নিজস্ব সংবাদদাতা, নারায়ণগঞ্জ; জেলায় প্রধান শিক্ষককের স্বেচ্ছাচারিতায় শিকার হয়েছেন একজন গণিতের শিক্ষিকা। গণিতের শিক্ষিকা এমপিওভুক্ত করানো হয়েছে বিজ্ঞানের শিক্ষক হিবেসে। ঘটনাটি ঘটেছে জেলার বন্দরের নবীগঞ্জ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে। নবীগঞ্জ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সায়মা খানমের স্বেচ্ছাচারিতার শিকার হয়ে রহস্যজনক ভাবে গনিত বিষয় বাদ দিয়ে তাকে বিজ্ঞানে এমপিও ভুক্ত করেছেন এমন অভিযোগ উম্মে সালমার। গত চার মাস যাবত তাকেএমইওভুক্তির সকল সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত রেখেছে ওই প্রধান শিক্ষক।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ২০১১ সালে মহিলা শিক্ষক কোঠায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি জারি করেন নবীগঞ্জ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়। ওই বিজ্ঞপ্তির প্রেক্ষীতে আবেদন করেন উম্মে সালমা। একই বছর ভাইবা ও রিটেনের মাধ্যমে ইন্টারভিউতে টিকে যান তিনি। ওই সময়ে কোন শিক্ষকের পদবী ছিল না। গত ২০১৫ সালে এমপিও ভুক্ত হয় শিক্ষকরা। গণিতে নিয়োগ পেয়েও রহস্যজনক কারণে উম্মে সালমাকে বিজ্ঞানে এমপিও ভুক্ত করা হয়েছে।

এদিকে বিশেষ অনুমোদন সাপেক্ষে আতাউল হক নামে এক শিক্ষককে গনিতে এমপিও ভুক্ত করা হয়। কেন না ওই শিক্ষকের মেয়াদ শেষের পথে। আর উম্মে সালমার চাকুরির বয়স অনেক। যে কারনে উম্মে সালমাকে বিজ্ঞানে এমপিও ভুক্ত করা হয়েছে। আর আতাউল হকের ছেলে আরও একজন শিক্ষককে নিয়োগ দেয়ার পায়তারা করছে প্রধান শিক্ষক। উম্মে সালমাকে বিজ্ঞানে এমপিও ভুক্তের কাগজে স্বাক্ষর দিতে বলে সায়মা খানম। ওই কাগজে স্বাক্ষর না দেয়ার কারণেই নানা ভাবে উম্মে সালমাকে হয়রানি ও নির্যাতন করেছেন তিনি। বেশ কয়েক দিন ধরে ওই শিক্ষিকাকে একটি ছোট রুমে বন্ধ করে রাখেন প্রধান শিক্ষক। এরপর স্কুলটির নতুন ভবন উদ্ভোধন করতে আসেন এমপি সেলিম ওসমান। ওই দিনও উম্মে সালমাকে একটি রুমে আটকে রাখা হয়। শুধু তাই নয় উম্মে সালমা এমপির সাথে সাক্ষাৎ করতে পুলিশকে ফোন দেন। এবং পুলিশ এসে তাকে উদ্ধার করেন। এরই মধ্যে এমপি চলে যাওয়ায় তার সাক্ষাৎ করা সম্ভব হয়নি উম্মে সালমার।

এ বিষয়ে নবীগঞ্জ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সায়মা খানম বলেন, উম্মে সালমার আচার-আচরন ভাল না, তার সাথে কোনো শিক্ষক এবং শিক্ষিকার সাথে ভাল সম্পর্ক নেই। উম্মে সালমা স্কুলে দেরি করে আসা, অনিয়মিত, গণিতে কাঁচা এবং সহপাঠিদের সাথে অসদাচারণ সহ নানা অভিযোগ রয়েছে। আমি এ স্কুলে যোগদানের পুর্বেই সে বিজ্ঞানে এমপ্রিভুক্ত হয়েছে। তাকে কোনো রকম নির্যাতন করা হয়নি। সে স্কুলের বিরুদ্ধে অবস্তান নিয়েছে এবং মামলা দায়ের করে ভাবমূর্তি নষ্ট করছে। এ কারণে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী গণিতের শিক্ষক উম্মে সালমা বলেন, আমি অত্র স্কুলে গণিত বিষয়ে নিয়োগ পেয়েছি। কিন্তু রহস্যজনক ভাবে আমাকে বিজ্ঞান বিষয়ে এমপিও ভুক্ত করা হয়েছে। যা আমি নিজেই জানি না। কিন্তু বিশেষ অনুমোদন সাপেক্ষে আতাউল হক নামে এক শিক্ষককে গণিতে এমপিও ভুক্ত করা হয়। এরপর যখন জানতে পারি আমাকে গণিতে না করে বিজ্ঞানে এমপিও করা হয়েছে তখন এ ব্যাপারে উপজেলা, জেলা শিক্ষা অফিসারের সরানাপন্ন হই। তারা আমাকে কোনো ধরনে সহযোগিতা করেণ নাই। কিন্তু বিভাগীয় কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করলে তারা আমার এমপ্রি ভুক্ত বিষয়টি সমাধানের জন্য পরামর্শ দেন। তারা বলেন, আপনার প্রধান শিক্ষক যদি একটি ফরোয়াডিং করেন তাহলেই সমাধান হবে।

জানতে চাইলে এ ব্যপারে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আকম নুরুল আমিন জানান, এ বিষয়ে আদালতে মামলা দায়ের করেছেন শিক্ষক উম্মে সালমা। যেহেতু তিনি মামলা দায়ের করেছেন এ কারণে আমি কোন বক্তব্য দিতে পারব না। আদালত যে রায় দেবে তাই আমরা মেনে নেব।

জানতে চাইলে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আতাউর রহমান মুকুল টেলিফোনে জানান, আপনারা স্কুলের প্রধান শিক্ষকের সাথে কথা বলেন। আমি এ বিষয়ে কোন বক্তব্য দিতে পারব না।

আমাদের বাণী ডট কম/২৬ মার্চ ২০২০/টিএ

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।