সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩০ বছর থেকে বাড়িয়ে ৩৫ বছর করার দাবিতে আমরণ অনশন কর্মসূচি চলছেই। এ কর্মসূচি চলাকালীন শুক্রবার সন্ধ্যায় জাতীয় প্রেসক্রাবের সামনে মোমবাতি প্রজ্বলন করেছে আন্দোলনকারীরা। এছাড়া ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দাবি আদায় না হলে সঙ্গবদ্ধ হয়ে মৃত্যুর পথ বেছে নিবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন তারা।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্রকল্যাণ পরিষদের প্রধান সমন্বয়ক মুজাম্মেল মিয়াজী।

জনপ্রসাশন মন্ত্রনালয়ের এই সপ্তাহের কার্যতালিকায় ৩৫সহ ৪ দফা সংক্রান্ত আলোচনা করতে পারে বলে জানিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।

মুজাম্মেল মিয়াজী জানান, দীর্ঘ ২২ দিন যাবত অনশনে থেকে  অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েছে। মৃত্যুর মুখে ঝুঁকে পড়েছে বেশ কয়েকজন। তবে আজ বিশ্বস্ত এক সুত্রে জানতে পারলাম যে এই সপ্তাহেই জনপ্রশাসন মন্ত্রনালয়ে ৩৫ সহ ৪ দফা বিষয়ে বৈঠক বসতে যাচ্ছে এবং এই সপ্তাহের কার্য তালিকায় ৩৫সহ ৪ দফা বৈঠক হবে বলে তথ্য পাওয়া গেছে।

আমরা নীতিগতভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছি, যে এত দিন ২-৩ জন করে গেলেও আগামীকাল থেকে সবাই একসাথে আমরণ অনশনে যাচ্ছি। এই আমরণ অনশনে আমাদের কোন অঘটন ঘটলে এর দায়ভার সরকারকেই নিতে হবে।

গত ৬ ডিসেম্বর থেকে টানা ২২ দিন চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ সহ ৪ দফা দাবি আদায়ের লক্ষে আমরণ অনশন করে আসছে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্রকল্যাণ পরিষদ । এর মধ্যে টানা ১০ দিন চলছে আমরণ অনশন। আমরণ অনশনে ৫ জন অসুস্থ হয়ে পড়েছে। এর হলেন সুরাইয়া ইয়াসমিন, মোশারফ সোহেল, মুসাদ্দেল আলী রাসেল, রেশমা আক্তার। সুরাইয়া ইয়াসমিন গুরুতর অসুস্থ। তাঁদেরকে হাসপাতালে নিয়ে স্যালাইন দেওয়া হয়েছে।

টানা ২২ দিন অনশন করার পর দুর্বল হয়ে পড়েছেন উজ্জল সরকার, নাজিম উদ্দিন, সজীব আহমেদ, পারভেজুর রহমান, মাসুম বিল্লাহ্, উজ্জল কুমার বিশ্বাসসহ বেশ কয়েকজন।

মিয়াজী বলেন, ২৮ লক্ষ শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবি নিয়ে আজ আমরা মৃত্যুর দুয়ারে ঝুঁকছি । শিক্ষিত সমাজের প্রতি সরকারের এমন অবহেলার তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করছি। সরকার যদি আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে আমাদের ৩৫ সহ ৪ দফা দাবি মেনে না নেয়, তবে আমরা সঙ্গবদ্ধ হয়ে মৃত্যুর পথ বেছে নিব। কারণ আমাদের এই ছাড়া উপায় নেই। পরিবার, সমাজ ও জাতীর কাছে আমাদেরকে অবহেলিত করে রেখেছে সরকার। এমন অবহেলিত জীবন নিয়ে বেঁচে থাকার কোন মানেই হয়না। জাতীসংঘভুক্ত ১৬২ টি দেশে চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ এবং উর্ধ্বে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ গড় আয়ু ৪৭ থেকে বেড়ে ৭৩ হয়েছে। গড় আয়ু হিসাবে চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৪৩ হওয়ার কথা৷ আর আমরাতো চেয়েছি মাত্র ৩৫। আমরা আবেদনের সুযোগ চাই। আমরা সমাজে ও জাতীর অবেহিলত কেউ কোন বোঝা হতে চাইনা। আমরা বাঁচতে চাই। আশা করি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এই বিজয়ের মাসে আমাদের এক অবিস্মরণীয় বিজয় উপহার দিবেন। মানবতার মা হিসাবে আমাদের পাশে এসে দাঁড়াবেন। তবে জাতি আপনার নাম স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখবে।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।