এমপিও অনুমোদন না থাকা সত্তেও ১৯ বছর ধরে নিয়মিত বেতন পাচ্ছেন ডিগ্রি স্তরে বগুড়া কলেজের ২১ জন শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারী। প্রতিষ্ঠানটির বেতন কোড ছাড়া কীভাবে শিক্ষক-কর্মচারীদের এমপিওভুক্তি হলো তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) পরিচালক (প্রশিক্ষণ) অধ্যাপক ড. প্রবীর কুমার ভট্টাচার্যকে প্রধান করে ৩ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিকে পরবর্তী ৭ কর্মদিবসের মধ্যে সুস্পষ্ট মতামতসহ প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাউশি উপ-পরিচালক (কলেজ-২) মো. এনামুল হক হাওলাদার বলেন, ‘ঘটনাটি অনেক আগের। কীভাবে হয়েছে তা অনুসন্ধান করতে কমিটি গঠন করা হয়েছে।’

বগুড়া কলেজের অধ্যক্ষ কে বি এম মুসা বলেন, ২৩ বছর ধরে ডিগ্রি স্তরে পাঠদান চলছে। শিক্ষক-কর্মচারীরা বেতন পচ্ছেন ১৯ বছর ধরে। কেন ডিগ্রি স্তরের বেতন কোড অনুমোদন দেওয়া হয়নি তা বলতে পারবে মাউশি। শিক্ষকরা তো চাকরি করেই বেতন নিচ্ছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মাউশির সহকারী পরিচালক (সাধারণ প্রশাসন) জাকির হোসেন বলেন, ‘যে সময় কলেজটির ডিগ্রি স্তরের এমপিও হয়েছে, সে সময় এমপিওভুক্তির দায়িত্ব ছিল বাংলাদেশ শিক্ষাতথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরোর (ব্যানবেইস)। ওই সময়ের এই ঘটনাটির দায় তাদের।

মাউশি সূত্রে জানা গেছে, সংশ্লিষ্ট কলেজের ডিগ্রি স্তরের শিক্ষকদের যখন বেতন হয় তখন এমপিওভুক্তির দায়িত্ব ছিল বাংলাদেশ শিক্ষাতথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরো (ব্যানবেইস)। ডিগ্রি স্তরের বেতন কোড ছাড়া কীভাবে তারা এমপিও দিয়েছে তা ব্যানবেইস জানে। মাউশি এমপিওভুক্তির দায়িত্ব পায় ২০০৫ সালে। সে কারণে ওই সময়ের আগের অনেক নথি নেই মাউশিতে। ব্যানবেইসের দায়িত্ব থাকাকালে এমপিওভুক্তি নিয়ে বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ ছিল। এমনকি মাউশির দায়িত্ব পাওয়ার শুরুর দিকেও কয়েক বছর এমপিওভুক্তির ক্ষেত্রে চরম অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে।

মাউশি সূত্রে জানা গেছে, বগুড়া কলেজের ডিগ্রি স্তরে নতুন নিয়োগ পাওয়া দুইজন শিক্ষক এবং একজন সহকারী লাইব্রেরিয়ান ডিগ্রি স্তরে বেতন কোড না থাকায় এমপিওভুক্ত হতে পারছিলেন না। শেষ পর্যন্ত তারা হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন। ওই রিটের শুনানিতে বেতন দাবি করা দুই শিক্ষক আদালতকে বলেন, অধ্যক্ষ ডিগ্রি কোডে বেতন পাচ্ছেন।

আদালতের শুনানির সূত্র ধরে মাউশি জানতে পারে ডিগ্রি স্তরে বেতন কোড না থাকলেও ২১ জন শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়মিত বেতন পাচ্ছেন। এই পরিস্থিতে ঘটনা অনুসন্ধানে একটি তদন্ত কমিটিও করেছেন মাউশির মহাপরিচালক।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।