প্রবল ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা বরগুনায় ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। শুক্রবার মধ্যরাত থেকে বরগুনায় থেমে থেমে ভারি বর্ষণ শুরু হয়েছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বুলবুল মোকাবেলায় সার্বিক প্রস্ততি নেয়া হয়েছে।

জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দুপুর ১২টার পর থেকে আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে আশ্রয় নিতে বলা হলেও ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেতের খবর পাওয়ার পর থেকেই মূলত বেলা এগারটা থেকে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার বাসিন্দারা আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নিতে শুরু করেছে। ইতোমধ্যেই বেশ কিছু মানুষ আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে।

বরগুনা সদর উপজেলার ঢলুয়া ইউনিয়নের বরইতলা এলাকার বরইতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আশ্রয় নিতে এসেছেন বৃদ্ধ এক ব্যক্তি মোহাম্মদ হাতেম। তিনি বলেন,‘বুড়া বয়সে বাবা এমন বইন্যার কবলে পইর‌্যা জীবনডা খুয়ামু, হেইতে তাড়াতাড়ি আশ্রয় নিতে আইছি, যদি পরানডা বাঁচে।’ একই আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন আবদুর রহমান ও তার পরিবার।

আবদুর রহমান বলেন, ১০ নাম্বার বইন্যা আইতে আছে। মোর বাড়ি ঘরের যে অবস্থা, এট্টু বাতাস ছোডলেই ঘরডা ভাইঙ্গা পড়তে পারে। মোর গুরাগারা লইয়া হেইতে নিরাপদে আশ্রয় লইতে আইছি।

পাথরঘাটার কালমেঘা ইউনিয়নের দক্ষিণ কুপদোন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কাম সাইক্লোন শেল্টারের আশ্রয় নিতে আসা আবদুল মজিদ বলেন, ‘মোরা অবদার পাড়ে থাহি। এট্টু বাতাস ছোডলেই কইলজাডা কাইপ্পা ওডে। ডরের চোডে আগেই আশ্রয় কেন্দ্রে আইয়া পড়ছি।’

পোটকাখালী আশ্রয় কেন্দ্রে ঘুরে দেখা যায়, প্রায় শতাধিক মানুষ ইতোমধ্যেই এই কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে। পোটকাখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কাম সাইক্লোন শেল্টারের প্রধান শিক্ষক হারুন অর রশিদ জানান, ইতোমধ্যেই আশ্রয় কেন্দ্রে শতাধিক মানুষ আশ্রয় নিয়েছে, এদের অধিকাংশই নারী, বৃদ্ধ ও শিশু। এছাড়াও দু’জন প্রসূতি নারীও আশ্রয় নিয়েছে। জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ দুপুর বারোটার দিকে এই আশ্রয় কেন্দ্রে পরিদর্শন করেছেন। আশ্রয় নেয়া পরিবারগুলোর মাঝে ত্রাণ সামগ্রি বিতরণ করেছেন জেলা প্রশাসক।

জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে মানুষের আশ্রয়ের জন্য ৩৪১টি সাইক্লোন শেল্টারসহ মোট ৫০৯টি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তত রাখা হয়েছে। যাতে ৫ লক্ষাধিক মানুষ আশ্রয় নিতে পারবে। এছাড়াও পর্যপ্ত খাবার মজুদ রাখা হয়েছে। প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য ৪২টি মেডিকেল টিম প্রস্তত রয়েছে। এছাড়াও সিপিবির ৬৩৩০জন স্বেচ্ছাসেবক মাঠে কাজ করছেন।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।