হুমায়ুন কাবির, কুষ্টিয়া জেলা সংবাদদাতা;  জেলায় ঢাকা ফেরত আরও এক দম্পতি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। তাদের বাড়ি কুষ্টিয়া জেলার দৌলতপুর উপজেলার রেফায়েতপুর ইউনিয়নের কাঘাটি গ্রামে।

গতকাল শনিবার (০৯ মে ২০২০) স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে গ্রামের বাড়ি ফেরেন তিনি। রবিবার  দুজনের করোনা পজিটিভ এর কথা জানা গেছে। রাতেই জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে ফোন করে তাদেরকে জানানো হয় স্বামী-স্ত্রী দুজনেরই করোনা পজিটিভ।

খবর পেয়ে রাতেই উপজেলা প্রশাসন তাদের বাড়িটি লকডাউন করেছে। কুষ্টিয়ার সিভিল সার্জন এ এইচ এম আনোয়ারুল ইসলাম রবিবার  রাতে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

করোনা নিয়ন্ত্রণ সেল থেকে পাওয়া তথ্যে আরও জানা যায়, আজ রবিবার সারা দিনে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজের পিসিআর ল্যাবে ৪৯টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে কুষ্টিয়ার ৪১টি ও মেহেরপুরের ৮টি।

মেহেরপুরের সবকটি নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে। কুষ্টিয়ার দুজনের পজিটিভ পাওয়া গেছে। ওই দুজন স্বামী-স্ত্রী। তাদের বাড়িতে রেখেই চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। উপজেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটি সূত্রে জানা যায়, আক্রান্ত ব্যক্তি ঢাকায় একটি ল্যাবে চাকরি করেন। তবে সেটা সরকারি কি-না, জানা যায়নি। শনিবার স্ত্রী-সন্তানসহ সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ফেরিঘাট দিয়ে পদ্মা পার হয়ে রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ঘাটে পৌঁছান তিনি। সেখান থেকে আরেকটি সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে কুষ্টিয়ায় আসেন।

দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শারমিন আক্তার জানান, খবর পেয়ে রোববার রাতেই তাদের বাড়িটি লকডাউন করে দেয়া হয়েছে। আক্রান্ত-স্বামী স্ত্রী দুজনই সুস্থ রয়েছেন বলেও তিনি জানান।

এ নিয়ে কুষ্টিয়া জেলায় করোনা শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ২০ জনে দাঁড়ালো। এর মধ্যে ঢাকাফেরত দৌলতপুর উপজেলার চার বছর সাত মাস বয়সী মেয়েসহ আক্রান্ত দম্পতি ছাড়াও মোট ৮ জন চিকিৎসা শেষে সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন।

এর আগে গত মাসের ২৪ এপ্রিল ঢাকা থেকে কোভিড-১৯ পজেটিভ দম্পতি আতংকিত হয়ে পালিয়ে এসে রাজবাড়ীতে ধরা পড়া এবং পরবর্তী কুষ্টিয়া পাঠিয়ে দেওয়া এই দম্পতি কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালের আইসোলেশনে দীর্ঘদিন চিকিৎসার পর সুস্থ্য হয়ে বাসায় ফিরেছেন।

গত শনিবার (০৯ মে ২০২০) বিকেল চার টায় বিষয়টি নিশ্চিত করেন কুষ্টিয়া জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ আনোয়ারুল ইসলাম।

সিভিল সার্জন ডাঃ আনোয়ারুল ইসলাম জানান, ঢাকা থেকে করনা আক্রান্ত হয়ে পালিয়ে আসা ঐ দম্পতির সাথে  তাদের ৪ বছর ৭ মাস বয়সী মেয়েশিশু ছিল। তাদের স্থায়ী ঠিকানা দৌলতপুর উপজেলার ফিলিপনগর হলেও ঢাকায় বসবাস করে আসছিলেন। মহিলাটি ৭ মাসের অন্তঃসত্ত্বা।  পরবর্তীতে মেয়ে শিশু টিরও দেহে কোভিড ১৯ শনাক্ত হয়।  ১৬ দিন সদর হাসপাতলের আইসোলেশনে  চিকিৎসা শেষে পরপর দুইটি স্যাম্পলে সকলের কোভিড নেগেটিভ আসায় তাদের সুস্থ ঘোষণা করে ছাড়পত্র প্রদান করা হয়।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত হেলথ বুলেটিনের সর্বশেষ (১১ মে ২০২০) তথ্য অনুযায়ী, করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও সাত হাজার ২৬৭টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। পরীক্ষা করা হয় সাত হাজার ২০৮টি নমুনা। এ নিয়ে দেশে মোট নমুনা পরীক্ষা করা হলো এক লাখ ২৯ হাজার ৮৬৫টি। নতুন নমুনা পরীক্ষায় আরও এক হাজার ৩৪ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এটি ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ শনাক্তের রেকর্ড। এ নিয়ে দেশে মোট আক্রান্ত হয়েছেন ১৫ হাজার ৬৯১ জন। আক্রান্তদের মধ্যে মারা গেছেন আরও ১১ জন। ফলে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ২৩৯-এ। আর গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন আরও ২৫২ জন। সব মিলিয়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন দুই হাজার ৯০২ জন।

আমাদের বাণী ডট/১১ মে ২০২০/পিবিএ 

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।