ঠাকুরগাঁও জেলার ৫টি হাসপাতালে জনবল সংকটের সমস্যা দীর্ঘদিনের। তবে সংকট নিরসন হয়েছে এবার। প্রত্যন্ত অঞ্চলের সাধারণ মানুষের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে ঠাকুরগাঁও জেলার ৫টি হাসপাতালে ৫৭ জন নতুন চিকিৎসক পদায়ন করা হয়েছে। ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে ১১ জন, বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১১ জন, রানীশংকৈল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১৩ জন, পীরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১৩ জন এবং হরিপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৯ জন।

বৃহস্পতিবার পদায়নকৃত ৫৭ মেডিকেল অফিসার পদে নিজ নিজ কর্মস্থলে যোগদান করেছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঠাকুরগাঁও সিভিল সার্জন আনোয়ারুল ইসলাম। তিনি বলেন, এরা সবাই ৩৯তম বিসিএস ব্যাচের চিকিৎসক। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জেলার আধুনিক সদর হাসপাতাল ছাড়া বাকি ৪টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২৮ জন চিকিৎসকের জনবল কাঠামো থাকলেও দীর্ঘ এক যুগেরও বেশি সময় ধরে ৩-৪ জন চিকিৎসকের মাধ্যমে চিকিৎসাসেবা প্রদান করে আসছিল। বেশির ভাগ রোগীই কাক্সিক্ষত সেবা না পেয়ে ছুটত শহরের বিভিন্ন ক্লিনিকে।

বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মুঠোফোনে জানান, ‘বৃহস্পতিবার ১১ জন চিকিৎসক যোগদানের কথা থাকলেও ১০ জন যোগদান করেছেন। আমিসহ হাসপাতালের সব চিকিৎসক ও কর্মচারী ফুলেল শুভেচ্ছা দিয়ে তাদের বরণ করেছি। আগের দুজনসহ ১২ চিকিৎসক আমরা পেলাম। আশা করছি সাধারণ মানুষের চিকিৎসাসেবার সব চাহিদা পূরণ করতে আমরা সক্ষম হব। ’ নতুন ১৩ জন চিকিৎসকের যোগদানের খবরে সবচেয়ে বেশি উচ্ছ্বসিত রানীশংকৈল উপজেলার সাধারণ মানুষ। এর আগে ওই এলাকার সাধারণ চিকিৎসক পদায়নের দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচিসহ উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর স্মারকলিপি প্রদান এমনকি গণস্বাক্ষর কর্মসূচিও পালন করতে দেখা গেছে। রানীশংকৈল এলাকার সাংবাদিক খুরশিদ আলম শাওন বলেন, রানীশংকৈল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নতুন যোগদান করা চিকিৎসকদের মধ্যে বেশ কয়েকজন এলাকার কৃতী সন্তান। ডাক্তার হওয়ার পর প্রথম নিজ এলাকায় কর্মস্থল পেয়ে বেশ আনন্দ লক্ষ্য করা গেছে তাদের মধ্যে আমরা আশা করছি দীর্ঘদিনের চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত সাধারণ মানুষের কাক্সিক্ষত সেবা তারা পূরণ করবেন।

এদিকে নতুন চিকিৎসক যোগদানের খবরে উপজেলায় সেবা নিতে রোগীর সংখ্যা বেড়েছে বলে জানান পীরগঞ্জের আবু তারেক বাঁধন নামে এক যুবক। তিনি বলেন, হাসপাতালে নতুন চিকিৎসকের আগমনে নতুন প্রাণ ফিরেছে। ক্লিনিকমুখী মানুষ এখন চিকিৎসাসেবা পেতে ছুটছে হাসপাতালে। উল্লেখ্য, জনবল কাঠামো অনুযায়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে ২৮ জন চিকিৎসক থাকার কথা।

এ ছাড়াও উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার পদে ৭ জন, ডেন্টাল চিকিৎসক ১ জন, ফার্মাসিস্ট ১ জন, ল্যাব টেকনিশিয়ান ২ জন থাকার কথা থাকলেও বেশির ভাগ হাসপাতালে ঘাটতি রয়েছে এসব পদে জনবলের।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।