাউন ঘোষণার সময় পরিবহণ শ্রমিকদের প্রয়োজনীয় খাদ্য ও নগদ সহায়তা দেয়া হবে বলে সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্তা ব্যাক্তিরা প্রতিশুতি, আশ্বাস দিয়েছে। সরকারের সক্ষমতা বিবেচনায় নিয়ে শুধুমাত্র অধিক সংকটগ্রস্থ ২৫৪ জন সদস্যের একটি তালিকা একাধিকবার ঢাকা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে জমা দেওয়ার পরও এখন পর্যন্ত একজন সদস্যও কোন ধরনের ত্রাণ সহায়তা পায়নি। যা সরকার প্রধানের ঘোষণাকে বাস্তবায়নের আন্তরিকতা নিয়ে প্রশ্ন তৈরী হচ্ছে, শ্রমিকদের মধ্যে তৈরী হচ্ছে অসন্তোষ।

নেতৃবৃন্দ ইউনিয়নের সরবরাহকৃত তালিকা অনুসারে করোনা দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবহন শ্রমিকদের ঈদের আগেই খাদ্য সামগ্রী ও নগদ সহায়তা এবং রেশন কার্ড সরবরাহ করার জোর দাবি জানান। নেতৃবৃন্দ, বাড্ডা, গুলশান, বনানী, কলাবাগন, উত্তরা এলাকায় কর্মসূচী পালনের জন্য সংগঠনের নেতৃবৃন্দকে ধন্যবাদ জানান এবং উত্তরা এলাকায় পুলিশি বাধার নিন্দা জানান।

আমাদের বাণী ডট কম/১৮ মে ২০২০/ডিএ

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।